সেবা ডেস্ক: সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ ও করহারের প্রভাব পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়েছে। বিনিয়োগকারীদের মাঝে ফিরছে আস্থা।
পুঁজিবাজারে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে একগুচ্ছ উদ্যোগ: বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশার আলো |
বিগত কয়েক বছর ধরে পুঁজিবাজারে চলমান অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মে বিনিয়োগকারীদের হতাশা চরমে পৌঁছেছিল।
বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে পুঁজিবাজার নানা দুর্নীতিতে জর্জরিত ছিল।
তবে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর নানা পদক্ষেপ ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে।
গত ২৮ অক্টোবর ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স নেমে যায় ৫ হাজারের নিচে, যা গত চার বছরে সর্বনিম্ন।
এর ফলে বহু বিনিয়োগকারী বাজারের অবস্থা নিয়ে প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন। এরপর থেকে সরকারের একগুচ্ছ উদ্যোগের মাধ্যমে বাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে।
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা রক্ষায় বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নেয়া হয়।
এর মধ্যে রয়েছে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের প্রণোদনা, ক্যাপিটাল গেইনের ওপর করহার কমানো, ও আইসিবির ফান্ড বৃদ্ধি। এসব উদ্যোগের প্রভাবে বাজারে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে বলে মনে করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা।
ডিএসইর ডিরেক্টর এবং বিএসইসির চেয়ারম্যানরা বলেন, “বাজারের ঊর্ধ্বমুখী ধারা ধরে রাখতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন।
ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত করা এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনাই প্রধান লক্ষ্য।”
ডিবিএ সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, “মূলধনী মুনাফায় কর প্রত্যাহারের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আত্মবিশ্বাস বাড়ছে।
এটি বাজারে সাইকোলজিক্যাল ইমপ্যাক্ট ফেলেছে।” পাশাপাশি বাজারের নিয়মিত ফান্ডের প্রবাহ বজায় রাখতে আইসিবির তহবিল বৃদ্ধি এবং করহার কমানোয় বিনিয়োগকারীরা আশাবাদী হয়ে উঠেছেন।
বাজার বিশেষজ্ঞ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন,
“বাজারের ফ্লোর প্রাইস নীতি পুনর্বিবেচনার পাশাপাশি ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য স্বচ্ছ ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।”
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্প্রতি মূলধনী মুনাফার ওপর করহার কমানোর প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, যা ২০২৫-২৬ করবর্ষে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে সহায়ক হবে।
৪ নভেম্বর এই কর কমানোর ঘোষণার পরই ডিএসইর সূচক ৬১ পয়েন্ট বেড়ে যায় এবং বাজার মূলধন একদিনে প্রায় ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা বৃদ্ধি পায়।
বর্তমানে ডিএসইর প্রধান সূচক ৫ হাজার ২৯৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে, এবং বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ২ কোটি টাকা।
বিনিয়োগকারীদের দাবি অনুযায়ী সরকার ও বিএসইসির এই উদ্যোগগুলো পুঁজিবাজারে নতুন আস্থা ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে বড় ভূমিকা রাখবে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।