সেবা ডেস্ক: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে এবং ১৮ নভেম্বরের মধ্যে দেশে ফিরে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা: ১৮ নভেম্বরের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ |
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, ১৮ নভেম্বরের মধ্যে দেশে ফেরার নির্দেশ
গণ-অভ্যুত্থানের পর প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পর বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়ের হচ্ছে। মানবতাবিরোধী অপরাধসহ তাঁর বিরুদ্ধে ১০০টিরও বেশি মামলা রুজু হয়েছে, যার মধ্যে ৭টি গণহত্যার অভিযোগ অন্তর্ভুক্ত। বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে এবং ১৮ নভেম্বরের মধ্যে দেশে ফিরে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছে।
আদালতের আদেশ এবং মামলার বিবরণ
এই রায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়েছে, সময়মতো হাজির না হলে ইন্টারপোলের সহযোগিতা নিয়ে তাকে ফেরত আনার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
হাসিনার বিরুদ্ধে বিডিআর বিদ্রোহে ৭৪ জন সেনা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে গুলি চালানো, এবং র্যাবের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড-সহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এদিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম এসব অভিযোগ তুলে ধরেন এবং দ্রুত বিচার শুরুর দাবি জানান।
অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা
গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে হাসিনার সরকারের পতনের পর নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরই জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলন ও হত্যাকাণ্ডের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শুরু করে।
ভারতের আশ্রয়ে শেখ হাসিনা
সরকার পতনের পর থেকে শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। বর্তমানে ভারতের বিশেষ ট্রাভেল ডকুমেন্টের অধীনে থাকলেও, বাংলাদেশে ফেরার চাপ বাড়ছে। আদালত তাকে ১৮ নভেম্বরের মধ্যে দেশে ফিরে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের অবস্থান কী হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে জোর আলোচনা চলছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ইতিহাস
২০১০ সালে হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। ওই সময় জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতার বিচার শেষে তাদের সাজা কার্যকর করা হয়। এবার হাসিনার বিরুদ্ধে একই ট্রাইব্যুনাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করায় নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্পর্কেও এর বড় প্রভাব পড়তে পারে, বিশেষ করে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।