রৌমারীতে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী নেই, তবুও সরকারি বই বিতরণ

Seba Hot News : সেবা হট নিউজ
0

শফিকুল ইসলাম: রৌমারী উপজেলার খেদাইমারী নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ রয়েছে। বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থী নেই। তবুও সরকারি বই উত্তোলন।

রৌমারীতে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী নেই, তবুও সরকারি বই বিতরণ
রৌমারীতে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী নেই, তবুও সরকারি বই বিতরণ


তবে এমপিও ভুক্ত হলেও উভয় পক্ষে পাল্টাপাল্টি মামলা থাকায় সরকারি সকল সুবিধা বন্ধ রাখা হয়েছে। স্থানীয়রা বিদ্যালয়ের সকল দ্বন্দ নিরসন করে পুনরায় চালুর দাবী জানান প্রশাসনের কাছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন থেকে উপজেলা খেদাইমারী নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষার্থী নেই। ভবনের ভিতরে খড়ের গাঁদা। বারান্দায় ভুট্টার বস্তা। দরজায় রয়েছে মরিচা ধরা তালা। তারপরও ওই বিদ্যালয়টি পাচ্ছে সরকারি বই। ওই বিদ্যালয়টি প্রতি বছর ভুয়া শিক্ষার্থী ভর্তির নামের তালিকা দেখিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে নতুন বই উত্তোলন করা হয়। তবে সেই বইগুলো পড়ার মতো কোনো শিক্ষার্থী নেই। তাহলে সরকারি বইগুলো কোথায় রয়েছে সেটা নিয়েও চলছে নানা গুনঞ্জন। এমনকি পূর্বের দিনগুলোতে বিদ্যালয়ে আসেনি শিক্ষক মন্ডলীরা, বর্তমানে সরকারি করন হওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না গিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে দোড়ঝাপ শুরু করেন শিক্ষকরা।


আরও পড়ুন:


বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয় ১৯৯৯ সালে। ওই সময়ে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এ্যাড, আমজাদ হোসেন গত ৮ই জুন ২০০৬ সালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে  মো. শফিকুর রহমানকে দায়িত্ব দেন এবং তিনি নিয়মিত দায়িত্ব পালন করে আসছেন। অপরদিকে সহকারি শিক্ষক মো. আব্দুল রাজ্জাক, মো. আব্দুর রশিদ, মো, হাসান মিয়া, জাহাঙ্গীর আলম ও দপ্তরি মো. আমিন মিয়াসহ ৬ জন শিক্ষক রয়েছেন। এসময়ে এমপিওভুক্ত না হলেও প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম চলছিল ভালো। শিক্ষার্থী ছিল অনেক। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে বিদ্যালয়টি ব্রহ্মপুত্র নদের গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। এরপর এলাকাবাসির আর্থিক সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটি ২০১৫ সালে স্থান্তরিত করা হয় খেদাইমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে। এখানে বিদ্যালয়টি স্থাপন করার পর মো. আব্দুল ওহাব মন্ডল স্বঘোষিত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দাবী করে জনবল কাঠামো দাখিল করেন কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর। ওই আবেদনে শুধু প্রধান শিক্ষক ও একজন পিয়নের নাম উল্লেখ্য করা হয়েছে। এঘটনায় আব্দুল ওহাব মন্ডল এর বিরুদ্ধ কুড়িগ্রাম বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন শফিকর রহমান। যার মামলা নং ২২-২০২৩ ইং। অপরদিকে স্বঘোষিত প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওহাব মন্ডল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও অন্যান্য সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে নতুন নিয়োগ দিয়েছেন।  এছাড়াও  প্রধান শিক্ষক শফিকুর রহমান (ভার) কে নানা ভাবে হুমকি ও বিদ্যালয়ে যেতে বাধা সৃষ্টি করছেন। এবিষয়ে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। 

এসময়  কোন শিক্ষার্থী না থাকার পরও, তাদের জন্য নতুন বই উত্তোলন করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে।

খেদাইমারী নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুর রহমান বলেন, আমি প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি ২০০৬ সাল  থেকে। মো. আব্দুল ওহাব নামের এক ব্যক্তি গোপনে সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে ৬ জন শিক্ষক হিসেবে দাবী করে এবং আমরা আগে যারা শিক্ষক ছিলাম তাদেরকে বিদ্যালয়ে আসতে বাধা দেন। এর প্রতিবাদ করলে আব্দুল ওহাব মন্ডল আমাদেরকে নানা ভাবে ভয়ভিতি ও হুমকি দিতো। আমরা নিয়মিত শিক্ষক হলেও বিদ্যালয়ে আসতে পারিনি।  

¯স্থানীয় মো. আবু সাইদ মিয়া বলেন, শিক্ষকদের মাঝে দ্বন্দ নিরসন করে স্কুলটি চালু করার দাবী জানান।

বর্তমান দাবীকৃত প্রধান শিক্ষক মো, আব্দুল ওহাব মন্ডল জানান, আমি স্কুল পরিচালনা করে আসছি। আমার স্বাক্ষরে ২০২৫ সালে ১৩০ সেট বই উত্তোলন করেছি। কোন বেতন ভাতা না পাওয়ায় স্টাফদের মাঝে অনিহা সৃষ্টি হয়েছে। স্কুলটা যাতে চালু হয় সেজন্য এলাকাবাসি ও প্রশাসনের কাছে জোরদাবী করছি। 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুর রহমান (ভার:) জানান, আব্দুল ওহাব মন্ডল স্বঘোষিত প্রধান শিক্ষক দাবী করে তার লোকজন দিয়ে আমাকে বিদ্যালয়ে আসতে বাধা দিচ্ছে। এজন্যে বিদ্যালয়টি খোলা সম্ভব হচ্ছে না।                                                                                                                          

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাকেরিনা বেগম বলেন,আমি নতুন যোগদান করেছি। ওই স্কুল বিষয়ে কিছু জানি না, শিক্ষার্থী নেই,তবুও বই নিয়েছে কেনো? সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ্আপনারা (সাংবাদিক) আমাকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবেন।





সূত্র: /সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশ্যে আপোষহীন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top