সেবা ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জে মুসল্লি ও ইসলামি সংগঠনের আপত্তিতে বাতিল হলো লালন মেলা। আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কায় প্রশাসন অনুমতি প্রত্যাহার করেছে।
মুসল্লি ও ইসলামি দলের আপত্তিতে বন্ধ হলো লালন মেলা |
নারায়ণগঞ্জে স্থানীয় মুসল্লি ও ইসলামি সংগঠনের তীব্র আপত্তি এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় বাতিল করা হয়েছে দুই দিনব্যাপী ‘মহতী সাধুসঙ্গ ও লালন মেলা’। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার মধ্য নরসিংহপুর এলাকায় মুক্তিধাম আশ্রম ও লালন একাডেমি প্রাঙ্গণে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছিল।
এবারের মেলা শুক্রবার ও শনিবার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লালন সাধু-গুরু ও ভক্তরা আগেই নারায়ণগঞ্জে এসে উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে ইসলামি সংগঠনের পক্ষ থেকে "ইমানবিধ্বংসী কর্মকাণ্ড" আখ্যা দিয়ে মেলার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করা হয়। ফলে প্রশাসন মেলা আয়োজনের অনুমতি প্রত্যাহার করে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, মেলার আয়োজন নিয়ে স্থানীয় মুসল্লি, মসজিদের ইমাম ও হেফাজতে ইসলামের তীব্র আপত্তি ছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে পুলিশ প্রতিবেদন চাওয়া হয়। ওই প্রতিবেদনে মেলার কারণে উত্তেজনার আশঙ্কার কথা উল্লেখ করা হলে প্রশাসন মেলার অনুমতি বাতিল করে।
এদিকে হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দ মেলাকে "ইমানবিধ্বংসী" বলে দাবি করেছেন। ১৫ নভেম্বর থেকে এ মেলা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ, মিছিল ও হুমকি অব্যাহত ছিল। মুক্তিধাম আশ্রম কর্তৃপক্ষ ও নারায়ণগঞ্জের সাংস্কৃতিক কর্মীরা ২০ নভেম্বর মানববন্ধনের মাধ্যমে মেলা চালানোর অনুমতি দেওয়ার দাবি তুললেও কোনো সুরাহা হয়নি।
মুক্তিধাম আশ্রম ও লালন একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ফকির শাহ্ জালাল অভিযোগ করেছেন যে, লালন ভক্তদের প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয়দের বাধার কারণে সাধু-গুরু ও ভক্তদের অনেকেই ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। শাহ্ জালাল বলেন, “আমরা শান্তি চাই, সংঘর্ষ নয়। আমাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতাও থাকা উচিত।”
লালন ভক্তদের একাংশ বলছেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সহনশীলতার জন্য হুমকি। নারায়ণগঞ্জের সাংস্কৃতিক কর্মীরাও এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।