সেবা ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর ভারতে আসা বাংলাদেশিদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না। আসাম চুক্তির বৈধতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট: "১৯৭১-এর পর আসা বাংলাদেশিদের নাগরিকত্ব নয়" |
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার এক ঐতিহাসিক রায়ে জানিয়েছে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর ভারতে আসা বাংলাদেশিদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এই সিদ্ধান্ত জানায়। তবে বেঞ্চের এক সদস্য, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ৬-এ ধারাকে অসাংবিধানিক বলে মত দেন।
এই রায় আসামে অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে ১৯৮৫ সালে স্বাক্ষরিত ‘আসাম চুক্তি’র ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে। চুক্তি অনুসারে, ১৯৬৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের মধ্যে আসা ব্যক্তিদের নাগরিকত্ব দেওয়া হলেও এর পর আসা ব্যক্তিদের নাগরিকত্বের সুযোগ বন্ধ করা হয়। আদালত বলেছে, এই চুক্তি রাজনৈতিক সমঝোতার অংশ এবং নাগরিকত্ব আইনের ৬-এ ধারা সেই সমঝোতার প্রতিফলন।
শীর্ষ আদালতে এই রায়ের বিরুদ্ধে ১৭টি আবেদন জমা পড়েছিল, যেখানে দাবি করা হয়েছিল যে, নাগরিকত্ব আইন ১৯৫৫-এর ৬-এ ধারা ভারতীয় সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদে বর্ণিত সাম্যের অধিকার লঙ্ঘন করছে। আবেদনকারীরা যুক্তি দেন, নাগরিকত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে বৈষম্য করা হয়েছে এবং এটি সংবিধানের নীতির পরিপন্থী।
কেন্দ্র সরকার আদালতে জানায়, ১৯৭২ সালে শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেছিলেন যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর দেশ ত্যাগ করা সবাইকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। সেই প্রেক্ষাপটে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ-কে নাগরিকত্বের জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়।
চারজন বিচারক এই রায়ের পক্ষে মত দিলেও বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা একমত হননি। তিনি ৬-এ ধারাকে অসাংবিধানিক হিসেবে অভিহিত করেন। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে আদালত আসাম চুক্তি ও ৬-এ ধারার সাংবিধানিক বৈধতা নিশ্চিত করেছে।
আসাম চুক্তি ও এর প্রভাব
আসামের নাগরিকত্ব সমস্যা সমাধানে ১৯৮৫ সালে স্বাক্ষরিত আসাম চুক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক ছিল। তবে এই রায় দুই দেশের সম্পর্ক এবং অভিবাসী পরিস্থিতির ওপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে। আবেদনকারীরা এখনো অসন্তুষ্ট এবং বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও বিতর্ক অব্যাহত থাকতে পারে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।