রৌমারীতে ১টি ব্রীজের অভাবে ১৩ গ্রামের মানুষের চরম দূর্ভোগ

Seba Hot News : সেবা হট নিউজ
0

শফিকুল ইসলাম, রৌমারী: রৌমারীতে একটি ব্রীজের অভাবে ১৩ গ্রামের ২০ হাজার মানুষের চরম দূর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। একটি ব্রীজ নির্মিত হলে বদলে যেতে পারে তাদের ভাগ্য। 

রৌমারীতে ১টি ব্রীজের অভাবে ১৩ গ্রামের মানুষের চরম দূর্ভোগ
ব্রীজের অপেক্ষায় ৫৩ বছর


বছরের পর বছর উপজেলা প্রশাসনের কাছে একাধীকবার আবেদন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রæতি দিলেও ৫৩ বছরে কনো কাজে আসেনি। পরে স্থানীয়রা বাধ্য হয়ে এলাকায় চাদা তুলে জিঞ্জিরাম নদীতে নড়বরে একটি বাশেঁর সাকোঁ তৈরী করেন। 

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের চরলাঠিয়াল ডাংঙ্গা গ্রামে জিঞ্জিরাম নদীর উপর স্থানীয়দের চাদার টাকায় তৈরী করা হয় বাশেঁর সাকোঁ। আর এই বাশেঁর সাকোঁ দিয়ে প্রতিনিয়ত পারাপার হয় বিকরিবিল, লালকুড়া, বকবান্দা নামাপাড়া, খেওয়ারচর, উত্তর আলগার চর, দক্ষিণ আলগার চর, বংশির ভিটা, লাঠিয়ালডাঙ্গা ও বালিয়ামারীসহ ১৩ গ্রামের ২০ হাজার মানুষ। 

আরও পড়ুন:

স্থানীয় মিরাজুল হক ও মনোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসন শুধু আশ^াস দিয়ে গেছে। তবে তারা এখন প্রযর্ন্ত কনো কার্যকরি ব্যবস্থা নেয়নি। তারা আরো বলেন, দেশ স্বাধীনের ৫৩ বছর অতিবাহিত হলেও এ অঞ্চলে  উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি। আমরা নড়বড়ে বাশেঁর সাাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে প্রতিনিয়ত পারাপার হচ্ছি। নদিতে বিচ্ছিন্ন এলাকা হওয়ায়  কৃষকের উৎপাদিত ফসল বিভিন্ন হাটে বাজারে নিতে অতিরিক্ত খরচ ব্যয় করতে হচ্ছে তাদের। ব্যাহত হচ্ছে সীমান্তরক্ষা বাহিনী বিজিরি’র টহল।

অপর দিকে বালিয়ামারী জিঞ্জিরাম নদীর উপর বাঁশের সাকোঁ দিয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে পারপার হচ্ছে অত্র এলাকার মানুষ। স্বাধীনতার ৫৩ বছর অতিবাহিত হলেও নির্মিত হয়নি একটি পাঁকা ব্রীজ। স্থানীয়রা তাদের কষ্টের উপার্জিত টাকা ও স্বেচ্ছায় শ্রম দিয়ে প্রতিবছর এই বাশেঁর সাকোঁ তৈরি করেন। সাকোঁটি দেখাশোনার জন্য নিদিষ্ট একজন শ্রমিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি জনপ্রতি ২ থেকে ৫ টাকা নেন পথচারিদের কাছ থেকে। বালিয়ামারী জিঞ্জিরাম নদীতে একটি পাকাঁ ব্রীজ ও কাচা ৮কিলোমিটার রাস্তাটি মেরামতের জন্য একাধীকবার আবেদন দিলেও কনো ব্যবস্থা নেইনি জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসন।

লাঠিয়ালডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা বীরমুক্তিযোদ্ধা আজিম উদ্দিন (৯০) বলেন, কি বলবো আর দুঃখের কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। তিনি আবেগের সাথে বলেন দেশের সবকটি অঞ্চলে উন্নয়ন হলেও দুঃখের বিষয় এ অঞ্চলটিতে তেমন কোন উন্নয়ন হয়নি। তিনি আরও বলেন দেশ স্বাধীনতার ৫৩ বছর অতিক্রম হতে যাচ্ছে এই বয়সে নড়বড়ে বাশেঁর সাকোঁতে যাতায়াত করছি জীবনের ঝুকি নিয়ে। এর সমাধান কার কাছে গেলে পাওয়া যাবে জানতে ইচ্ছে করছে। আমি সরকারের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি চর লাঠিয়াল ডাঙ্গা এবং লাঠিয়াল ডাঙ্গা দুই গ্রামের মাঝখান দিয়ে ভারত থেকে বয়ে আসা জিঞ্জিরাম নদী। এই নদীর উপর একটি টেকসই সেতু নির্মাণ করে দিলে এই অঞ্চলের মানুষ অন্ধকার থেকে আলোর মুখ দেখতে পাবে। 

পাহারতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোত্তালেব বলেন, এ জিঞ্জিরাম নদীর উপর বাঁেশর সাকোঁটি দিয়ে প্রতিদিন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক কর্মচারি, সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা কর্মচারি সহ শতশত মানুষ যাতায়াত করেন। 

শিক্ষার্থীসহ আমরা জীবনের ঝুকি নিয়ে প্রতিনিয়ত পারাপার হই। সরকারের কাছে আমাদের জোর দাবি এ জিঞ্জিরাম নদীতে একটি ব্রীজের জন্য জোর দাবী জানাচ্ছি।

চর লাঠিয়ালডাঙ্গা গ্রামের আব্দুস ছাত্তার দেওয়ানী বলেন, অনেক ঝুকি নিয়ে আমাদের সন্তানরা স্কুলে যায়। ব্রীজটি নির্মিত হলে দূর্ভোগ থেকে রেহাই পাবে ১৩ গ্রামের ২০ হাজার মানুষ। সরকারের কাছে আমাদের প্রাণের দাবী ব্রীজ ও রাস্তাটি যেন দ্রæত মেরামত করে দেন। 

যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সরবেশ আলী বলেন, চর লাঠিয়ালডাঙ্গা নদীর উপর একটি ব্রীজের জন্য নির্বাচনের সময় স্থানীয় লোকজনদেরকে আশ^াস দিয়েছিলাম। তার পরিপ্রেক্ষিতে আমি উপজেলায় একাধীকবার বলেছি এবং আবেদন দিয়েছি। উপজেলা প্রশাসন শুধু আশ^াস দিয়েছে এখন পর্যন্ত তারা কনো কার্যকরি ব্যবস্থা নেয়নী।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. মুনছুরুল হক বলেন, এই স্থানে একটি ব্রীজের জন্য মাঠজরিফ করে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং বরাদ্দ আসলেই কাজ শুরু করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজ্জ্বল কুমার হালদার বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। আবেদনের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। খোজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয়  ব্যবস্থা নিবো। 





সূত্র: /সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশ্যে আপোষহীন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top