সেবা ডেস্ক: চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মধ্যে নির্বিঘ্ন যোগাযোগ নিশ্চিত করতে ১১,৫৬০.৭৭ কোটি টাকার রেল-কাম-সড়ক সেতু প্রকল্প অনুমোদন করেছে একনেক।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার যোগাযোগে নতুন রেল-কাম-সড়ক সেতু প্রকল্পের অনুমোদন: কালুরঘাটে উন্নত সেতু নির্মাণে ১১,৫৬০.৭৭ কোটি টাকা বরাদ্দ
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মধ্যে নির্বিঘ্ন ও নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ নিশ্চিত করতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ১১,৫৬০.৭৭ কোটি টাকার নতুন রেল-কাম-সড়ক সেতু প্রকল্প অনুমোদন করেছে। কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর বিদ্যমান পুরোনো সেতুর পাশে এই নতুন সেতু নির্মাণের প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেকের বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে আরও তিনটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়, যার মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪,৪১২.৯৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭,৭৪৬.৬৬ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার এবং ১৬,০১২.৩৩ কোটি টাকা প্রকল্প সহায়তা থেকে আসবে।
প্রকল্পের প্রেক্ষাপট এবং উদ্দেশ্য
কালুরঘাটের বিদ্যমান সেতুটি বর্তমানে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে, যেখানে ট্রেন চলাচলের গতিসীমা ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার। নতুন সেতুটি নির্মাণের মূল লক্ষ্য হলো চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের মধ্যে উন্নত ও দ্রুতগতির রেল যোগাযোগ স্থাপন করা এবং ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের সাথে সংযোগের সুযোগ তৈরি করা।
রেলপথ মন্ত্রণালয় ২০৩০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। এই প্রকল্পের আওতায় ৭০০ মিটার দীর্ঘ রেল-কাম-সড়ক ব্রিজ, ৬.২০ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট, ২.৪০ কিলোমিটার সড়ক ভায়াডাক্ট, ৪.৫৪ কিলোমিটার বাঁধ এবং ১১.৪৪ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে।
বন্দর উন্নয়ন ও শিল্পখাতের সম্ভাবনা
চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে দেশের ৭০ শতাংশ আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। নতুন সেতুটি নির্মাণ হলে, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে দ্রুত ও নিরাপদে পণ্য পরিবহন করা সম্ভব হবে। এছাড়া, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর চালু হলে বাণিজ্যিক কার্যক্রমে দ্রুতগতির যোগাযোগের প্রয়োজন হবে, যা এই সেতুর মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব হবে।
অন্যান্য অনুমোদিত প্রকল্প
একনেক বৈঠকে আরও তিনটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প। ৬,৫৭৩.৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে দ্বিতীয় সংশোধিত মাতারবাড়ী বন্দর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এটি ভূ-রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্প, যার অর্থায়ন নিয়ে চীন ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ রয়েছে। সভায় সাজেক রোড কানেক্টিভিটি প্রকল্প এবং এলেঙ্গা-হাটিকামরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পও অনুমোদিত হয়।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।