সেবা ডেস্ক: জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আহতদের ১ লাখ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও তা না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে।
আহতদের ১ লাখ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও, তাদের টাকা দেওয়া হয়নি: পঙ্গু হাসপাতালে গিয়ে তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা |
জুলাই–আগস্ট আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের ১ লাখ টাকা দেওয়া হয়নি—এমন অভিযোগ তুলে, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমকে ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে। বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) গেলে হাসপাতাল থেকে বেরোনোর পথে আহত ব্যক্তিরা তাঁর পথ আটকে বিক্ষোভ করেন।
আহত ব্যক্তিরা, যাদের মধ্যে কয়েকজন হাত, পা, চোখে ব্যান্ডেজ বাঁধা ছিলেন, হুইলচেয়ারে করে হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করেন। তাঁরা বলেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা যদি তাঁদের সবার সঙ্গে না দেখা করেন, তাহলে তাঁরা রাস্তা ছাড়বেন না। এছাড়া, আন্দোলনের পর থেকে ১ লাখ টাকা প্রদানের যে ঘোষণা ছিল, তারও বাস্তবায়ন হয়নি বলে অভিযোগ করেন তাঁরা।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, নূরজাহান বেগম দুপুর ১২টার দিকে পঙ্গু হাসপাতালে যান, সেখানে তিনি কয়েকজন আহত ব্যক্তির খোঁজখবর নেন এবং হাসপাতালের পরিচালক ও চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর, যখন তিনি হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, আহত ব্যক্তিরা তাঁর গাড়ির সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়েন এবং গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন। কিছু আহত ব্যক্তি গাড়ির উপরে উঠেও বিক্ষোভ করেন।
এই পরিস্থিতিতে, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা অন্য একটি গাড়িতে চড়ে চলে যান। একপর্যায়ে, যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনারও এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হন এবং তিনি নিজেও অন্য গাড়িতে করে হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান। পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার জিয়াউল হক জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নিরাপদে হাসপাতাল ছেড়েছেন এবং তাঁর গাড়ি অক্ষত ছিল।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, পঙ্গু হাসপাতালে জুলাই–আগস্টের আন্দোলনে আহত ৮৪ জন এখনো চিকিৎসাধীন। আহত ব্যক্তিরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পরও, তাঁদের ক্ষতিপূরণের জন্য ঘোষিত টাকা এখনও তাঁরা পাননি। বিক্ষোভকারীরা বলেন, “স্বাস্থ্য উপদেষ্টা আমাদের উপেক্ষা করেছেন এবং এখনও আমাদের দাবি পূরণ করা হয়নি।”
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একজন, মো. মাসুম বলেন, “স্বাস্থ্য উপদেষ্টা আজ চতুর্থ তলায় গেলেও আমাদের দেখতে তিনতলায় যাননি। তিন মাস পর এসে তিনি আমাদের উপেক্ষা করেছেন।” তিনি আরও জানান, ফাউন্ডেশন থেকে এক লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল, তবে বেশিরভাগ আহতরা তা এখনও পাননি।
আরেক আন্দোলনকারী, আল মিরাজ, যিনি চোখের আঘাত পেয়েছেন, বলেন, “স্বাস্থ্য উপদেষ্টা পঙ্গু হাসপাতালে এসে আমাদের খোঁজ নিয়েছেন, তবে চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের আহতদের খোঁজ নিতে তিনি যাননি। আমাদের সরকারের কাছে দাবি, আমাকে বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসা করানো হোক।”
পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, সেনা সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন এবং তাদের হাসপাতালে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানান।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।