জি এম ক্যাপ্টেন, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের উলিপুরে বোরো ধানের আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। ঠান্ডা আর শীত উপেক্ষা করে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সেচ, হালচাষ, বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন এবং রোপণের কাজ করছে তারা।
![]() |
কুড়িগ্রামের উলিপুরে বোরো ধান চাষে ব্যস্ত কৃষক |
তবে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক। বৃদ্ধি পেয়েছে শ্রমিকের মজুরি। সবমিলিয়ে বোরো চাষে হিমশিম খাচ্ছে কৃষকরা। তারপরও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলনের আশায় বুক বেঁধেছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় চলতি এই মৌসুমে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে ২২ হাজার ৫শ ৪০ হেক্টর জমি। এরমধ্যে হাইব্রিট ৪০ হেক্টর, উফশী ১৪ হাজার ৫০ হেক্টর ও স্থানীয় জাত ১৫০ হেক্টর জমি। এ পর্যন্ত অর্জন হয়েছে ৬ হাজার ৫শ হেক্টর। এবারে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৩ হাজার ৪শ ৩২ মেট্রিক টন।
সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মাঠে মাঠে চলছে বোরো ধান লাগানোর ব্যস্ততা। কৃষকরা বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন করে জমিতে রোপণ করছেন। কেউ জমিতে পানি আটকানোর জন্য আইল বাঁধছেন। গভীর, অগভীর পাম্প ও শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচ দিচ্ছেন। গরুর হাল, ট্রাক্টর বা পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ করছেন। কেউ চাষ করা উঁচু নিচু জমি সমান করছেন। সবমিলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যেন কৃষকদের দম ফেলার সময় নেই। চাষিরা গত বছর বোরো ধানের দাম ভালো পাওয়ায় এবারে ধান চাষ জোরেশোর করছেন।
শীত ও কুয়াশা অপেক্ষা করে কাজে আসা উলিপুর পৌরসভার কাশির খামার গ্রামের দিনমুজুর হাছেন আলী বলেন, ঠান্ডা অপেক্ষা করে পেটের দায়ে বোরো রোপন করতে এসেছি। সারাদিন কাজ করে ৪/৫শ টাকা পাই। জিনিসপত্রের যে দাম তাতে সংসার চালানো যাচ্ছে না।
উলিপুরে পৌরসভার নারিকেল বাড়ি সন্ন্যাসীতলা গ্রামের কৃষক খগেন চন্দ্র জানান, তিনি প্রায় ৪ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করেছেন। প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ধানের বীজ রোপন, কাদা করা, ওষুধ বাবদ এক হাজার টাকা, জমি চাষ করা বাবদ ৮শত ২৫ টাকা, দিনমজুর কর্তৃক চারা রোপন ১ হাজার ৫০ টাকা, চাষের সার কেনা বাবদ ১ হাজার ৫শত টাকা, ওষুধ প্রয়াগ ৪শত টাকা, নিড়ানী দেয়া ৮শত টাকা। এছাড়া ৩ মাস পানি সেচ বাবদ ২ হাজার ৬শত ৪০ টাকা, ধান কাটা-মাড়াই ৪ হাজার টাকা সহ অন্যান্য আরো ২ হাজার টাকা। এ নিয়ে প্রতি বিঘা জমিতে চাষাবাদ বাবদ সর্বমোট খরচ হবে ১৪ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা। বাম্পার ফলন ও দাম ভালো পাওয়া গেলে এই খরচ আর পরিশ্রম দুই সার্থক হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মোশাররফ হোসেন বলেন, কৃষকদের পরিবেশবান্ধব লাইন-লোগো পদ্ধতি ব্যবহার করে চারা রোপণের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। কারণ এতে রোগবালাই কম হবে এবং ফলন বৃদ্ধি পাবে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।