শফিকুল ইসলাম: অসময়ে সর্বনাশা ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এতে গত এক মাসে চরশৌলমারী ইউনিয়নের ৯টি গ্রামের ২৬টি বসতবাড়ি, মসজিদ, রাস্তাঘাটসহ কয়েক একর ফসলী জমি ব্রহ্মপুত্র নদে বিলিন হয়েছে এবং হুমকির মুখে পড়েছে সুখেরবাতি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, নদীপাড়ের প্রায় শতাধীক ঘড়বাড়ি, মসজিদ, রাস্তাঘাটসহ কয়েকশ একর ফসলী জমি।
রৌমারীতে অসময়ে সর্বনাশা ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গনে বিলিন বসতবাড়ি, ফসলী জমি |
এদিকে অসময়ে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদের তীরবর্তী এলাকার মানুষ। তবে কুড়িগ্রাম পানিউন্নয়ন বোর্ড বলছে, বরাদ্দ না থাকায় ভাঙ্গন কবলিত এলাকাগুলোতে কিছুই করতে পারছি না।
নদীর গর্ভে বিলিন হওয়া গ্রামগুলো হলো, সুখের বাতি ইটালুকান্দা, সাহেবের আলগা, চর গেন্দারআগলা, চরঘুঘুমারী, ঘুঘুমারী, খেরুয়ারচর, সোনাপুর, চর সোনাপুর, পূর্ব খেরুয়ারচর, পূর্ব খেদাইমারীসহ প্রায় ৯ টি গ্রাম।
সুখেরবাতি গ্রামের নুরুল হক, মজিদ মিয়া ও সোনা মিয়া বলেন, আবারো অসময়ে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এতে অনেক জমি, রাস্তা ঘাট ভেঙ্গে নদীতে গেছে। দ্রæত নদীভাঙ্গনরোধের কাজ না করলে ভয়াবহ পরিস্থির সৃষ্টি হবে। সরকারের কাছে আমাদের জোরদাবী ব্রহ্মপুত্র নদীটির ভাঙ্গনরোধে জরুরী ভাবে ব্যবস্থা নিবেন।
চর সোনাপুর গ্রামের মাফুজল হক আক্ষেপ করে বলেন, নদী ভাঙ্গন বাড়ির কাছে আসায় ঘরের চালের টিন খুলে অন্য জায়গায় নিয়ে রাখছি। জায়গা ও অর্থের অভাবে কোথাও ঘর উঠাতে পারছিনা। আমরা গরিব মানুষ আমরা এখন পর্যন্ত কোন সহায়তা পাই নাই। আমাগরে কেউ দেখতে আসে নাই। আমাদের দুঃখ কেউ বোঝে না।
চরশৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান একেএইচএম সাইদুর রহমান দুলাল বলেন, অসময়ে ব্রহ্মপুত্র নদে ব্যাপক হারে নদী ভাঙ্গছে। গত একমাসে চরশৌলমারী ইউনিয়নের ৯টি গ্রামের ২৬টি বসত বাড়ি, মসজিদ, রাস্তাঘাটসহ কয়েক একর ফসলী জমি ব্রহ্মপুত্র নদে বিলিন হয়েছে। এতে করে বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে চরশৌলমারী ইউনিয়নটি হারিয়ে যেতে বসেছে যা দেখার কেউ নেই।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজ্জল হাওলাদার বলেন, অসময়ে ব্রহ্মপুত্র নদে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। অনেক বাড়ি ব্রহ্মপুত্র নদে বিলিন হয়েছে এবং হুমকির মুখে পড়েছে ঘড়বাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলী জমি। তবে ভাঙ্গনের বিষয়ে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। আমার বরাদ্দ না থাকায় এই ভাঙ্গন কবলিত মানুষদের পার্শে দাড়াতে পাড়িনী। বিলিনের পথে সুখেরবাতি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নিলামে বিক্রিয় করা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানিউন্নায়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.রাকিবুল হাসান বলেন, অসময়ে ব্রহ্মপুত্র নদের বামতীর ব্যাপক হারে ভাঙ্গছে । বরাদ্দ না থাকায় ভাঙ্গন কবলিত এলাকাগুলোতে কিছুই করতে পারছি না। তবে এ নদী শাসনের জন্য প্রকল্প প্রস্তাবনা দেওয়া আছে বরাদ্দ আসলেই কাজ শুরু করা হবে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।