শফিকুল ইসলাম: রৌমারীর ভারপ্রাপ্ত খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) মুহাম্মদ শহিদুল্লাহর বিরুদ্ধে সাড়ে ৫৬ মেঃ টন চাউল ও ৮ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
এনিয়ে তার বিরুদ্ধে বহু অপকর্মের চিত্র তুলে ধরে ৩৪ মিলার ও ১৯ ঠিকাদার এবং ২জন কৃষক পৃথক পৃথকভাবে মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন ও প্রত্যাহার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে ১৯ জন অভ্যান্তরীন পরিবহন ঠিকাদার খাদ্যশস্য পরিবহন কাজে নিয়োজিত। তারা খাদ্যশস্য চলাচল সুচীর মাধ্যমে চাউল পরিবহন করে থাকে। কিন্তু গত ২৯ অক্টোবর ১৬ নং চলাচল সুচীর মাধ্যম মের্সাস এসএস এন্টারপ্রাইজ কুড়িগ্রাম হতে ট্রাকযোগে ফেরীর মাধ্যমে রৌমারী খাদ্যগুদামে পৌছায়। এ সময় ভারপ্রাপ্ত খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ সম্পূর্ণ চাউল বুঝে নিয়ে ইনভয়েস এর প্রা্িপ্ত পুরন না করে বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করেন। এক র্পযায়ে তিনি ১৪.৩১০ মেঃটন চাউল প্রাপ্ত অস্বীকার করেন। এনিয়ে ওই ঠিকাদার প্রতিবাদ করলে তিনি ১৯জন অভ্যান্তরীন পরিবহন ঠিকাদার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। পরে বিষয়টি নিয়ে ১৯ ঠিকাদার বাদী হয়ে মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন ও প্রত্যাহার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করে।
একইভাবে রৌমারী উপজেলার ৩৪ জন চালকল মিলার সরকারের র্শত অনুযায়ী প্রতিবছর খাদ্যগুদামে ধান ছাটাই করে চাউল সরবরাহ করে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১০জন মিলার খাদ্যগুদামে শর্ত অনুযায়ী চাউল দিয়ে থাকেন। সম্প্রতি মের্সাস সুজল চালকল প্রোঃ গোলাম রসুল মিল, খাদ্যগুদামে চাউল জমাদেন। এসময় ভারপ্রাপ্ত খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ সম্পূর্ণ চাউল বুঝে নিয়ে বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করেন। এক র্পযায়ে তিনি ১০ মেঃ টন চাউল অস্বীকার করেন। একইভাবে মালিহা চালকল প্রোঃ আবুল কাশেমের ১৩ টন, রাসেল চালকল প্রোঃ লিয়াকত ১১ মেঃ টন, এসএস চালকল ৫.৫০ মেঃ টন, অনুটালকল প্রোঃ আব্দুল খালেক ৩ মেঃ টন চাউল তিনি জমা পাননি বলে জানান। এক পর্যায়ে পুনরায় চাউল জমা না দিলে মামলার হুমকি দেন। এনিয়ে প্রতিবাদ করলে তিনি মিলাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। পরে ৩৪ জন মিলার বাদী হয়ে জেলা খাদ্য কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন ও প্রত্যাহার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অপরদিকে কৃষক নাহিদ অভিযোগ করেন,আমিসহ ৩৩ জন প্রান্তিক কৃষক সরকারের নির্ধারিত মুল্যের ৩ মেঃ টন হিসাবে মোট ৯৯ মেঃ টন ধান খাদ্যগুদামে সর্ম্পুন ভাবে জমাদান করার কথা। কিন্তু আমিসহ ১৬ জনের ৩ মেঃ টন ধান গুদামে জমা দেই। এসময় তিনি ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহন করেন। অথচ ভারপ্রাপ্ত খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ সর্ম্পুন ধান বুঝে নিয়ে বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করেন। এক র্পযায়ে তিনি বলেন ১০ মেঃ টন চাউল তিনি প্রাপ্ত হননি। এনিয়ে প্রতিবাদ করলে কর্মকর্তা নাহিদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। পরে নাহিদ বাদী হয়ে জেলা খাদ্য কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন ও প্রত্যাহার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করে। তবে অভিযোগের প্রেক্ষিতে এখনো তদন্ত হয়নি।
অপরদিকে রৌমারীর খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা শহিদুল্লাহ’র বিরুদ্ধে ব্যাপক দূর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে কয়েকটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ধারাবাহিক ভাবে সংবাদ প্রকাশ হয়। পরে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসলে কুড়িগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন উলিপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মিসবাহুল ইসলামকে দায়িত্ব দেন। তিনি গত ২৭ অক্টোবর থেকে তার উলিপুর কার্যালয় থেকে এ তদন্ত কার্যক্রম দায়সারা ভাবে শুরু করেছেন । এ ব্যাপারে উলিপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মিসবাহুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন তদন্তের স্বার্থে এই মুহুর্তে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে খুব শীঘ্রই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রৌমারীর ভারপ্রাপ্ত খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ সম্পর্ণ বানোয়াট. ভুয়া.ও মিথ্যা। যারা ঠিকমত কাজ করেন না, আমি যা করছি তা সরকারি আইন মেনে করছি ।
এ ব্যাপারে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা হাসনাত মোহাম্মদ মিজানুর রহমান অভিযোগের বিষয়ে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
কুড়িগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাইফুল ইসলাম কাবীর খানের টেলিফোন নম্বরে কথা বলাহলে তিনি অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি তদন্তের জন্য ৩ সদস্যের একটি তদ›ন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তদন্ত টিমকে ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।