শাহ্ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান: জামালপুরের গভীরে লুকিয়ে থাকা একটি রহস্যময় দিঘি, যেখানে ইতিহাসের ছোঁয়া মিশে আছে প্রকৃতির সৌন্দর্যের সাথে।
জামালপুর সদর উপজেলার চন্দ্রা দেবের পাড়ে অবস্থিত এই দিঘিটি কেবল একটি জলাশয়ই নয়, এটি একটি ইতিহাসের সাক্ষী। বলা হয়, পাল বংশের রাজা হরিশচন্দ্র পাল এই দিঘিটি খনন করেছিলেন। দিঘিটি নিয়ে অনেক কিংবদন্তি প্রচলিত আছে। সবচেয়ে জনপ্রিয় কিংবদন্তিটি হল রাজা হরিশচন্দ্রের স্ত্রী কমলাকে এই দিঘিতে উৎসর্গ করার কাহিনী। বলা হয়, দিঘিতে পানি আনতে না পারায় রাজা স্বপ্নে দেখেছিলেন যে তার স্ত্রীকে দিঘিতে নামালে পানি উঠবে। সেই অনুযায়ী রানী কমলাকে দিঘিতে নামানো হলে দিঘি পানিতে ভরে ওঠে, কিন্তু রানী আর ফিরে আসেননি।
পাল বংশের রাজা হরিশচন্দ্র পাল এই দিঘিটি খনন করেছিলেন |
এক সময়ের সুন্দর পরিবেশ:
এক সময় এই দিঘির চারপাশে ছিল ঘন সবুজ বন। প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে এই দিঘি ছিল এক আকর্ষণের কেন্দ্র। দিঘির স্নিগ্ধ জল, পাখিদের কলকাকলি আর শান্ত পরিবেশ সবার মন মাতিয়ে তুলতো।
ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে:
কিন্তু দুঃখের বিষয়, সময়ের সাথে সাথে এই দিঘির সৌন্দর্য ধ্বংস হতে শুরু করে। উঠতি বয়সের তরুণরা এখানে আসতে শুরু করে এবং নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে। এতে দিঘির পরিবেশ নষ্ট হতে থাকে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে পড়ে যে দিঘির মালিকদের এই সিদ্ধান্ত নিতে হয় যে দিঘির চারপাশের গাছ কেটে ফেলা হবে। ফলে একসময়ের সবুজ বন এখন আর নেই।
আপনি যদি ইতিহাস ও প্রকৃতির প্রতি আগ্রহী হন, তাহলে জামালপুরের এই রহস্যময় দিঘিটি ঘুরে আসতে পারেন। দিঘির পাশে দাঁড়িয়ে আপনি হারিয়ে যাওয়া রানীর কাহিনীতে মগ্ন হয়ে যেতে পারেন।
কিভাবে যাবেন:
জামালপুর রেল স্টেশন থেকে অটো অথবা রিক্সা যোগে এই দিঘিতে আসা যায়। এছাড়া, রাজীব বাসস্ট্যান্ড থেকে অটো অথবা রিক্সা যোগে এখানে যাওয়া যায়।
কী দেখবেন:
- একটি প্রাচীন দিঘি
- দিঘির চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য
- স্থানীয় লোকদের কাছ থেকে দিঘি নিয়ে বিভিন্ন কিংবদন্তি শোনা
কী করবেন:
- দিঘির পাশে বসে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন
- দিঘির জলে পা ভিজিয়ে দেখতে পারেন
- স্থানীয় লোকদের সাথে কথা বলে দিঘি নিয়ে আরো জানতে পারেন
মনে রাখবেন:
- দিঘির পরিবেশ পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করুন
- দিঘির জলে সাঁতার কাটতে নিষেধ
- দিঘির চারপাশে কোনো ধরনের ক্ষতি করবেন না
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।