সেবা ডেস্ক: আজান ও ইক্বামাতের সঠিকভাবে জবাব দেওয়া সুন্নত এবং জান্নাতের ফজিলত লাভের সুযোগ। জানতে পড়ুন, কিভাবে আজান ও ইক্বামাতের সঠিকভাবে জবাব দিতে হবে।
আজান ও ইক্বামাতের গুরুত্ব এবং এর উত্তর দেওয়ার ফজিলত
আজান (আরবি: أَذَان) শব্দের অর্থ হলো ডাকা বা আহ্বান করা। ইসলামের পরিভাষায় আজান বলতে বুঝানো হয় জামাতে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে মুসলিমদের মসজিদে একত্রিত করার জন্য আল্লাহর নির্দিষ্ট শব্দ ও বাক্য দিয়ে উচ্চকণ্ঠে ডাক দেওয়া। মুয়াজ্জিন আজানের মাধ্যমে মুমিনদের নামাজের জন্য আহ্বান জানান।
ইক্বামাতের অর্থ হলো নামাজ দাঁড় করানো বা নামাজ শুরু করার ঘোষণা। ইক্বামাত হলো জামাতের নামাজ শুরু হওয়ার আগে আজানের নির্দিষ্ট বাক্যগুলো পুনরায় বলা, তবে একটি অতিরিক্ত বাক্য রয়েছে—قد قامت الصلاة (ক্বাদ ক্বামাতিস সালাহ), যার অর্থ "নামাজ শুরু হয়েছে।"
আজানের উত্তর দেওয়া সুন্নত:
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আজানের উত্তর অনুরূপভাবে দেবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মুসলিম শরিফ) তাই মুয়াজ্জিনের আজানের সঙ্গে শ্রবণকারীদের জবাব দেওয়া সুন্নত হিসেবে গণ্য।
আজানের উত্তর:
- মুয়াজ্জিন: اَللهُ اَكْبَرْ (আল্লাহু আকবার) ৪ বার
- শ্রবণকারী: اَللهُ اَكْبَرْ (আল্লাহু আকবার) ৪ বার
- মুয়াজ্জিন: اَشْهَدُ اَنْ لَا اِلٰهَ اِلَّا الله (আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) ২ বার
- শ্রবণকারী: اَشْهَدُ اَنْ لَا اِلٰهَ اِلَّا الله (আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) ২ বার
- মুয়াজ্জিন: اَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُوْلُ اللهِ (আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ) ২ বার
- শ্রবণকারী: اَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُوْلُ اللهِ (আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ) ২ বার
- মুয়াজ্জিন: حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ (হাইয়্যা আলাস সালাহ) ২ বার
- শ্রবণকারী: لَا حَوْلَ وَ لَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ (লা হাওলা ওয়া লা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ) ২ বার
- মুয়াজ্জিন: حَيَّ عَلَى الفَلَاحِ (হাইয়্যা আলাল ফালাহ) ২ বার
- শ্রবণকারী: لَا حَوْلَ وَ لَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ (লা হাওলা ওয়া লা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ) ২ বার
- ফজরের আজানের সময়:
- মুয়াজ্জিন: اَلصَّلَاةُ خَيْرٌ مِّنَ النَّوْمِ (আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম) ২ বার
- শ্রবণকারী: صَدَقْتَ وَ بَرَرْتَ (সাদাক্বতা ও বারারতা) ২ বার
ইক্বামাতের উত্তর:
- মুয়াজ্জিন: قَدْ قَامَتِ الصَّلَاةُ (ক্বাদ ক্বামাতিস সালাহ) ২ বার
- শ্রবণকারী: أَقَامَهَا اللّهُ وَأَدَامَهَا مَا دَامَتِ السَّمَوَاتُ وَالْأَرْضُ (আক্বামাহাল্লাহু ওয়া আদ্দামাহা মা দামাতিস সামাওয়াতু ওয়াল আরদু) ২ বার
- মুয়াজ্জিন: اَللهُ اَكْبَرْ (আল্লাহু আকবার) ২ বার
- শ্রবণকারী: اَللهُ اَكْبَرْ (আল্লাহু আকবার) ২ বার
- মুয়াজ্জিন: لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّه (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) ১ বার
- শ্রবণকারী: لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّه (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) ১ বার
আজানের জবাব দেওয়ার মাধ্যমে একজন মুমিন নামাজের জন্য মনোযোগী হয় এবং এর মাধ্যমে জান্নাতের ফজিলত লাভের সুযোগ পায়।
আজান ও ইক্বামাতের গুরুত্ব:
আজান এবং ইক্বামাত হলো নামাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা মুসলিমদের নামাজের আহ্বান জানায় এবং জামাতে নামাজ পড়ার গুরুত্ব তুলে ধরে। তাই প্রতিটি মুসলিমের উচিত আজান এবং ইক্বামাতের জবাব দিয়ে মহান আল্লাহর নির্দেশ পালনের চেষ্টা করা। আজান ও ইক্বামাতের জবাব দেওয়ার মাধ্যমে একজন মুসলিম আত্মিক ও শারীরিকভাবে নামাজের জন্য প্রস্তুতি নেয় এবং এর মাধ্যমে জান্নাত লাভের সুসংবাদ পেতে পারে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।