সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড: বঙ্গোপসাগরে বিশ্বের গভীর সামুদ্রিক খাদ

Seba Hot News : সেবা হট নিউজ
0

সেবা ডেস্ক: সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড, বঙ্গোপসাগরের মহীসোপানে অবস্থিত একটি গভীর সামুদ্রিক গিরিখাত। এটি পলল প্রবাহ ও ডলফিনের উপস্থিতির জন্য পরিচিত।

সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড বঙ্গোপসাগরে বিশ্বের গভীর সামুদ্রিক খাদ
সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড: বঙ্গোপসাগরের গভীরতর সামুদ্রিক গিরিখাত


সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড (Swatch of No Ground) একটি খাদ আকৃতির গভীর সামুদ্রিক অববাহিকা যা বঙ্গোপসাগরের মহীসোপানকে কৌণিকভাবে অতিক্রম করেছে। এটি বাংলাদেশের গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপের পশ্চিমে অবস্থিত এবং গঙ্গা খাদ নামেও পরিচিত। সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডের প্রস্থ প্রায় ৫-৭ কিলোমিটার এবং গভীরতা প্রায় ১,২০০ মিটার। মহীসোপানের কিনারা থেকে এই খাদটি সাগরের গভীর অংশ পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত সম্প্রসারিত।

এই খাদটি গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্রের মোহনার কাছ থেকে শুরু হয়ে বঙ্গোপসাগরের গভীর অঞ্চলে বঙ্গীয় ডিপ সি ফ্যানের পলল প্রবাহে অবদান রাখে। হিমালয়ের দক্ষিণ ও উত্তর দিক থেকে আগত পললসমূহ সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরের গভীর অংশে পরিবাহিত হয়।

উৎপত্তির ইতিহাস

সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডের উৎপত্তি নিয়ে কিছু মতভেদ রয়েছে। ধারণা করা হয়, প­াইসটোসিন যুগে সমুদ্রপৃষ্ঠের স্তর নিম্নতর থাকায় গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্রের পলল সরাসরি মহীসোপানে জমা হত। সেই সময়ে ঘোলাটে স্রোতের কারণে খাদটির গঠন এবং প্রসারিত পলল বহনের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। আজও ঘোলাটে স্রোতের প্রবাহ সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে পলল স্থানান্তর প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে।

নামকরণের ইতিহাস

১৮৬৩ সালে গ্যাডফ্লাই নামের ২১২ টন ওজন বিশিষ্ট একটি ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ ভারত থেকে ইংল্যান্ডে যাওয়ার পথে এই খাদে ডুবে যায়। যুদ্ধজাহাজটির খোঁজে জরিপকারী দল এলে শেষ পর্যন্ত খাদটির গভীরতা ও সীমাহীনতার কারণে এর নামকরণ করা হয় "সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড"। স্থানীয়ভাবে জেলেরা একে "নাই বাম" বলে থাকে, কারণ এখানে পানির গভীরতা এতোটাই বেশি যে সাধারণ বামের হিসাব মেলানো যায় না।

সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে ডলফিনের উপস্থিতি

এই অঞ্চলে সি-গাল (Segal) পাখি প্রায়শই চক্কর দেয়, যা ডলফিন বা তিমির অবস্থান নির্দেশ করে। সাধারণত, সি-গাল পাখি পানির কাছাকাছি চক্কর দিলে তার আশপাশে ডলফিনের উপস্থিতি থাকার সম্ভাবনা থাকে।

সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে যাওয়ার উপায়

সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড পৌঁছানোর জন্য মংলা বা সুন্দরবনের দুবলার চর/সোনারচর থেকে প্রায় ৩০-৪০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে হয়। মংলা থেকে প্রতিদিন মাছ ধরার ট্রলার যায়, যা স্থানীয় জেলেদের সঙ্গে কথা বলে নেওয়া সম্ভব। এছাড়া কুয়াকাটা থেকেও সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে, যদিও ট্রলার পাওয়ার উপর নির্ভরশীল। তবে গভীর সমুদ্র ভ্রমণের আগে আবহাওয়ার তথ্য জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।




সূত্র: /সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশ্যে আপোষহীন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top