জামালপুর সংবাদদাতা: জামালপুরের মেলান্দহে ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বার, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানসহ আ’লীগ ও অঙ্গসংগঠনের আড়াই শতাধিক নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের নামে মামলা দায়ের হয়েছে।
মামলায় সুনির্দিষ্ট ১শ’ ১৮ জন ছাড়াও অজ্ঞাত আরো দেড়শ’ জনকে আসামী করা হয়েছে। বজরদ্দিপাড়া গ্রামের মৃত হাতেম আলীর ছেলে আব্দুল মান্নান বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার বাদি মেলান্দহ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মনোয়ার হোসেন মনুর বড় ভাই এবং উপজেলা কৃষক দলের সহসভাপতি বলে জানা গেছে। ২ অক্টোবর ভোর ৫টার দিকে মামলাটি রুজু করা হয়। মেলান্দহ থানার মামলা নং-২।
জেলা-উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, ২টি পৌরসভার আ’লীগ অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী, আওয়ামীপন্থি শিক্ষক-মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, কৃষক-শ্রমিকও মামলার আসামীর অন্তর্র্ভূক্ত হয়েছে। ২ অক্টোবর রাতেই ৭নং চরবানিপাকুরিয়া ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি-চরপলিশা গ্রামের লোকমান আকন্দের ছেলে তারা আকন্দ (৬৪), নয়ানগর ইউনিয়ন আ’লীগের সদস্য-পশ্চিম মালঞ্চ গ্রামের হেলালের ছেলে সরোয়ার জাহান বাবু (৩৬) এবং উপজেলা ছাত্র লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক-বজরদ্দিপাড়ার আব্দুল বারেকের ছেলে ফজলে রাব্বি (২৬)কে গ্রেপ্তার শেষে আদালতে সোপর্দ করার কথা নিশ্চিত করেছেন অফিসার ইনচার্জ মাসুদুজ্জামান।
নবাগত অফিসার ইনচার্জ মাসুদুজ্জামান জানিয়েছেন-মামলায় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ৩ আগস্ট সন্ধ্যায়; মেলান্দহ বাজার রেলস্টেশন রোডস্থ চৌরাস্তায় হট্রগোল চলাকালে থানা গুড়িয়ে দেয়ার হুমকিসহ একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর এবং অর্থ কেড়ে নেয়ার ঘটনা দেখানো হয়েছে। এই হট্রগোলের নেতৃত্বে থাকা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান-যুবলীগের সভাপতি ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ এবং যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন বাঘাকে প্রধান আসামী করা হয়েছে।
অন্যান্য আসামীরা হলেন-উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: জিন্নাহর ছেলে-উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এড. নাজমুল হক খোকন, দুরমুঠ ইউপি চেয়ারম্যান-জেলা আ’লীগের সদস্য সৈয়দ খালেকুজ্জামান জুবেরী, নয়ানগর ইউপি চেয়ারম্যান-উপজেলা আ’লীগের সদস্য সফিউল আলম শাহাবুদ্দিন, ফুলকোচা ইউপি’র বর্তমান চেয়ারম্যান-ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ, সাবেক চেয়ারম্যান-হাজরাবাড়ি পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম বাবু, বিআরডিবির চেয়ারম্যান-উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান জুয়েল, আদ্রা ইউপির সাবেক মেম্বার রকিবুল ইসলাম চাঁন, আদ্রা ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন, তার দুই ছেলে উপজেলা ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি খালেদ আল হোসাইন আরজু, উপজেলা ছাত্র লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খালিদ আল হাসান আপন, বর্তমান উপজেলা ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবু, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মির্জা আব্দুল হালিম, টুপকারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হারুনুর রশিদ হেলমেট, ফুলকোচা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আক্রাম হোসেন, আদ্রা ইউনিয়ন আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুন অর রশিদ, মেলান্দহ পৌর যুবলীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন, ঝাউগড়া ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি খায়রুজ্জামান রুশো, উপজেলা শ্রমিক লীগ সম্পাদক রঞ্জু মোল্লা, শ্যামপুর ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি আব্দুল আজিজ, কুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি সোনাহার, মাহমুদপুর যুবলীগ সভাপতি শাহিন, নয়ানগর আ’লীগ সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম, শ্রমিক লীগ সভাপতি কাঠ মঞ্জু, মেলান্দহ পৌর শ্রমিক লীগ সভাপতি রবিজল, ফুলকোচা ইউনিয়ন আ’লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক-নবনির্বাচিত উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জেরিন তাসনিম জোনাকির বাবা কামাল মেম্বার, হাজরাবাড়ি পৌর আ’রীগের সহসভাপতি হাফিজুর রহমান আনন্দ প্রমুখ। এ ছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, পৌর শাখা আ’লীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও আসামী হয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: জিন্নাহ জানান-এটি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা।
তিনি সাংবাদিকদেরও প্রকৃত ঘটনার তথ্য উদঘাটনের অনুরোধ জানিয়ে আরো বলেন, আমরা ক্ষমতায় থাকাকালে মেলান্দহবাসির সাথে শান্তভাবে চলেছি। এমন নোংরামি করিনি।
উপজেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব আলহাজ নূরুল আলম সিদ্দিকী জানান-এই মামলায় বিএনপি’র সম্পৃক্ততা নেই।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।