সেবা ডেস্ক: মিরিঞ্জা ভ্যালি, বান্দরবানের লামায় অবস্থিত দ্বিতীয় সাজেক। ১৫০০ ফুট উচ্চতায় পাহাড়, মেঘ আর সমুদ্রের একত্রে মিতালি উপভোগ করুন।
|
মিরিঞ্জা ভ্যালি: বান্দরবানের দ্বিতীয় সাজেক |
পর্বত, অরণ্য ও সমুদ্রপ্রেমীদের জন্য আদর্শ ভ্রমণ গন্তব্য হলো বান্দরবানের মিরিঞ্জা ভ্যালি। ভ্যালিটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে সুন্দর পর্যটনকেন্দ্রগুলোর একটি।
|
মিরিঞ্জা ভ্যালি: বান্দরবানের অপরূপ দ্বিতীয় সাজেক |
"দ্বিতীয় সাজেক" নামে পরিচিত মিরিঞ্জা ভ্যালি ইতোমধ্যেই ভ্রমণপিপাসুদের মাঝে বিপুল সাড়া ফেলেছে।
|
মিরিঞ্জা ভ্যালি: বান্দরবানের দ্বিতীয় সাজেক |
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায়
১,৫০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত মিরিঞ্জা ভ্যালি। এখান থেকে দিগন্তরেখায় দেখা মেলে
কক্সবাজারের উত্তাল সমুদ্র এবং বিস্তীর্ণ সবুজ পাহাড়ের।
|
মিরিঞ্জা ভ্যালি: বান্দরবানের দ্বিতীয় সাজেক |
মেঘ, পাহাড়, এবং সূর্যের খেলায় মিরিঞ্জা ভ্যালির দৃশ্যাবলী ভ্রমণকারীদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা উপহার দেয়।
|
মিরিঞ্জা ভ্যালি: বান্দরবানের দ্বিতীয় সাজেক |
মিরিঞ্জা ভ্যালির ইতিহাস ও বিশেষত্ব
সরাসরি মিরিঞ্জা ভ্যালির ইতিহাস -নামকরণের উৎপত্তি নিয়ে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তবে মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্সের গোড়াপত্তন হয়েছিল ২০০৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রায় ১৬ একর পাহাড়ি ভূমিকে ঘিরে।
|
মিরিঞ্জা ভ্যালি: বান্দরবানের দ্বিতীয় সাজেক |
এর আগেও কতিপয় ট্রেকারদের মিরিঞ্জা ভ্যালিতে আনাগোনা থাকলেও এই কমপ্লেক্সই মূলত স্থানটির জনপ্রিয়তা সৃষ্টি করে।
|
মিরিঞ্জা ভ্যালি: বান্দরবানের দ্বিতীয় সাজেক |
মিরিঞ্জা পাহাড়ের দক্ষিণ প্রান্তের চূড়ায় ইট পাথরে নির্মাণ করা হয় বিখ্যাত টাইটানিক জাহাজের ভাস্কর্য,যার উদ্বোধন হয় ২০০৫ সালের ১৯ এপ্রিল।
|
মিরিঞ্জা ভ্যালি: বান্দরবানের দ্বিতীয় সাজেক |
মিরিঞ্জা ভ্যালির প্রধান আকর্ষণ হলো পাহাড় ও মেঘের অসাধারণ মিথস্ক্রিয়া। এই কারণে পর্যটনকেন্দ্রটিকে বর্তমানে দ্বিতীয় সাজেক ভ্যালি হিসেবে অভিহিত করা হয়।
|
মিরিঞ্জা ভ্যালি: বান্দরবানের দ্বিতীয় সাজেক |
মিরিঞ্জা ভ্যালি কোথায় অবস্থিত?
মিরিঞ্জা ভ্যালি অবস্থিত বান্দরবানের লামা উপজেলায়। কক্সবাজার থেকে লামা-আলীকদম সড়ক ধরে সরাসরি মিরিঞ্জা ভ্যালি পৌঁছানো যায়।
|
মিরিঞ্জা ভ্যালি: বান্দরবানের দ্বিতীয় সাজেক |
মিরিঞ্জা ভ্যালি বান্দরবানের অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।
মিরিঞ্জা ভ্যালি ভ্রমণে কী কী দেখবেন
পাহাড়ি রাস্তা বা ঝিরিপথ পেরিয়ে চূড়ায় আরোহণের পর দূরে দেখা যায় মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স এবং সাঙ্গু নদীসহ বিশাল পাহাড়জুড়ে বিস্তীর্ণ সবুজ বনভূমি।
|
মিরিঞ্জা ভ্যালি: বান্দরবানের দ্বিতীয় সাজেক |
সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার জন্য এই চূড়া উপযুক্ত একটি স্থান। এখান থেকে দিগন্তরেখায় কক্সবাজার অংশের বঙ্গোপসাগরের উত্তাল জলরাশি চোখে পড়ে। সেই সঙ্গে দৃশ্যমান হয় লাইট হাউস, যার ক্ষীণ আলোয় সরু রেখায় আলোকিত হয়ে ওঠে পৃথিবীর দীর্ঘতম সৈকত।
|
মিরিঞ্জা ভ্যালি: বান্দরবানের দ্বিতীয় সাজেক |
মুগ্ধতার পরিসর আরও একটু বাড়িয়ে দিয়ে কখনো কখনো সেই রেখায় ভেসে ওঠে একটি দুটি জাহাজ। পাহাড়ের দক্ষিণ প্রান্তের টাইটানিক জাহাজের কাঠামোটিও এখানকার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ।
|
মিরিঞ্জা ভ্যালি: বান্দরবানের দ্বিতীয় সাজেক |
পর্যটনকেন্দ্রের কাছেই উপজেলা শহরে ম্রো, ত্রিপুরা, ও মারমাসহ মোট ১১ জনগোষ্ঠীর বসবাস।
মিরিঞ্জা ভ্যালি রিসোর্ট ও আকর্ষণীয় স্থান
- মিরিঞ্জা ভ্যালির উচ্চতা: সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১,৫০০ ফুট।
- রিসোর্ট ও ক্যাম্পিং সুবিধা: বাঁশ ও খড়ের মাচাং এবং জুমঘরগুলো রাত কাটানোর জন্য বেশ আরামদায়ক।
- টাইটানিক ভাস্কর্য: ভ্যালির প্রধান আকর্ষণ হলো পাহাড়ের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত টাইটানিক জাহাজের আদলে তৈরি কাঠামো।
- প্রকৃতির মিথস্ক্রিয়া: এখানে পাহাড়ের চূড়া থেকে দেখা যায় সাঙ্গু নদী, মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স এবং কক্সবাজারের ফেনিল জলরাশি।
|
মিরিঞ্জা ভ্যালি: সাজেকের নান্দনিক ছোঁয়া |
মিরিঞ্জা ভ্যালি যাওয়ার উপায়
ঢাকা থেকে বান্দরবানের মিরিঞ্জা ভ্যালি যেতে হলে প্রথমে চকরিয়া বা চিরিঙ্গা বাস টার্মিনালে পৌঁছাতে হবে।
- বাস: ঢাকা থেকে কক্সবাজার বা বান্দরবানের বাস ধরে চকরিয়া পৌঁছানো যায়।
- ফ্লাইট: কক্সবাজার ফ্লাইট ব্যবহার করে সেখানে নেমে সড়কপথে মিরিঞ্জা পৌঁছানো যায়।
- স্থানীয় যানবাহন: চকরিয়া থেকে সিএনজি, জিপগাড়ি বা লোকাল বাসে মিরিঞ্জা ভ্যালি সহজেই যাওয়া যায়।
মিরিঞ্জা ভ্যালিতে ভ্রমণে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা
পাহাড়ের উপরের বাঁশ ও খড়ের মাচাং এবং জুম ঘরগুলো যথেষ্ট পরিবেশবান্ধব। এগুলো যাত্রাবিরতিতে বসবাসের জন্য উপযোগী।
|
মিরিঞ্জা ভ্যালি: সাজেকের নান্দনিক ছোঁয়া |
এছাড়া পর্যটন কমপ্লেক্সের ভেতর খোলা আকাশের নিচে রয়েছে বেশ কয়েকটি তাবু ঘর। তাই রাতে ক্যাম্পিং নিয়ে ঝামেলা নেই।
|
মিরিঞ্জা ভ্যালি: সাজেকের নান্দনিক ছোঁয়া |
এই ছোট বাসস্থানগুলোকে ঘিরে আশপাশে রয়েছে চিকেন ফ্রাই ও বিরিয়ানিসহ নানা পদের খাবারের ব্যবস্থা। তবে কমপ্লেক্স বা রিসোর্টের বাইরে থাকার এবং খাবারের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই।
|
মিরিঞ্জা ভ্যালি: সাজেকের নান্দনিক ছোঁয়া |
সুতরাং, ট্রেকিং বা আশপাশ ঘুরে দেখার সময় শুকনো খাবার বা পানীয় সঙ্গে রাখা উচিত।
|
মিরিঞ্জা ভ্যালি: সাজেকের নান্দনিক ছোঁয়া |
মিরিঞ্জা ভ্যালির জন্য ভ্রমণ খরচ
|
মিরিঞ্জা ভ্যালি: সাজেকের নান্দনিক ছোঁয়া |
- ঢাকা থেকে চকরিয়া: বাস বা ট্রেনের ভাড়া: ১২০০-১৫০০ টাকা।
- চকরিয়া থেকে মিরিঞ্জা ভ্যালি: সিএনজি বা জিপগাড়ির ভাড়া: ২০০-৩০০ টাকা।
- থাকা ও খাবার: রিসোর্ট বা জুমঘরে থাকা-খাওয়ার জন্য ৫০০-১০০০ টাকার মধ্যে খরচ হয়।
|
মিরিঞ্জা ভ্যালি: সাজেকের নান্দনিক ছোঁয়া |
মিরিঞ্জা ভ্যালি ভ্রমণের সেরা সময়
- শীতকাল (নভেম্বর-ফেব্রুয়ারি): পরিষ্কার আকাশ ও মনোরম দৃশ্যের জন্য উপযুক্ত।
- বর্ষাকাল: এই সময় সবুজের সমারোহ এবং মেঘের খেলা বেশি উপভোগ করা যায়। তবে রাস্তা পিচ্ছিল থাকার কারণে সতর্ক থাকতে হয়।
|
মিরিঞ্জা ভ্যালি: সাজেকের নান্দনিক ছোঁয়া |
মিরিঞ্জা ভ্যালি ঘোরার টিপস
- পরিচয়পত্র: সঙ্গে রাখুন।
- নিরাপত্তা: স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর সংগ্রহে রাখুন।
- পানীয় ও শুকনো খাবার: যাত্রাপথে সঙ্গে রাখুন।
- ভালো গ্রিপের জুতা: হাঁটতে সুবিধা হবে।
- পরিবেশ রক্ষা: প্লাস্টিক ও বর্জ্য সঠিক স্থানে ফেলুন।
সূত্র: /সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশ্যে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।