সেবা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন বাংলাদেশে কেমন প্রভাব ফেলবে? ট্রাম্প বা কমলার জয়ে কি পরিবর্তন আসতে পারে? ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন কি বাংলাদেশের জন্য উপকারী?
যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন ২০২৪: বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কেমন? |
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সবসময়’ই বৈশ্বিক রাজনীতির দিক পরিবর্তন করে থাকে। বাংলাদেশের জন্যও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন, বিশেষত যখন ডেমোক্রেটিক পার্টির কমলা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচার তুঙ্গে। নির্বাচনে’র ফলাফল সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে ঢাকা-ওয়াশিংটন ডিসি সম্পর্কের ওপর।
সম্প্রতি বাংলাদেশে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা অব্যাহত রয়ে’ছে। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ সফর করে অন্তর্বর্তী সরকারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ’ছাড়া সুশাসন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য ২০ কোটি ডলারের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ওয়াশিংটন। এ প্রসঙ্গে সাবেক রাষ্ট্রদূত এম সফিউল্লাহ জানান, ড. ইউনূসের আন্তর্জাতিক খ্যাতি এবং ডেমোক্রেটদের সঙ্গে তার সুসম্পর্কের কারণেই এই সহায়তা এসেছে।
কূটনীতিকদের মতে, ডেমোক্রেটদের ক্ষমতায় থাকাকালীন বাংলাদেশে উন্নয়ন প্রকল্পে সহায়তা এবং মানবাধিকার রক্ষায় তাদের আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। রিপাবলিকানরা ক্ষমতায় থাকলে তাদের প্রাধান্য হয় বাণিজ্য সম্প্রসারণে, যা বাংলাদেশে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তেমন প্রভাব ফে’লে না। ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরলে বিশেষ করে শুল্ক আরোপে কঠোর নীতি গ্রহণ করতে পারেন, যা বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর চাপ সৃষ্টি কর’তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কূটনীতিক এম হুমায়ুন কবির।
অন্যদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ মনে করেন যে, মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি’তে ডেমোক্রেটিক বা রিপাবলিকান যেই ক্ষমতায় আসুক না কেন, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন সমর্থনে তাদের অবস্থান একই থাকবে। তবে ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতা’য় ফিরলে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে এবং অর্থায়নে কিছু সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের নিন্দা জানিয়ে সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের টুইট এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি তার সমর্থন বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কেও প্রভাব ফেলতে পা’রে। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসলে ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক জোরদার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং এর ফলে বাংলাদেশ ভারতী’য় প্রভাবের মুখে পড়তে পারে।
ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশের জন্য সম্ভবত ইতিবাচক ফলাফল বয়ে আনবে বলে মনে করছেন কূটনীতিক ও বিশ্লেষকরা। ডেমোক্র্যাট’রা ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশে মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সমর্থন অব্যাহত থাকতে পারে, যা উন্নয়ন প্রকল্পে সহায়ক হবে। রোহিঙ্গা সংকট সমাধান ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে কমলা হ্যারিসের নেতৃত্বে সম্ভাব’না বাড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের জন্য ডেমোক্র্যাটদের ক্ষমতায় থাকা উন্নয়ন ও মানবাধিকার রক্ষায় সহায়ক হবে, যেখানে ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতা’য় এলে বাংলাদেশকে ব্যবসা ও বাণিজ্যে কঠোর শর্তের মুখে পড়তে হবে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।