সেবা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ, ভারত, নেপালসহ একাধিক দেশে উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়ন বাতিল করেছে। ইলন মাস্কের নেতৃত্বে সরকারি ব্যয় সংকোচন শুরু হয়েছে।
![]() |
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে প্রকল্প বাতিল করল |
বাংলাদেশ, ভারতসহ একাধিক দেশে উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়ন বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি দক্ষতা বিভাগ (ডিওজিই)। এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি ও রাজনৈতিক দলগুলোর সক্ষমতা উন্নয়ন সংক্রান্ত একটি প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত ২ কোটি ৯০ লাখ ডলার বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণায় কী বলা হয়েছে?
স্থানীয় সময় শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (পূর্বে টুইটার)-এ এক পোস্টে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি দক্ষতা বিভাগ (Department of Government Efficiency - DOGE) এ তথ্য প্রকাশ করে। পোস্টে বলা হয়, “যুক্তরাষ্ট্রের করদাতাদের অর্থ নিম্নোক্ত প্রকল্পগুলোর জন্য ব্যয় হওয়ার কথা ছিল, যা সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়েছে।” এরপর বিভিন্ন প্রকল্প ও বরাদ্দ বাতিলের বিস্তারিত তালিকা প্রকাশ করা হয়।
বাংলাদেশে কী প্রকল্পের অর্থায়ন বন্ধ হয়েছে?
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের (DI) ওয়েবসাইট অনুযায়ী, স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ ইন বাংলাদেশ (SPL) প্রকল্পে অর্থায়ন করছিল যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (USAID) ও যুক্তরাজ্যের উন্নয়ন সংস্থা (DFID)। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ছিল—
রাজনৈতিক দলগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, ভোটারদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংযোগ শক্তিশালী করা ও বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতা হ্রাস করা।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন বন্ধের ফলে এই কার্যক্রমে স্থবিরতা আসতে পারে, বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারত ও নেপালেও অর্থায়ন বাতিল
যুক্তরাষ্ট্র শুধু বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশী দেশ ভারত ও নেপালের বিভিন্ন প্রকল্পেও অর্থায়ন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর প্রকল্পে ২ কোটি ১০ লাখ ডলারের বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে। নেপালের বিভিন্ন প্রকল্পে ৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার কাটা হয়েছে।এ ছাড়া মোজাম্বিক, কম্বোডিয়া, সার্বিয়া, লাইবেরিয়া, মালি ও মিসরেও একাধিক প্রকল্পের বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে।
ইলন মাস্কের নতুন নীতির প্রভাব
২০ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশটিতে সরকারি ব্যয় সংকোচনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন অর্থনৈতিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে "সরকারি দক্ষতা বিভাগ (DOGE)" প্রতিষ্ঠা করা হয়, যার প্রধান করা হয়েছে ইলন মাস্ককে।
ইলন মাস্ক ইতোমধ্যে সরকারি ব্যয় হ্রাসে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের ৯,৫০০-এর বেশি কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী USAID-এর সহায়তা স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের ওপর এর প্রভাব কী হতে পারে?
ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. হুমায়ুন কবীর বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন বন্ধ হওয়ায় বাংলাদেশ কিছুটা বঞ্চিত হবে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU), জাপান এবং অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলো বাংলাদেশের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখবে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ২ কোটি ৯০ লাখ ডলারের অর্থায়ন বাতিলের প্রভাব খুব বেশি দীর্ঘমেয়াদি হবে না।”
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।