আসমাউল আসিফ, জামালপুর প্রতিনিধি: জামালপুরে ইজ্জাতুন নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ে জানালার গ্রিল কেটে চুরির ঘটনা ঘটেছে।
বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের প্রধান শিক্ষকের কক্ষ ও পাশের একটি কক্ষের সকল আলমারি ও লকার খুলে তছনছ করে সাড়ে তিন লক্ষাধিক টাকা চুরি করে দুর্বৃত্ত্বরা। এই ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জামালপুর পৌর এলাকার রশিদপুর গ্রামে গতকাল বুধবার রাতের কোন এক সময় ইজ্জাতুন নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের প্রধান শিক্ষকের কক্ষের পাশের একটি কক্ষের পেছনের একটি জানালার গ্রিল কেটে ভেতরে প্রবেশ করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় ওই কক্ষের দুইটি আলমারী, একটি লকার ও পাশের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে থাকা একটি আলমারী ও একটি লকারের সবগুলো তালা খুলে তছনছ করা হয়। ঘটনার সংবাদ পেয়ে বিদ্যালয়ে যায় জামালপুর সদর থানা পুলিশ। স্থানীয় কয়েকজন জানান, বিদ্যালয়ের চারপাশেই প্রাচীর ও বেড়া দিয়ে ঘেরা রয়েছে। এছাড়াও রাতে নৈশ্য প্রহরী বিদ্যালয়ে অবস্থান করেন। বিদ্যালয়ে এভাবে কখনও চুরির ঘটনা ঘটেনি, তাছাড়া বিদ্যালয়ে এত টাকা অরক্ষিত অবস্থায় রাখাটাও কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা। তাই স্থানীয়দের কাছে এই ঘটনাটি অনেকটাই রহস্যজনক।
বিদ্যালয়ের নৈশ্য প্রহরী কাবিল উদ্দিন বলেন, গতরাতে প্রধান শিক্ষকের কক্ষের পাশের শিক্ষক মিলনায়তন কক্ষে তিনি অবস্থান করছিলেন, এছাড়াও বাইরে তিনি প্রহরায় ছিলেন। কিন্তু রাতে চুরির ঘটনায় তিনি কোন কিছু আঁচ করতে পারেননি বা কোন সাড়াশব্দ পাননি। প্রধান শিক্ষকের কক্ষে যে এত টাকা রক্ষিত ছিলো সেটাও তার জানা ছিলো না।
প্রধান শিক্ষক মো: আনিছুজ্জামান আনিছ জানান, সকালে স্কুলের দপ্তরি মীর হোসেন কক্ষের তালা খুলে সবকিছু তছনছ অবস্থায় দেখে আমাকে জানালে আমি স্কুলে এসে পুলিশে খবর দেই। লকার থেকে নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের রেজিষ্ট্রেশন ফি, গত চার থেকে পাঁচ দিন ধরে উত্তোলন করা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফি ও সততা স্টোরের জন্য সংরক্ষিত টাকাসহ সাড়ে তিন লক্ষাধিক টাকা চুরি হয়েছে। এভাবে বিদ্যালয়ে এত টাকা অরক্ষিত রাখার ব্যাপারে জানাতে চাওয়া হলে প্রধান শিক্ষক বলেন, প্রতিদিন ব্যাংকে টাকা জমা দেয়া সম্ভব না। আজ আরও টাকা আদায় করা হবে, সব মিলিয়ে আজ বিকালে ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার কথা ছিলো। তবে টাকা ছাড়া আর কোন কিছু খোয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সাল মো: আতিক জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়, আমি নিজেও পরিদর্শন করেছি। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের গ্রেফতার করে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে। আশা করি ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টদের শনাক্ত করতে পারব।
উল্লেখ্য, ইজ্জাতুন নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আনিছুজ্জামান আনিছের বিরুদ্ধে গত ২০২২ সালের ৭ নভেম্বর দিনে-দুপুরে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ চার থেকে পাঁচ মণ নতুন ও পুরাতন বই বিক্রি ছাড়াও সম্প্রতি ইট বিক্রি ও রাতের অন্ধকারে বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে কয়েকটি মেহগনি গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।