শফিকুল ইসলাম: কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ার সাথে সাথে ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। গত এক সাপ্তাহে রাক্ষসী ব্রহ্মপুত্র নদে ভাঙ্গনে ২০টি বসতবাড়ি, কাঁচা রাস্তা, দোকানপাটসহ ফসলিয় জমি নদের গর্ভে বিলিন হয়েছে।
![]() |
১ সাপ্তাহে ২০টি বাড়ি বিলিন : রৌমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বাড়ার সাথে সাথে ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু |
রবিবার সকালে সোনাপুর সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়এসব চিত্র। এদিকে ভাঙ্গন ঝুকিতে রয়েছে কাচাপাকা রাস্তাঘাট, মসজিদ, মাদ্রাসা, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ নদের তীরবর্তী এলাকার ২’শ টি ঘরবাড়ি।
এছাড়া অসময়ে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে, সোনাপুর, চরসোনাপুর, ঘুঘুমারী, চর গেন্দার আলগা, গুচ্ছগ্রাম, সুখেরবাতি, খেরুয়ার চর ও দক্ষিন নামাজের চর সহ ১০টি গ্রাম।
আরও পড়ুন:
অসময়ে ব্রহ্মপুত্র নদে ভাঙ্গনের ফলে গ্রামের পর গ্রামের ঘর-বাড়ি ফসলি জমি, রাস্তাঘাট ও গাছপালা বিলীন হয়ে যাচ্ছে নদীর গর্ভে। এতে করে হাজারো মানুষ তাদের বাপ-দাদার ভিটেমাটি হারিয়ে পরিণত হচ্ছে ভূমিহীনে। এসব পরিবার সব কিছু হারিয়ে আশ্রয়স্থল হিসাবে বেছে নিয়েছে বিভিন্ন রাস্তার দুই পাশ ও আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে ঝুপড়ি তুলে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
চর সোনাপুর গ্রামের লিচু মিয়া, আবু সাইদ, ফারুক মিয়া বলেন, আমাগো আবাদি জমি নাই, যে টুকু ছিলো সেটাও নদীতে ভাঙ্গে গেছে, ঘাট পাড়ে দোকান করে খাইছি তাও নদীতে ভাঙ্গীতেছে। আমরা রিলিপ চাইনা, নিজে জমিতে ঘর তুইলা শান্তিতে পোলাপান নিয়া থাকবার চাই।
সোনাপুর গ্রামের সুরুতজামান, মামদ আলী, রাজ্জাক, জহির, বুদ্দি মিয়া,ময়াজ বলেন, এক বছরে আমরা চারবার বাড়ি টান দিছি, নিজে বাড়ি নেওয়ার জমি নাই, অন্যের জমি বন্ধক নেওয়ার ক্ষমতাও আমাগরে নাই। আমরা এখন নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমাগো একটাই দাবী নদীটা জেনো এই সরকার তারাতারী বাঁইনধা দেয়।
চরশৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কেএম ফজলুল হক মন্ডল বলেন, চরশৌলমারী ইউনিয়নে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এতে গত এক সাপ্তাহে ভাঙ্গনে ২০টি বাড়ি, কাঁচা রাস্তা, দোকানপাটসহ ফসলিয় জমি নদে গর্ভে বিলিন হয়েছে। দ্রæত এ ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা না নিলে মুক্তিযোদ্ধের প্রশিক্ষণের কেন্দ্র সোনাপুর হাই স্কুল, ফসলি জমিসহ নদের তীরবর্তী ২’শ’ টি বসতবাড়ী ব্রহ্মপুত্র নদে বিলিন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজ্জল কুমার হালদার বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বাড়ার সাথে সাথে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। আমরা আরো খোজ খবর নিচ্ছি ভাঙ্গন কবলিত পরিবারদেরকে আমার উপজেলা পরিষদ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
কুড়িগ্রাম জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান, এর ব্যবহৃত মোবাইল ফেনে একাধীকবার ফোন করেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নী।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।