রৌমারীতে সরিষা ছেড়ে অধিক লাভের আশায় ঝুকছে ভুট্টা আবাদে

Seba Hot News : সেবা হট নিউজ
0

শফিকুল ইসলাম, রৌমারী: চলতি মৌসুমে সরিষা আবাদে লক্ষ্যমাত্রার অর্জিত হয়নি। এবার লক্ষমাত্রার চেয়ে প্রায় ২’শ হেক্টর কম জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। অধিক লাভের আশায় কৃষকরা সরিষা ছেড়ে ভুট্টার আবাদে ঝুকছে বেশি। ফলে বাজারে সরিষা সংকট দেখা দিতে পারে বলে ধারনা করছেন অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা। 

রৌমারীতে সরিষা ছেড়ে অধিক লাভের আশায় ঝুকছে ভুট্টা আবাদে
রৌমারীর কৃষকরা সরিষা ছেড়ে অধিক লাভের আশায় ঝুকছে ভুট্টা আবাদে


লোকসান হলেও অনেক কৃষক সরিষার আবাদ করেছেন। তাদের জমিতে ফুলের রঙ্গিলভ‚মিতে পরিণত হয়েছে দিগন্ত মাঠ জুড়ে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫ হাজার ৮”শ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হবে। এবারে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন এলাকার কৃষকরা। 

কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারীতে দফায় দফায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয় কৃষক। বন্যায় আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। কৃষকরা তাদের ক্ষতি পুশিয়ে তুলতে হতাশ না হয়ে ঝুকে পড়ছে সরিষা আবাদে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষি প্রণোদনা অর্থাৎ বিনা মুল্যে সার ও সরিষার বীজও দেওয়া হয়েছে কৃষকদের। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। 

বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে কৃষকরা বাড়তি ফসল হিসেবে সরিষা চাষ করে থাকেন। অপর দিকে কৃষকরা উচু জমিগুলোতে আগাম আমনধানের চাষ করে থাকেন। ধান কাটার পরেই আবারো সরিষা চাষ করেন। সরিষা ফসল তুলেই বোরা ধানের চারা রোপণ করেন কৃষকরা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তা ও স্বল্প খরচে সরিষা ও আমন ধানের ফসল ঘরে তুলেন। কিন্ত পরবর্তীতে উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে গিয়ে পড়েন বিপাকে। একদিকে বাজার সিন্ডিকেটের কারনে কৃষকরা তারা ন্যায্য মুল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অপরদিকে প্রত্যন্তঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় পরিবহন খরচ পড়ছে বেশি। ফলে আর্থিকভাবেও তারা ক্ষতির মুখে পড়ছে। স্থানীয়রা জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা যত ভালো হবে, ততোই আর্থসামাজিক উন্নয়ন হবে। এই সরিষা আবাদে  লক্ষ্যমাত্রার অর্জিত হয়নি বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। কারন হিসেবে জানা যায়, অধিক লাভের আশায় অনেক কৃষক ভুট্টা চাষ করেছে। ফলে সরিষা আবাদে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি।

উপজেলার লাঠিয়ালডাঙ্গা গ্রামের কৃষক ফরমান আলী বলেন, আমাদের জমিগুলো নিচু হওয়ায় আমরা আমন ধানের চাষ করতে পারিনা। তাই বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে,সাথেই প্রতিবছরের ন্যায় এবারও সরিষার চাষ করেছি। তিনি আরও  বলেন এই সীমান্ত ঘেঁষা অঞ্চলটিতে মাত্র দুটি ফসলই চাষ করা সম্ভব হয়। সরিষা উৎপাদনে আগাছা পরিষ্কার করতে হয়না, অল্প খরচ হলেও লাভ তেমন হয় না। এরপরেও আমি প্রতি বছরই ৫ একর জমিতে সরিষার আবাদ করে থাকি।

রৌমারী ইউনিয়নের নওদাপাড়া গ্রামের কৃষক লাল বাদশা বলেন, আমি ১ একর জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছিলাম আগাম ধান কেটে ওই জমিতেই সরিষার আবাদ করেছি। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আমি ভালো ফলন পাবো।

উপজেলার নতুনবন্দর গ্রামের আব্দুল জলিল বলেন, সরিষা আবাদে খরচ কম হয়, লাভও হয়। কিন্তু তেলের দাম না কমালে বোরা ধান আবাদে লাভ হবে না। সরিষা বিক্রি করার টাকায় সংসারের খরচ চালাই, আবার ওই টাকায় বোরো ধানের চাষ করি। তিনি আরও বলেন, প্রতি একর জমিতে সরিষা চাষে খরচ হয় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। ভালো ফলন হলে একরে ১৬ থেকে ১৮ মণ পর্যন্ত সরিষা হয়। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, কৃষকরা এই ফসলটাকে বাড়তি আয়ের উৎস হিসেবে চাষাবাদ করে থাকে। আমাদের রৌমারী উপজেলায় সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৮”শ হেক্টর। গত বছরের চেয়ে এবার সরিষার আবাদ কিছু কম হয়েছে। কৃষি অধিদপ্তর থেকে ৫ হাজার ৫’শ জন কৃষককে বিনা মুল্যে সার ও সরিষা বীজ দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত আবওহায়া অনুকুলে আছে এবং শেষ পর্যন্ত এরকম থাকলে কৃষকরা সরিষার বাম্পার ফলন পাবে।





সূত্র: /সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশ্যে আপোষহীন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top