সেবা ডেস্ক: বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে, বিশেষ করে বঙ্গোপসাগরের কূলে বা দ্বীপাঞ্চলে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের ধারণাটি শুধু একটি অবকাঠামোগত পরিবর্তন নয়, বরং এটি বাংলাদেশের অর্থনীতি, নিরাপত্তা, পরিবহন ব্যবস্থা এবং সামাজিক উন্নয়নে একটি যুগান্তকারী বিপ্লব আনতে সক্ষম৷
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ বহুমুখী উপকারিতা ও সম্ভাবনা।। চিত্রসূত্র:" ব্যবহৃত সকল চিত্র ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত।" |
আজকের দিনে, বিশ্বের বৃহৎ বিমানবন্দরগুলো যেমন দুবাই, সিঙ্গাপুর, কানসাই—এসব বিমানবন্দর যে দেশের অর্থনীতি ও পর্যটন খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে, তেমন একটি বিমানবন্দর বাংলাদেশে গড়ে উঠলে তা দেশের বৈশ্বিক অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে ৷
এই উদ্যোগের সফল বাস্তবায়নের জন্য আমরা বিশ্বের সফল বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে একটি, জাপানের কানসাই বিমানবন্দর, এবং অন্যান্য উদাহরণ তুলে ধরব, যাতে সঠিক কৌশল ও দৃষ্টিভঙ্গি নির্ধারণ করা যেতে পারে ৷
কানসাই বিমানবন্দরের উদাহরণ এবং নির্মাণ খরচ
জাপানের কানসাই বিমানবন্দর একটি কৃত্রিম দ্বীপে নির্মিত এবং এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ও প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে একটি ৷ ১৯৯৪ সালে এটি নির্মিত হয়, বর্তমানে এটি বিশ্বমানের একটি বিমান পরিবহণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ৷ কানসাই বিমানবন্দরটি কৃত্রিম দ্বীপে নির্মিত হওয়ায়, এর নির্মাণ খরচ ছিল অত্যন্ত উচ্চ—প্রায় ১৩.৫ বিলিয়ন ডলার (৯,০০০ কোটি টাকা) ৷
যদিও কানসাই বিমানবন্দর নির্মাণে বিশাল পরিমাণ অর্থ খরচ হয়েছে, তবুও এটি বর্তমানে জাপানের অর্থনীতিতে বিশাল অবদান রেখে চলেছে ৷ এই বিমানবন্দরটি শুধুমাত্র যাত্রী পরিবহণের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং আন্তর্জাতিক কার্গো ব্যবসাতেও একটি বড় ভূমিকা পালন করছে ৷ কানসাই বিমানবন্দর প্রতিষ্ঠার পরপরই, এটি জাপানের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন, ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটন এবং সাপ্লাই চেইন উন্নয়নে অবদান রেখেছে ৷
বাংলাদেশে বিমানবন্দর নির্মাণের খরচ এবং সম্ভাব্য আয়
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য প্রাথমিকভাবে প্রয়োজন হবে উন্নত প্রযুক্তি এবং অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব ৷ কানসাই বিমানবন্দর এবং অন্যান্য উদাহরণ অনুসরণ করে, ধারণা করা হচ্ছে, দক্ষিণাঞ্চলে বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য খরচ হতে পারে প্রায় ৫-৭ বিলিয়ন ডলার (৩,৫০০ থেকে ৫,০০০ কোটি টাকা) ৷ এই প্রকল্পে উন্নত দেশগুলির প্রযুক্তি এবং বিনিয়োগ প্রয়োজন হতে পারে, যা বিমানবন্দরটির সফল বাস্তবায়নে সহায়ক হবে ৷
এই বিমানবন্দরটি চালু হলে, বাংলাদেশের বার্ষিক আয় ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে ৷ বিশেষ করে, যাত্রীদের ট্রানজিট সেবা, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, এবং পর্যটন খাতে আয় বৃদ্ধি পাবে ৷ প্রাথমিকভাবে, দৈনিক ১০-২০ মিলিয়ন ডলার আয় প্রত্যাশা করা যেতে পারে, যা বছরে ৩.৬ থেকে ৭.২ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে ৷
প্রযুক্তি এবং সহযোগিতার গুরুত্ব
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য অত্যন্ত দক্ষ এবং উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রয়োজন হবে ৷ উন্নত দেশগুলো যেমন জাপান, সিঙ্গাপুর, দুবাই—এই দেশগুলোর প্রযুক্তি এবং অভিজ্ঞতা ব্যবহার করা গেলে, এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সহজ হবে ৷ বিশেষ করে কৃত্রিম দ্বীপ নির্মাণ, জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিকার এবং সুষ্ঠু অবকাঠামো তৈরি করতে এই দেশগুলোর প্রযুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ৷
বাংলাদেশের সরকারের পাশাপাশি, জাপান, সিঙ্গাপুর, দুবাই বা দক্ষিণ কোরিয়ার মত দেশের প্রযুক্তি এবং অভিজ্ঞতার সাহায্য নেওয়া গেলে, এই প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন অনেক সহজ হবে ৷ এই দেশগুলো আধুনিক টেকনোলজি, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, পরিবহন অবকাঠামো এবং বিমানবন্দর পরিচালনায় দীর্ঘ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে ৷
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে বিমানবন্দর নির্মাণের উপকারিতা
১. বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন:
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রাপ্ত আয় এবং বিদেশি বিনিয়োগ বাংলাদেশকে বৈদেশিক মুদ্রার ক্ষেত্রে স্বাবলম্বী করে তুলবে ৷ কেবল ট্রানজিট সার্ভিস থেকেই বছরে ৩.৬-৭.২ বিলিয়ন ডলার আয় হতে পারে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য এক বিশাল উপকারে আসবে ৷
২. পর্যটন খাতের বিকাশ:
কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন, সুন্দরবন এবং অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রের জন্য সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সরবরাহ করা হলে, পর্যটক সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের পর্যটন শিল্পে বিপ্লব ঘটবে ৷
৩. আন্তর্জাতিক ব্যবসার সম্প্রসারণ:
বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিক পরিবহণ ও বাণিজ্য সংযোগের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাব হয়ে উঠবে, যা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ব্যবসা সম্প্রসারণে সহায়ক হবে ৷
৪. যানজট কমানো এবং অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ বৃদ্ধি:
রাজাধানী ঢাকার উপর চাপ কমবে, এবং দেশের ৬৪টি জেলার সঙ্গে বিমান সংযোগ স্থাপন করা যাবে ৷ এতে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে, ব্যবসা এবং পর্যটন আরও বিকশিত হবে ৷
৫. নিরাপত্তা উন্নয়ন:
বঙ্গোপসাগরের মৎস্য পাহারা জোরদার হবে এবং দেশের আকাশসীমা আরও শক্তিশালী হবে ৷ একই সঙ্গে, দেশের সামরিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতিতে সাহায্য করবে ৷
৬. কর্মসংস্থান সৃষ্টি:
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের ফলে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে, বিশেষ করে বিমান চলাচল, পর্যটন, পরিবহন, ও বাণিজ্য খাতে ৷ এটি বাংলাদেশের তরুণ জনগণের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে ৷
বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও অর্থনৈতিক প্রভাব
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মিত হলে, প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ট্রানজিট সুবিধা তৈরি হবে, যার ফলে বৈদেশিক মুদ্রা আয় ব্যাপকভাবে বাড়বে ৷ প্রতিবছর গড়ে ৩০ লক্ষ প্রবাসী বাংলাদেশি বিমানবন্দর দিয়ে যাতায়াত করেন ৷ এই যাত্রীরা যদি সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট নিতে পারেন, তবে শুধু ট্রানজিট ফ্লাইট সেবার মাধ্যমেই বাংলাদেশ দৈনিক ১০-২০ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারে, যা বছরে ৩.৬-৭.২ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত হতে পারে ৷
এছাড়া, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে অবদান রাখবে ৷ বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইনের অংশ হয়ে, বাংলাদেশ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক কার্গো হাব হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে ৷ চট্টগ্রাম ও পায়রা বন্দরের সঙ্গে সংযোগ থাকলে, দক্ষিণাঞ্চল বিশেষত চট্টগ্রামকে আরও শক্তিশালী বানানো সম্ভব হবে ৷
রাজধানী ঢাকার যানজট কমানো এবং আকাশপথের উন্নয়ন
ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রতিদিন যাত্রীদের চাপ এত বেশি যে, এর কার্যকারিতা প্রায়ই ব্যাহত হয় এবং ঢাকার যানজট পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায় ৷ যদি দক্ষিণাঞ্চলে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মিত হয়, তবে এটি ঢাকার উপর চাপ কমাতে সহায়তা করবে ৷ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ সরাসরি বিমানযোগে আন্তর্জাতিক যাত্রা করতে পারবেন, যা তাদের জন্য সময় ও শ্রমের সাশ্রয়ী হবে ৷ ঢাকার জনসংখ্যার চাপও কমবে, কারণ অনেক প্রতিষ্ঠান বিমানবন্দর কেন্দ্রিক নতুন শহর ও বাণিজ্যিক এলাকা গড়ে তুলবে ৷
পার্শ্ববর্তী দেশের উপর নির্ভরতা কমানো
বর্তমানে অনেক বাংলাদেশি যাত্রী ভারত, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ও দুবাই হয়ে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে যাতায়াত করেন ৷ নতুন বিমানবন্দর হলে ঢাকা ছাড়াই সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের সুবিধা পাওয়া যাবে, ফলে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর উপর নির্ভরতা কমবে ৷ একই সাথে, ভারত, নেপাল, ভূটান, মিয়ানমার থেকে ট্রানজিট ফ্লাইট নিতে যাত্রীরা বাংলাদেশকেই বেছে নেবে, যা দেশের আকাশপথে অর্থনৈতিক গুরুত্ব বাড়াবে ৷
বঙ্গোপসাগরের মৎস্য পাহারা এবং সামরিক নিরাপত্তা
বিমানবন্দরটি সামরিক সুবিধা হিসেবে ব্যবহৃত হলে বঙ্গোপসাগরের মাছ ধরার সুরক্ষা আরও মজবুত হবে ৷ ভারতের, মিয়ানমারের ও থাইল্যান্ডের জেলেরা অবৈধভাবে বাংলাদেশি জলসীমায় মাছ ধরছে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর ৷ বিমানবন্দর থেকে ড্রোন ও প্যাট্রোল বিমান পরিচালনা করে এই অবৈধ কার্যক্রম রোধ করা সম্ভব হবে, যা বঙ্গোপসাগরের মৎস্য সম্পদ রক্ষা করতে সহায়ক হবে ৷
পর্যটন খাতের বিকাশ
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের মাধ্যমে বাংলাদেশের পর্যটন খাত বিপুল পরিমাণে লাভবান হবে ৷ কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন, কুয়াকাটা, সুন্দরবন, মহেশখালী প্রভৃতি স্থানগুলো বিশ্বব্যাপী পরিচিত ৷ সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট আসা-যাওয়া শুরু হলে, পর্যটক সংখ্যা কয়েকগুণ বাড়বে, যা বাংলাদেশের GDP-তে ৩-৫% অতিরিক্ত প্রবৃদ্ধি যোগ করবে ৷ এতে হোটেল, রিসোর্ট ও অন্যান্য পর্যটন খাতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ আসবে ৷
দেশের ৬৪ জেলার সঙ্গে যোগাযোগ সংযোগ
বাংলাদেশের ৬৪টি জেলা যদি বিমানযোগে একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত হয়, তবে তা দেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থাকে এক নতুন মাত্রায় নিয়ে যাবে ৷ ঢাকার যানজট কমবে, পাশাপাশি ব্যবসা, পর্যটন, এবং শিক্ষা ক্ষেত্রেও উন্নতি হবে ৷ এছাড়া, এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সেবা সহজ হবে, যা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রোগী দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানোর সুযোগ সৃষ্টি করবে ৷
বিশ্বমানের হাব বিমানবন্দর হিসেবে স্বীকৃতি
বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দর, দুবাইয়ের দুবাই বিমানবন্দর, কাতারের হামাদ বিমানবন্দর ও জাপানের কানসাই বিমানবন্দর স্বীকৃত ৷ বাংলাদেশ যদি বঙ্গোপসাগরের কূলে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গড়ে তুলতে সক্ষম হয়, তবে তা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম বিমান হাব হয়ে উঠতে পারে ৷ এটি বাংলাদেশের বিশ্বব্যাপী ব্র্যান্ডিং এবং মর্যাদাকে বাড়াবে এবং দেশের আকাশপথের গুরুত্ব আন্তর্জাতিকভাবে নিশ্চিত করবে ৷
উপযুক্ত দ্বীপ এবং নির্মাণের চ্যালেঞ্জ
বাংলাদেশের কোন দ্বীপে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ করা হলে সর্বোচ্চ উপকারিতা পাওয়া যাবে তা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় রয়েছে ৷ এই বিষয়ে মহেশখালী দ্বীপ সবচেয়ে উপযুক্ত বলে মনে হয় ৷ মহেশখালী দ্বীপের ভূগোল এবং স্থিতিশীলতা অন্যান্য দ্বীপগুলোর তুলনায় অনেক ভালো, এবং এটি কক্সবাজারের খুব কাছেই অবস্থিত, যার ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থাও অনেক সহজ হবে ৷
সন্দ্বীপ এবং হাতিয়া দ্বীপও গুরুত্বপূর্ণ, তবে সন্দ্বীপের মাটি নরম হওয়ায় বড় অবকাঠামো নির্মাণে কিছু সমস্যা হতে পারে ৷ হাতিয়া দ্বীপে বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকি বেশি, তাই এটি নির্মাণের জন্য কিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে ৷
এছাড়া, কুতুবদিয়া এবং সেন্ট মার্টিন দ্বীপেও কিছু সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে ৷ কুতুবদিয়ার ভূগোল উপযুক্ত হলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সুরক্ষিত অবকাঠামো নির্মাণে সমস্যা হতে পারে ৷ সেন্ট মার্টিনের ক্ষেত্রে, ছোট আকার এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সংরক্ষণের জন্য বিমানবন্দর নির্মাণের কাজ জটিল হতে পারে, যদিও এটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন স্থান ৷
কুয়াকাটা দ্বীপের ভূগোল ছোট হলেও, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র ৷ তবে এখানে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি রয়েছে এবং আধুনিক অবকাঠামোর অভাবও রয়েছে৷
সার্বিকভাবে, মহেশখালী দ্বীপ সবচেয়ে উপযুক্ত মনে হলেও, অন্যান্য দ্বীপগুলোর উন্নয়নও সম্ভাবনাময় হতে পারে, তবে প্রতিটি দ্বীপের ভূগোল, স্থিতিশীলতা, এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি সঠিকভাবে পর্যালোচনা করে পরিকল্পনা গ্রহণ করা আবশ্যক ৷
উপসংহার:
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ শুধু দেশের অর্থনীতির জন্য নয়, বরং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক অবস্থান শক্তিশালী করার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ৷ এটি বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটন, কর্মসংস্থান এবং নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এক বিশাল সুযোগ তৈরি করবে ৷ যদিও নির্মাণের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তবে সঠিক প্রযুক্তি, অর্থনৈতিক পরিকল্পনা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব ৷ সরকারের সদিচ্ছা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার সঙ্গে যদি প্রয়োজনীয় বাজেট ও কার্যকরী পরিকল্পনা থাকে, তবে দক্ষিণাঞ্চলে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ বাংলাদেশের উন্নয়নকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে ৷
হক মোঃ ইমদাদুল
জাপান
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।