কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: শুষ্ক মৌসুমে যমুনার পানি অস্বাভাবিক হ্রাস পাওয়ায় নদীর বুকে জেগে উঠেছে অসংখ্য চর-ডুবোচর। এর ফলে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার চরাঞ্চলে অবস্থিত ছয় ইউনিয়নের দেড়লক্ষ মানুষের নৌপথে চলাচলে দুর্ভোগ বেড়েছে।
![]() |
নাব্যতাহীন যমুনায় অসংখ্য চর নৌ চলাচলে ভোগান্তি |
পূর্বে যেখানে নৌপথে তিরিশ মিনিটে গন্তব্যে যাওয়া যেত এখন সেখানে সময় লাগছে দেড় থেকে দুই ঘন্টা। ফলে একবার চরাঞ্চল থেকে প্রয়োজনে যমুনার পশ্চিমপাড়ে কাজিপুর উপজেলা সদরে আসলে কাজ শেষে বাড়ি ফিরতেই সন্ধ্যে লেগে যায়। কয়েক বছর পূর্বে কাজিপুরের মেঘাই ও নাটুয়ারপাড়া ঘাটকে নৌবন্দরের আওতায় নিয়ে এলেও কার্যত বিআইডবিøউটিএর কোন কার্যক্রম নেই। শুধু দুই ঘাটে তাদের দুটো পল্টুন চোখে পড়ে। এদিকে পানির এই অস্বাভাবিক হ্রাসের কারণে পণ্য পরিবহণে দেখা দিয়েছে চরম ভোগান্তি।
বর্ষাকালে প্রমত্তা যমুনার গতিপথ বোঝা বড়ই দুস্কর। দিন দিন এর প্রশ্বস্ততা বাড়তে বাড়তে এখন ১৫ কিঃমিঃ পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করেছে। আর এ কারণে উজানের পানি বইতে গিয়ে যমুনা তার খেই হারিয়ে নানা শাখা-প্রশাখা, আর চর- ডুবোচরে নিজেকে প্রকাশ করছে। ভাঙছে ভরা বর্ষায় কিংবা পানিহীন গ্রীষ্মেও। এককালের খর¯্রােতা যমুনা শুস্ক মৌসুমে এখন পানিহীন প্রাণহীন এক মরুভূমি যেন। উপজেলার মেঘাই ঘাট থেকে প্রতিদিন নাটুয়ারপাড়া, তেকানী, নিশ্চিন্তপুর, খাসরাজবাড়ী, চরগিরিশি, মনসুর নগর, তারাকান্দি, সিরাজগঞ্জ, সহড়াবাড়ী, রুপসার ১০ টি রুটে শতাধিক ইঞ্জিনচালিত নৌকা যাতায়াত করতো। কিন্তু এখন নদীর নাব্যতা কমে চর জেগে উঠায় নৌযান যাতায়াত প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক বেশি পথ ঘুরে নৌকাগুলোকে গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে। এতে করে ইঞ্জিনের তেল খচর ও সময় দুটোই বেশি ব্যয় হচ্ছে। ফলে যাত্রী ভাড়া ও মালামাল পরিবহন খরচও বেড়ে গেছে। তাছাড়া নদীর পানি কমে নৌকার ঘাট দূরে চলে যাওয়ায় যাত্রীদের পায়ে হেঁটে দীর্ঘ বালুচর পাড়ি দিয়ে নৌকায় চড়তে হচ্ছে।
নাটুয়ারপাড়া ঘাটের চেইন মাস্টার রফিকুল ইসলাম জানান, যমুনার পানি কমে যাওয়ায় আগে যেখানে নদী পার হতে আধাঘন্টা সময় লাগতো এখন প্রায় দেড় থেকে দুই- ঘন্টা সময় লাগে। এতে করে দিনে একবারের বেশি কোন নৌকার সিরিয়াল পড়েনা। যাত্রীদেরও অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়।
নাটুয়ারপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী দিলশাদ সরকার জানান, চর থেকে পণ্য আনা নেয়ায় এখন দ্বিগুণ ভাড়া গুণতে হচ্ছে। এরফলে ব্যবসায় মুনাফা টিকছে অনেক কম।
মেঘাই ঘাটের চেইন মাস্টার তালহা জানান, যমুনা নদীতে পানি কমে যাওয়ায় পাঁচ কিলোমিটার দূরের নাটুয়ারপাড়া ঘাটে পৌঁছতে এখন ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে। ফলে আগের চেয়ে নৌ চলাচল অনেক কমে গেছে। কমে গেছে যাত্রী ও মালামাল পরিবহন।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।