সেবা ডেস্ক: জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সাবেক সরকার ২০২৪ সালের গণবিক্ষোভের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ধামাচাপা দিয়েছে।
![]() |
মানবাধিকার লঙ্ঘন গোপন করেছে ক্ষমতাচ্যুত সরকার জাতিসংঘ |
জাতিসংঘের একটি সত্যানুসন্ধান প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে, বাংলাদেশের সাবেক সরকার ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণবিক্ষোভের সময় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর (ওএইচসিএইচআর) গত বুধবার ‘জুলাই-আগস্ট ২০২৪-এ বাংলাদেশে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ সংশ্লিষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন’ শীর্ষক এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত সময়ে সরকারি বাহিনী ও ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের সহিংসতা তদন্তের কোনো বাস্তব প্রচেষ্টা দেখা যায়নি।
গোপন হত্যাকাণ্ড ও সত্য গোপনের অভিযোগ
প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিহতদের মরদেহ পরিবারের কাছে ফেরত না দিয়ে গোপন রাখা হয়েছে, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে পুড়িয়ে ফেলারও অভিযোগ রয়েছে। পুলিশের বিশেষ শাখা এবং র্যাবকে গোপনে অতিরিক্ত গোলাবারুদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল, যাতে গুলিবর্ষণের হিসাব সরকারি নথিতে লিপিবদ্ধ না হয়।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোয়েন্দা সংস্থা (ডিজিএফআই, এনএসআই), পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন হাসপাতালে উপস্থিত থেকে আহতদের চিকিৎসা নথি জব্দ করে এবং নির্যাতনের প্রমাণ নষ্ট করে।
আইনজীবী, সাংবাদিক ও পরিবারকে হুমকি
প্রতিবেদন আরও জানায়, নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে জবাবদিহিতার দাবি তুললে তাদের ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। এমনকি ডিজিএফআই সদস্যরা আইনজীবীদের ফোন করে কিংবা সরাসরি দেখা করে হুমকি দিয়েছে।
বিশেষত, আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ডে পুলিশের জড়িত থাকার প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও শত শত নিরপরাধ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। অথচ ভিডিও ফুটেজসহ অন্যান্য তথ্য থেকে পরিষ্কার ছিল যে পুলিশের গুলিতেই তিনি নিহত হয়েছেন।
তদন্ত কমিটির কার্যক্রমের গোপনীয়তা
২০২৪ সালের ১৭ জুলাই, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা দিলেও সেটি মূলত বিক্ষোভকারীদের কর্মকাণ্ডের ওপর একতরফা দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। ৫ আগস্টের পর তদন্ত কমিটি কোনো অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি এবং কার্যক্রমের কোনো লিখিত রেকর্ডও পাওয়া যায়নি।
জাতিসংঘ আরও জানায়, বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় কাউকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা কেবল একটি অস্পষ্ট বিবৃতি দেয়, যেখানে ঘটনাকে ‘খুবই দুঃখজনক’ বলা হয় এবং গণগ্রেপ্তার না করার আহ্বান জানানো হয়।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।