সেবা ডেস্ক: হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল দোয়া পড়ার পেছনের ইতিহাস, অর্থ ও ফজিলত। ইব্রাহিম (আ.) ও নবী মুহাম্মদ (সা.) কেন এই দোয়া পড়তেন জানতে পড়ুন বিস্তারিত।
‘হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল’ এই দোয়া যেকোনো সময় জিকির করা যায়। এটি বিশেষভাবে অসুস্থতা, উদ্বেগ, কোনো ক্ষতির আশঙ্কা অথবা শত্রুর হাত থেকে মুক্তির জন্য পড়া হয়। এই দোয়ায় আল্লাহর কাছে সরাসরি কিছু চাওয়া হয় না, বরং আল্লাহই যথেষ্ট এবং উত্তম সাহায্যকারী হিসেবে বিশ্বাস প্রকাশ করা হয়।
হজরত ইব্রাহিম (আ.) এবং মহানবী মুহাম্মদ (সা.) সবচেয়ে কঠিন সময়গুলোতে এই দোয়া পড়তেন। যেমন, হজরত ইব্রাহিম (আ.)–কে অবিশ্বাসী অত্যাচারী শাসক নমরুদ আগুনে নিক্ষেপ করে, তখন তিনি পড়েন ‘হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল’। ফলে আল্লাহ হজরত ইব্রাহিম (আ.)–কে আগুন থেকে রক্ষা করেছিলেন, যা ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, সেই মুহূর্তে আগুন হজরত ইব্রাহিম (আ.)–র জন্য শীতল হয়ে উঠেছিল।
হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল বাংলা অর্থ: এই দোয়াটি পবিত্র কোরআনের সুরা আলে ইমরানের ১৭৩ নম্বর আয়াতের অংশ, যার বাংলা অর্থ হলো: "আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনিই কত ভালো কর্মবিধায়ক।"
আয়াতের প্রেক্ষাপটে মুসলিমরা বদরের যুদ্ধে অংশ নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে মক্কার কুরাইশদের এক হাজার সদস্যের বিশাল বাহিনী মুসলিমদের ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছিল। এই অবস্থায় সাহাবিরা তাদের বিশ্বাসকে আরও দৃঢ় করতে এবং আল্লাহর ওপর নির্ভরশীলতা প্রকাশ করতে এই দোয়াটি পড়তেন।
হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল এর ফজিলত: ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, যখন ইব্রাহিম (আ.)–কে আগুনের কুণ্ডে নিক্ষেপ করা হয়েছিল, তখন তিনি এই দোয়া পড়েন এবং রক্ষা পান। মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, যখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁদের সাহাবিদের দেখলেন আতঙ্কিত হয়ে পড়লেন, তখন তাঁরা বললেন, "হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল।" এর মাধ্যমে তাদের ইমান আরও দৃঢ় হয় এবং তারা বিশ্বাস করে যে আল্লাহই তাদের জন্য যথেষ্ট।
তিরমিজি শরিফের হাদিস অনুযায়ী, বিপদে পড়া বা বিপদের আশঙ্কা থাকলে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "তোমরা বলো, হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল।" অর্থাৎ, আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনিই উত্তম কর্মবিধায়ক।
ডিজিটাল যুগে দোয়াটির গুরুত্ব: আজকের ডিজিটাল যুগে, যেখানে মানুষ নানা রকম চাপ ও উদ্বেগের মুখোমুখি হচ্ছে, এই দোয়া পড়া একটি মানসিক শান্তির উৎস হতে পারে। মোবাইল অ্যাপ, অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এই দোয়াটি সহজেই উপলব্ধ এবং প্রয়োজনীয় সময়ে পড়া যায়। সমাজের নানা স্তরে, বিশেষ করে শিক্ষার্থী, কর্মজীবী, এবং সাধারণ মানুষ এই দোয়াটির মাধ্যমে মানসিক শান্তি এবং আল্লাহর সাহায্যের আশা রাখেন।
হাদিসে দোয়াটির উল্লেখ: সহিহ বুখারী ও মুসলিমের হাদিসে এই দোয়াটির গুরুত্ব বর্ণিত হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, বিপদে পড়া বা সংকটের সময় এই দোয়াটি পড়তে হবে, যা আল্লাহর কাছে আমাদের নির্ভরশীলতা এবং বিশ্বাস প্রকাশ করে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।