সেবা ডেস্ক: সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নতুন সুবিধা যুক্ত হচ্ছে, গ্র্যাচুইটি ও স্বাস্থ্য বিমার ব্যবস্থা। স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য বিশেষ ভর্তুকি থাকবে।
সরকার সর্বজনীন পেনশন স্কিমকে কল্যাণমুখী উদ্যোগ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে এই কর্মসূচিকে আরও জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে বিভিন্ন নতুন সুবিধা যুক্ত করছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, গ্রাহকরা ৬০ বছর বয়স থেকে মাসিক পেনশন সুবিধার পাশাপাশি গ্র্যাচুইটি হিসেবে এককালীন অর্থও পাবেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে গ্রাহকদের স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে, যা অসুস্থ গ্রাহকদের চিকিৎসায় আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে।
এছাড়া, ঈদ ও পূজার মতো উৎসবগুলোতে বোনাস এবং পহেলা বৈশাখের মতো বিশেষ অনুষ্ঠানে ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে। অর্থাৎ, সরকারি চাকরিজীবীদের মতো সর্বজনীন পেনশন স্কিমের গ্রাহকদেরও সমান সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। চলতি মাসেই গ্রাহকদের হিসাবে ৮ শতাংশ হারে মুনাফা প্রদান করবে সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষ, যা ইতোমধ্যে হিসাব নিকাশ শুরু করেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, সর্বজনীন পেনশন স্কিমের ভবিষ্যৎ নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে সন্দেহ দেখা দেয়। গত আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নতুন গ্রাহক নিবন্ধন এবং চাঁদা আদায়ের হার প্রায় শূন্যে নেমে আসে। এর ফলে অনেক গ্রাহক অর্থমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে জমাকৃত টাকা ফেরত পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠকের পরও গ্রাহকদের উদ্বেগ কমেনি। পরবর্তীতে, অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষের পরিচালনা পর্ষদের প্রথম সভায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম জনগণের জন্য একটি কল্যাণমুখী উদ্যোগ।
সর্বজনীন পেনশন স্কিমটি চালুর সময় কিছু বিতর্ক সৃষ্টি হয়, কিন্তু সরকার দ্রুতভাবে এটি জনগণের সামনে উপস্থাপন করে। বর্তমানে, ব্যাংকিং ব্যবস্থার তুলনায় সর্বজনীন পেনশন স্কিমের মুনাফা আকর্ষণীয় নয়। উদাহরণস্বরূপ, সরকারি চাকরিজীবীদের জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ডে সুদের হার ১৩ শতাংশ এবং সঞ্চয়পত্রে ১১ শতাংশ হলেও, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় সুদের হার মাত্র ৮ শতাংশ।
সরকারি চাকরিজীবীদের মতো গ্রাহকদেরও গ্র্যাচুইটির সুযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি, তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, স্কিমটি আকর্ষণীয় করতে হলে ব্যাংকিং ব্যবস্থার চেয়ে বেশি মুনাফা দিতে হবে।
জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গ্র্যাচুইটির পরিমাণ এবং মাসিক পেনশনের পরিমাণ বিশ্লেষণের কাজ শুরু হয়েছে। সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার আওতায় স্বাস্থ্য বিমা সুবিধাও অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে, যা নাগরিকদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।
এছাড়া, সর্বজনীন পেনশন স্কিমে গ্রাহকদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ ১৩১ কোটি ১৯ লাখ ৮৪ হাজার টাকা, যার মধ্যে ১২৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে ট্রেজারি বন্ডে।
সরকার জানিয়েছে, সর্বজনীন পেনশন স্কিমের মাধ্যমে যারা মাসিক ৫০০ টাকা জমা দেবেন, তাদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আরও ৫০০ টাকার ভর্তুকি থাকবে। সবমিলিয়ে, এই উদ্যোগে স্বল্প আয়ের মানুষদেরও সুবিধা দেওয়া হবে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।