সেবা ডেস্ক: সকালে থেকেই মুষলধারে বৃষ্টি, অথচ একটু পরেই আমাদের বার্ষিক আনন্দভ্রমণ। ২০ শে এপ্রিল ২০২৫, সকাল ৯টায় দু'টি গাড়ী ছাড়ার কথা। তখন বাজে ৯.২৬ মিনিট।
![]() |
একটি আনন্দ ভ্রমনের গল্প |
এখনও বৃষ্টি থামার লক্ষণ নেই। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন স্যার/ম্যাডামের ফোন। তাঁদের কথায় হতাশার সুর! আমার ভেতরেও তখন প্রবল উৎকণ্ঠা। কিন্তু এমনভাবে কথার উত্তর দিলাম যেনো আমি খুবই নির্ভার। হঠাৎ করেই বৃষ্টি থামলো। এতোক্ষণ জমে থাকা চাপা কষ্টবোধটুকু যেনো নিমিষেই উধাও হয়ে গেল।
আবারও আমরা সরব হয়ে উঠলাম। আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্র রাতেই গোছানো ছিল। তাই সময় লাগেনি।
১১টায় পৌঁছে গেলাম আমাদের গন্তব্যে। ফয়জাবাদ হিলসে।
আরও পড়ুন:
ওখানেই অনুষ্ঠিত হবে বাহুবল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ সংঘের "বার্ষিক সাধারণ সভা ও আনন্দ ভ্রমণ" -এর প্রথমার্ধের কাজ। উপজেলার ১৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী অংশগ্রহণ করেন এ অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয়ার্ধের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয় আমতলী চা বাগান ও রিসোর্ট। ফয়জাবাদ হিলসে অনুষ্ঠিত হয় সাধারণ সভা ও বিভিন্ন খেলাধুলা এবং আমতলী চা বাগান রিসোর্টে অনুষ্ঠিত হয় র্যাফেল ড্র ও পুরস্কার বিতরনী পর্ব।
সংঘের সভাপতি ও আদর্শ বিদ্যানিকেতন ভুলকোটের সিনিয়র শিক্ষক মো: নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও ফয়জাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুজিত কৈরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- বিসি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আব্দুল জব্বার, জগতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আব্দুর রউফ, পুটিজুরী শরৎচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) স্বপন চন্দ্র পাল, আদর্শ বিদ্যানিকেতন ভুলকোটের প্রধান শিক্ষক মো: নজরুল ইসলাম, সংঘের সাধারণ সম্পাদক পংকজ কান্তি গোপ, ফতেপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মাও. মুবাশ্বির উদ্দিন, স্বস্থিপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো: মামুনুর রশিদ, হাজী এ ওয়াহেদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো: আকিকুল ইসলাম, পুটিজুরী শরৎচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো: মঞ্জুর আলী, জগতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শামীমুল ইসলাম, ছদরুল হোসেন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুজিত চন্দ্র দেব ও মো: রাহেল মিয়া, শাহজালাল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো: হারুনুর রশিদ, মিরপুর ফয়জুন্নেচ্ছা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো: রাসেল আহমদ ও মানব কল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো: আতাউর রহমান। অতিথিদের মাঝে বক্তব্য রাখেন- আলিফ সোবহান চৌধুরী সরকারি কলেজের প্রভাষক মো: কবীর উদ্দিন ও নবীগঞ্জের গোপলার বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো: নুরুল আমীন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই কোরআন তেলাওয়াত করেন শিক্ষক মাও. মো: মোজাম্মিল হোসেন ও গীতা পাঠ করেন শিক্ষার্থী অনির্বাণ গোপ।
আলোচনা শেষে ছদরুল হোসেন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষিকা বকুল রাণী কর'কে অবসর জনিত বিদায় সংবর্ধনা প্রদান করা হয় এবং NTRCA- মাধ্যমে নিয়োগ প্রাপ্ত ৫জন নবাগত শিক্ষকে বরন করা হয়। সংবর্ধিত নবাগত শিক্ষকগণ হলেন- আদর্শ বিদ্যানিকেতন ভুলকোটের মাও. মো: মোজাম্মিল হোসেন ও মো: বেলাল মিয়া, ফয়জাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের মো: জয়নুল আবেদীন ও মো: মোবাশ্বির আহমেদ এবং মিরপুর ফয়জুন্নেচ্ছা উচ্চ বিদ্যালয়ের মো: আল আমীন।
আলোচনা সভা শেষে তিনটি গ্রুপের ৩টি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। অংশগ্রহণকারী শিশুদের জন্য 'ঝুড়িতে বল নিক্ষেপ', মহিলাদের জন্য 'ভলিবল পাচার' এবং পুরুষদের জন্য 'পাতিল ভাঙা'। খেলা তিনটি পরিচালনা করেন বিভিন্ন স্কুলের ক্রিড়া শিক্ষকগণ। তিন গ্রুপের বিজয়ীদেরই পুরষ্কৃত করা হয়।
দ্বিতীয়ার্ধের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয় উপজেলার 'আমতলী চা বাগান ও রিসোর্টে'। ওখানে অনুষ্ঠিত হয় র্যাফেল ড্র ও পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠান। র্যাফেল ড্র পরিচালনা করেন দীননাথ ইনস্টিটিউশন সাতকাপন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো: হেদায়েতুল ইসলাম মামুন। র্যাফেল ড্র'তে প্রথম পুরষ্কার পান পুটিজুরী শরৎচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকা সুলতানা মুমিনা জাহান। এতে মোট দশটি পুরষ্কার প্রদান করা হয়।
আমতলী চা বাগানের দু'জন কর্মকর্তা যথাক্রমে এনামুল হক ও রঞ্জিত কৈরী সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করেন আর শতাধিক শিক্ষকদের আপ্যায়ন করান। উনাদের আন্তরিকতায় বিমোহিত হন বাহুবলের শিক্ষক সমাজ।
এবার আমাদের ফেরা পালা। সূর্য্যি মামা তখন পশ্চিম আকাশে হেলে পড়ছেন। কিন্তু আমতলী চা বাগানের মনোমুগ্ধকর পরিবেশ ছেড়ে কেউয়েরই তখন বাড়ি ফেরার তাড়া নেই। উঁচু উঁচু টিলা, চা বাগান, রাবার বাগান আর প্রকৃতির আবেশ কাটিয়ে একসময় আমাদের ফিরতেই হয়। পেছনে রেখে আসি এক সুন্দর স্মৃতি!
লেখায়:পঙ্কজ কান্তি গোপ
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।