সেবা ডেস্ক: সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা, সংবিধান সংস্কার ও প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে বক্তব্য।
সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান দৃঢ় কণ্ঠে ঘোষণা করেছেন যে তার নেতৃত্বে সেনাবাহিনী রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করবে না। সেনা সদর দফতরে একটি জাতীয় দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি সেনাবাহিনীর রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘আমার দায়িত্বকালে আমি সেনাবাহিনীকে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হতে দেব না। রাজনীতির সমাধান রাজনীতিবিদেরাই করবেন। সেনাবাহিনীর মূল দায়িত্ব জাতীয় নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা। আমরা সেই দায়িত্ব পালনে অটল থাকব।’
জেনারেল ওয়াকার বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের পাশে রয়েছি এবং তাদের চাহিদা অনুযায়ী সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাব। যখন তারা আমাদের প্রয়োজন ফুরানোর ঘোষণা দেবেন, আমরা সেনানিবাসে ফিরে যাব।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর দীর্ঘমেয়াদি ভূমিকা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। ১/১১-এর অভিজ্ঞতার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীকে মাঠে দীর্ঘদিন রাখলে উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা বাড়ে। এটি আমাদের জন্য বিব্রতকর।’
সাক্ষাৎকারে তিনি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনার প্রস্তাব করেন। তার মতে, ‘সশস্ত্র বাহিনীকে রাষ্ট্রপতির অধীনে রাখা যেতে পারে। এটি আমাদের শাসনব্যবস্থায় ভারসাম্য আনতে পারে।’
ভারত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভারত আমাদের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। সম্পর্কটা ন্যায্যতার ভিত্তিতে হওয়া উচিত। জনগণ যেন কখনো মনে না করে, ভারত আমাদের ওপর কর্তৃত্ব করছে। আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সীমান্তে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা জরুরি।’
‘চীন আমাদের উন্নয়নের অংশীদার। তাদের অনেক বিনিয়োগ আমাদের দেশে রয়েছে। তাদের সামরিক সরঞ্জাম আমরা নিয়মিত ব্যবহার করছি।’
যুক্তরাষ্ট্র ‘আমাদের সম্পর্ক মজবুত ও ভারসাম্যপূর্ণ। আমরা এটি বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক সমঝোতার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো সমঝোতার মাধ্যমে এগিয়ে আসতে পারে। আমি আশাবাদী, রাজনীতিবিদরা ক্রান্তিকালে একসঙ্গে বসে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন।’
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।