সেবা ডেস্ক: বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভবিষ্যৎ নিয়ে টালমাটাল পরিস্থিতিতে একটি নতুন আলোচনার সূচনা করেছে টাইমস ম্যাগাজিন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় শেখ হাসিনার প্রশাসনের কঠিন অবস্থার মধ্যে পারিবারিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় একটি বার্তা পাঠান, যা আজ আলোচনায় উঠে এসেছে।
সজীব ওয়াজেদ জয় টাইমস ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, "আমরা সবাই কোটা আন্দোলন দেখে অবাক হয়েছিলাম। আমি তখন বলেছিলাম, ৩০ শতাংশ কোটা অনেক বেশি, আমাদের এটাকে ৫ শতাংশে কমিয়ে আনা উচিত।"
পরিস্থিতির উত্তাল সময়:
কোটা ইস্যু এবং তার প্রভাব খুব দ্রুত বিস্তৃত হয়। একপর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে সহিংস দমন-পীড়নের মাধ্যমে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। তবে সজীব জয় জানান, তার মা শেখ হাসিনা এই অবস্থা দেখে খুবই হতাশ ছিলেন।
শেখ হাসিনাকে শেষবার দেখা যায় সামরিক হেলিকপ্টারে করে দেশ ত্যাগ করতে। এরপর থেকে তার প্রত্যাবর্তন নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে।
হাসিনার প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা:
মাইকেল কুগেলম্যান, উইলসন সেন্টারের সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বলেন, হাসিনার প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার পারিবারিক রাজনীতির উদাহরণ টেনে বলেন, এমন রাজনীতিতে পরিবারতান্ত্রিক দলগুলোকে বাতিল করা কঠিন। তবে অন্য পর্যবেক্ষকরা এই ব্যাপারে ততটা আশাবাদী নন।
জিল্লুর রহমান, সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক, মনে করেন, "আওয়ামী লীগের আগামী দশকে বড় কোনো ভূমিকা রাখার সুযোগ নেই। তবে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হলে পরিস্থিতি বদলাতে পারে।"
অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা:
বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। শহিদুল হক, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল, মনে করেন, আমলাতন্ত্র সংস্কারের বাধা সৃষ্টি করছে এবং প্রশাসন সরকারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা:
ওয়াশিংটনের সমর্থন অন্তর্বর্তী সরকারের স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখতে মার্কিন সমর্থনের প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট হয়েছে। শহিদুল হক উল্লেখ করেন, "মার্কিন সমর্থন অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর।"
শেখ হাসিনার লিগ্যাসি:
তরুণ প্রজন্মের মধ্যে শেখ হাসিনার লিগ্যাসি বিতর্কিত হয়ে উঠেছে। সারা দেশে হাসিনার পোস্টার ছেঁড়া ও বিকৃত করার ঘটনা প্রমাণ করে যে, তার লিগ্যাসি নিয়ে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে।
চ্যালেঞ্জের মুখে আওয়ামী লীগ:
দলের নিজস্ব সদস্যদের মধ্যেই সমর্থন ধরে রাখা এখন আওয়ামী লীগের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এর মধ্যে নেতাদের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা’ এবং ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’-এর অভিযোগ উঠেছে, যা দলের উপর চাপ বাড়াচ্ছে। তবে সজীব জয় এই অভিযোগগুলো হাস্যকর বলে উল্লেখ করেন।
শেষ পর্যন্ত, শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা এখনো সম্পূর্ণভাবে নাকচ করা যাচ্ছে না।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।