সেবা ডেস্ক: কিডনিতে পাথর হলে পিঠ ও তলপেটে ব্যথা, প্রস্রাবে জ্বালা এবং বমি বমি ভাবের মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এই লক্ষণগুলো অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
কিডনিতে পাথরের সমস্যা: লক্ষণগুলো জেনে আগাম সতর্ক হোন
পেটের ব্যথা নিয়ে অনেকেই গ্যাস্ট্রিক সমস্যা ভেবে ভুল করেন, কিন্তু জানেন কি এই ব্যথা কিডনির সমস্যারও ইঙ্গিত হতে পারে? বিশেষ করে তলপেটে ব্যথা, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া বা অন্যান্য অসুবিধা থাকলে তা কিডনিতে পাথর জমার লক্ষণ হতে পারে।
কিডনিতে পাথরের আকার ও অবস্থানের ওপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। ছোট আকারের পাথর হলে হয়তো কোনো লক্ষণ টের পাবেন না, কিন্তু কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ রয়েছে, যেগুলো দেখা দিলে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে।
কিডনিতে পাথরের লক্ষণ সম্পর্কে আগাম ধারণা থাকলে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হয়। আসুন জেনে নিই কিডনিতে পাথর হলে কী লক্ষণগুলো দেখা দেয় এবং কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কিডনিতে পাথর জমার লক্ষণসমূহ
১. তলপেটে ব্যথা
তলপেটে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা কিডনিতে পাথর জমার অন্যতম লক্ষণ হতে পারে। যদি কয়েকদিন ধরে তলপেটের ব্যথা থাকে এবং তা কমার কোনো লক্ষণ না দেখা যায়, তাহলে সাধারণ সমস্যার মতো তা এড়িয়ে যাবেন না। কিডনির সমস্যার জন্য তলপেটের ব্যথা হতে পারে, যা অবহেলা করলে জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
২. পিঠ ও পাঁজরে ব্যথা
কিডনিতে পাথর জমলে পিঠ ও পাঁজরের দু'পাশেও তীব্র ব্যথা হতে পারে। ব্যথাটি মাঝেমাঝে তীব্র হতে পারে এবং ধীরে ধীরে তা পুরো পিঠে ছড়িয়ে পড়তে পারে। কোনো কারণ ছাড়াই এমন ব্যথা অনুভূত হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
৩. গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা
কিছু খেলেই যদি বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা, ক্লান্তি অনুভূত হয় এবং ক্ষুধা কমে যায়, তবে তা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা মনে হতে পারে। কিন্তু এটি কিডনিতে পাথর জমারও লক্ষণ হতে পারে। অনেক সময় এই উপসর্গগুলো সাধারণ গ্যাস্ট্রিক সমস্যা ভেবে অবহেলা করা হয়, কিন্তু এর পেছনে কিডনির পাথরও থাকতে পারে। তাই এমন লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন।
৪. প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া ও রক্ত
কিডনিতে পাথর হলে প্রস্রাবের সময় বা পরবর্তী সময়ে জ্বালা বা ব্যথা হতে পারে। প্রস্রাবে দুর্গন্ধ বা রক্ত দেখা দিলে অবশ্যই তা গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা উচিত। এমন লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৫. ঘন ঘন জ্বর হওয়া
কিডনিতে পাথর জমলে অনেক সময় ঘন ঘন জ্বর হতে পারে। ঠান্ডা লাগা ছাড়াও কিডনির সমস্যা থাকলে শরীরে জ্বর দেখা দিতে পারে। এই লক্ষণগুলো সাধারণ জ্বর হিসেবে বিবেচনা না করে, চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কিডনিতে পাথর জমার কারণ এবং প্রতিরোধ
কিডনিতে পাথর জমার প্রধান কারণ হলো শরীরে প্রয়োজনীয় পানির ঘাটতি। পর্যাপ্ত পানি পান না করলে কিডনিতে খনিজ পদার্থ জমতে থাকে, যা পরে পাথরে রূপান্তরিত হতে পারে। এছাড়া অতিরিক্ত প্রোটিন, লবণ বা চিনি জাতীয় খাদ্যগ্রহণ, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস এবং পারিবারিক ইতিহাসও কিডনিতে পাথর হওয়ার কারণ হতে পারে।
প্রতিরোধের উপায়:
- প্রচুর পানি পান করুন
- প্রোটিন, লবণ ও চিনিজাতীয় খাবার নিয়ন্ত্রণে রাখুন
- নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন
- প্রস্রাবে কোনো সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
কিডনিতে পাথরের চিকিৎসা
কিডনিতে পাথর জমার প্রাথমিক লক্ষণগুলো দেখা দিলে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে কিছু ওষুধ এবং খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন করার পরামর্শ দেওয়া হতে পারে। তবে পাথর যদি বড় হয় এবং বেশি কষ্ট দেয়, তাহলে শল্যচিকিৎসা বা লিথোট্রিপসি (Lithotripsy) পদ্ধতিতে পাথর ভেঙে ফেলা হতে পারে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।