সেবা ডেস্ক: জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ২৪ হাজার ৪১২ কোটি টাকার ৪টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে জাপানের অর্থায়ন এবং কর্ণফুলীতে নতুন রেল-কাম-সড়ক সেতু নির্মাণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
কনেক ২৪ হাজার ৪১২ কোটি টাকার ৪টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে জাপানের অর্থায়ন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ২৪ হাজার ৪১২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে ৭ হাজার ৭৪৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন, ১৬ হাজার ১২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বৈদেশিক সহায়তা এবং ৬৫৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা প্রকল্প সংস্থাগুলোর নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে।
এই প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো উন্নয়ন, রেল যোগাযোগ এবং নতুন বন্দর নির্মাণ। প্রধানমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে একনেকের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে। পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
অনুমোদিত প্রকল্পসমূহ
১. সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প-২: এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ (দ্বিতীয় সংশোধিত): এই প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের একটি বড় অংশ চার লেনে উন্নীত হবে। প্রকল্পটি দেশের উত্তরের অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ করবে এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করবে।
২. রিজিলিয়েন্ট আরবান অ্যান্ড টেরিটোরিয়াল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (আরইউটিডিপি): এ প্রকল্পের অধীনে দেশের বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভায় নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি, পার্ক ও লাইব্রেরি নির্মাণ, এবং জলাধার তৈরির কাজ করা হবে।
৩. কালুরঘাট রেল-কাম-সড়ক সেতু নির্মাণ: এই প্রকল্পের অধীনে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য কর্ণফুলী নদীর উপর একটি নতুন রেল-কাম-সড়ক সেতু নির্মিত হবে।
৪. মাতারবাড়ী পোর্ট ডেভেলপমেন্ট (দ্বিতীয় সংশোধিত): জাপানের অর্থায়নে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা হবে, যা দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এ প্রকল্পের অধীনে একটি ৩০০ মিটার দীর্ঘ মাল্টিপারপাস জেটি এবং ৪৬০ মিটার দীর্ঘ কনটেইনার জাহাজ বার্থিং জেটি নির্মিত হবে।
মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর নির্মাণ: জাপানের অর্থায়ন ও কূটনৈতিক বিজয়
মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর নিয়ে চীন ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও, শেষ পর্যন্ত জাপানই এ প্রকল্পে সহজ শর্তে অর্থায়ন করছে। এই বন্দর নির্মাণ বাংলাদেশের জন্য একটি কূটনৈতিক বিজয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বন্দরটি নির্মাণ সম্পন্ন হলে দেশটির বাণিজ্যিক কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটবে এবং আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন ও বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ প্রকল্পের ধীরগতি ও বেসরকারি খাতের বিনিয়োগের অভাবে কিছু প্রকল্পের বাস্তবায়নে সমস্যা হচ্ছে উল্লেখ করেন। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি এবং বলেছেন, চলমান প্রকল্পগুলোর সময়মতো বাস্তবায়নের মাধ্যমে উন্নয়ন কর্মসূচি এগিয়ে নেওয়া হবে।
সরকারি সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও গাড়ি ক্রয়
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, দেশে সরকারি প্রকল্পের আওতায় কতগুলো গাড়ি কেনা হয়েছে এবং কীভাবে তা ব্যবহার হচ্ছে তা যাচাই করা হবে। পাশাপাশি, পুরাতন সরকারি গাড়িগুলোর অব্যবহার ও অপচয় রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।