আসমাউল আসিফ, জামালপুর প্রতিনিধি: শিশু কিশোরদের বিকাশের অন্যতম বাধা মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি বাল্যবিয়েকে ‘না’ করার অঙ্গীকারের মাধ্যমে জামালপুরে বাল্যবিয়ে মুক্ত ইউনিয়ন ঘোষণা করা হয়েছে।
জামালপুরে দুইটি ইউনিয়নকে বাল্যবিয়ে মুক্ত ঘোষণা করলেন ইউএনও |
মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেন জামালপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা-ইউএনও জিন্নাত শহীদ পিংকী।
জামালপুর সদর উপজেলার শরিফপুর ও লক্ষ্মীরচর ইউনিয়ন দুইটিকে বাল্যবিয়ে মুক্ত ঘোষণা করতে ওয়ার্ল্ড ভিষণ ও উন্নয়ন সংঘের মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন জামালপুর এরিয়া প্রোগ্রাম এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। উন্নয়ন সংঘের নির্বাহী পরিচালক মো: রফিকুল আলম মোল্লার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিন্নাত শহীদ পিংকী। এ সময় তিনি বলেন, সমন্বিত উদ্যোগ ব্যাতিত ভয়ঙ্কর সামাজিক ব্যাধি বাল্যবিয়ে বন্ধ করা সম্ভব নয়। কিশোর, কিশোরীদের প্রতি অভিভাবকদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তাদের পড়ালেখার পাশাপাশি ভুল কাজগুলো থেকে বিরত রাখতে সচেতন থাকতে হবে। তাদের যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে বৃদ্ধ বয়সে বাবা, মাকে অবহেলার শিকার হতে হবে না। তিনি আরও বলেন, উপজেলা প্রশাসন, সদর থানা পুলিশ, মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তর, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, জামালপুর এরিয়া প্রোগ্রাম, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ, উন্নয়ন সংঘ, ইউএনডিসি, ভিডিসি, শিশু ফোরাম, যুব ফোরাম ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় বাল্যবিয়ে বন্ধে সকল কার্যক্রম চলমান থাকবে। আমি সদর উপজেলার দুইটি ইউনিয়ন শরিফপুর ও লক্ষ্মীরচর ইউনিয়নকে বাল্যবিয়ে মুক্ত ঘোষণা করছি। আলোচনা সভায় জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সাল মো: আতিক, ওয়ার্ল্ড ভিশনের অ্যাডভোকেসি সমন্বকারী তানজিমুল ইসলাম, ওয়ার্ল্ড ভিশনের এসিও’র জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক সেবাস্টিয়ান পিউরিফিকেশন, উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক জাহাঙ্গীর সেলিম, কর্মসূচি পরিচালক মুর্শেদ ইকবাল, ওয়ার্ল্ড ভিশন এপির এরিয়া ম্যানেজার বিমল জেমস কস্তা, উন্নয়ন সংঘের জামালপুর এরিয়া প্রোগ্রামের ব্যবস্থাপক মিনারা পারভীনসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন। এ সময় বক্তারা বলেন, বাল্যবিবাহ শিশুদের জীবনকে ঝুকির মুখে ঠেলে দেয়। তাদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ বাধাগ্রস্থ হয় এবং গর্ভধারণের ফলে অনেকের মৃত্যু হয়। সমাজের সকল পর্যায়ের মানুষদের মধ্যে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে এই দুই ইউনিয়নকে বাল্যবিবাহ মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। তাই বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে বাবা-মা, পরিবারের সদস্য, প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। এছাড়াও বাল্যবিয়ে মুক্ত ইউনিয়ন ঘোষণার ফলক উন্মোচন, বাল্যবিয়ে বন্ধে বিভিন্ন কার্যক্রমের তথ্যচিত্র প্রদর্শণ, বাল্যবিয়ে কে ‘না’ করুন অঙ্গীকার বোর্ডে স্বাক্ষর করেন অতিথিবৃন্দ।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।