জি এম ক্যাপ্টেন, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের পাখি প্রেমিক ফজলুল হক ঠিকাদার। শহরের নিমবাগান কবিরাজপাড়ায় তার বাড়ি। ভোরের আলো যখন ছড়িয়ে পড়ে ঠিক তখনই চারিদিক থেকে শতশত বিভিন্ন জাতের পাখি উঠে আসে বাড়ির আঙ্গিনায়, বারান্দায় ও আশ পাশের গাছের ডালে কিচি মিচির করতে থাকে। পাখির ডাকেই ঘুম ভাঙ্গে বাড়ির মানুষদের ।
পাখি প্রেমিক ফজলুল হক বুঝতে পারে তার অতিথিরা চলে এসছে। ঘরের দরজার কাছে দলে দলে আসে। তাদেকে খাবার দেয় সে । খাবার খেয়ে আপন মনে চলে যায় পাখিরা। তাদের বাড়ির আশপাশে মানুষরা প্রতিদিন পাখি দেখেও কোনো বিরক্ত করে না।
পাখি প্রেমিক ফজলুল হক তিন বছর আগে এক সকালে তার বাড়িতে কিছু পাখি আছে। তাদের প্রতি সদয় হয়ে রুটি ও চানাচুর আঙ্গিনায় ছিটিয়ে দেয় পাখিদের খাবারের জন্য। সে দিন পাখি গুলো এগুলো খেয়ে চলে গেলেও পরদিন আবারও আসে খাবারের আশায়। এভাবে ফজলুল হক তাদের খাবার দিতে থাকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাখির সংখ্যাও বাড়তে থাকে। বর্তমানে শত শত শালিক, ঘুঘু, বুলবুলি, কাঠঠোকরা, কাক, দোয়েলসহ নাম না জানা পাখি সকাল হলেই প্রতিদিন তার বাড়িতে আসে। খাবার খেয়ে চলে যায়। বাড়ির মানুষরাও তাদের আপন হয়েছে। তাদের কোন ভাবে বিরক্ত করে না। নিজ ভূবনের মত পাখি গুলি বিচরণ করে। তাদের জন্য মুড়ি, চানাচুর, চাল, ডালসহ বিভিন্ন প্রকার খাবার দেওয়া হয়।
পখিগুলো চানাচুর খেতে পছন্দ করে সবচেয়ে বেশি। তবারক আলী জানায় আমরা প্রতিদিন দেখি দূর দূরান্তর থেকে খাবার খেতে ফজলু ভাইয়ের বাসায় আসে। তিনি পরম যত্নে পাখিদের খাবারের ব্যবস্থা করেন। আখি বেগম জানান বছরের পর বছর প্রতিদিন নাম না জানা শত শত পাখি এখানে আসে। প্রথম দিকে এলাকার মানুষ অবাক হয়েছিল এতো পাখি দেখে। পাশের পলাশবাড়ী গ্রামের মামুন মিয়া জানান এলাকার কোন মানুষ পাখিদের বিরক্ত করে না। তারা আপন মনে খেয়ে চলে যায়। এলাকার মানুষ ও পাখিদের ভালবাসে।
ফজলুল হক জানান পাখিগুলো আমার সন্তানের মত। ওরা আমার দরজার সামনে কিচির মিচির করে। প্রায় তিন বছর আগে কয়েকটি পাখিকে খাবারের অভ্যাস করলেও সময়ের সাথে সাথে শত শত পাখি আসতে থাকে। তাদের নিয়মিত খাবার দেই। আমার ইচ্ছে আজিবন পাখিদের এভাবে খাওয়াব। আমি কোন কারনে বাহিরে গেলে আমার স্ত্রী খাবার দেয়।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা এ আর মামুন জানান পাখি হচ্ছে প্রকৃতির প্রাণ । নগরায়নের এই যুগে ক্রমাগত পাখির আবাস স্থল কমে যাচ্ছে সেই প্রেক্ষিতে ফজলু মিয়ার মত কিছু পাখি প্রেমিক মানুষ পাখিকে খাওয়াচ্ছে তাদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।