সেবা ডেস্ক: বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ! চীন, রাশিয়া, ইরান ও উত্তর কোরিয়া একজোট হয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। আসছে নতুন ওয়ার্ল্ড অর্ডার!
 |
| যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে চার দেশ, আসছে নতুন বিশ্বশক্তি! |
বিশ্ব রাজনীতির নতুন সমীকরণে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একজোট হচ্ছে চার স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্র—চীন, রাশিয়া, ইরান ও উত্তর কোরিয়া। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভ্লাদিমির পুতিন, শি জিনপিং, মাসুদ বেজেসকিয়ান ও কিম জং উনের নেতৃত্বে এই চার দেশ সামরিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ জানাতে সক্রিয়। নতুন এই জোট বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন ‘ওয়ার্ল্ড অর্ডার’ প্রতিষ্ঠার পথে হাঁটছে, যা বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য নতুন হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
নতুন জোটের পটভূমি ও সামরিক শক্তি বৃদ্ধি
ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরই চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ফোন করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে। তখন থেকেই তাদের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার আলোচনা শুরু হয়। একইভাবে, পুতিন আলোচনায় বসেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ বেজেসকিয়ানের সঙ্গে, যেখানে সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছায় দুই দেশ।
এদিকে, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনও রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা বাড়াতে সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। এই চার দেশের ওপরই যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তারা বিকল্প পথ তৈরি করছে।
ডলার এড়িয়ে নতুন অর্থনৈতিক কাঠামো
পশ্চিমা মুদ্রাকে পাশ কাটিয়ে নিজেদের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থা তৈরি করছে চীন, রাশিয়া, ইরান ও উত্তর কোরিয়া।
- চীন ও রাশিয়া মার্কিন ডলার এড়িয়ে নিজেদের মুদ্রায় লেনদেন করছে।
- ইরান ও উত্তর কোরিয়াও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার বাইরে থেকে বিকল্প মুদ্রায় বাণিজ্যের পরিকল্পনা নিয়েছে।
- বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি হচ্ছে, যা মার্কিন ডলারের আধিপত্য চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রকে চাপে ফেলতে সামরিক ও কৌশলগত পদক্ষেপ
- ইউক্রেন যুদ্ধের ময়দানে উত্তর কোরিয়ার আর্টিলারি, ইরানের ড্রোন ও চীনের রাডার প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে।
- রাশিয়া চীনকে পারমাণবিক সাবমেরিন ও যুদ্ধবিমান তৈরিতে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে।
- ইরান ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি দিচ্ছে উত্তর কোরিয়াকে, যা নতুন নিরাপত্তা সংকট তৈরি করতে পারে।
- ২০২৪ সালে গালফ অফ ওমানে রাশিয়া, চীন ও ইরান যৌথ নৌ-মহড়া চালায়, যা যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের জন্য হুঁশিয়ারি বার্তা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই জোট নিজেদের সামরিক ও অর্থনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করলে বিশ্বশান্তি হুমকির মুখে পড়তে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া ও বৈশ্বিক প্রভাব
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি, বাণিজ্যনীতি ও সামরিক কৌশল এখন চ্যালেঞ্জের মুখে।
- যুক্তরাষ্ট্র এই জোটের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা, সামরিক মোতায়ন ও কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগ করছে।
- ন্যাটো জোট আরও শক্তিশালী হচ্ছে, যা রাশিয়া ও চীনের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ।
- ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক জোট আরও দৃঢ় হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, "শত্রুর শত্রুই বন্ধু" নীতিতেই একজোট হচ্ছে এই দেশগুলো। তবে রাশিয়া ও চীনের মধ্যে মধ্য এশিয়ার দেশগুলো নিয়ে দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন এই জোটের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।