উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: অধ্যক্ষের সিল ও স্বাক্ষর জালিয়াতি করে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার ঘোনা কুচিয়ামারা ডিগ্রি কলেজের কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে।
জৈষ্ঠ্য শিক্ষককে পাশ কাটিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিলেন কনিষ্ঠ শিক্ষক |
এলাকাবাসী সহ কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকেরা অবিলম্বে ওই জালিয়াতির মাধ্যমে গঠিত কমিটির বিলুপ্তির দাবি জানিয়েছেন। এব্যাপারে কলেজের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল খালেক তার পদবির সিল ও স্বাক্ষর জালিয়াতি করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের কাছে ভুয়া আবেদন মাধ্যমে গঠিত কলেজের এডহক কমিটির বিলুপ্ত চেয়ে ২৯ সেপ্টেম্বর আবেদন করেন।
কলেজের সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ অভিযোগ করে বলেন, কলেজের নবগঠিত গভর্ণিং বডিতে শিক্ষক প্রতিনিধি মনোনয়নের বিষয়কে কেন্দ্র করে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ শামীম হাসানের নেতৃত্বে আন্দোলন শুরু করেন কতিপয় শিক্ষক। তাদের ইন্দ্রনে এলাকার মুষ্টিমেয় লোক ষড়যন্ত্র করে গভনিং বডির সাবেক সভাপতি ও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগপত্র দায়ের করেন বিভিন্ন দপ্তরে। এদিকে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর চলমান আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঐ সমস্ত শিক্ষক ও বিশৃঙ্খল ছাত্র-জনতা উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে কলেজের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ করে তালা ঝুলিয়ে দেন প্রতিষ্ঠানে। ২৯ আগষ্ট-২০২৪ তারিখের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিপত্রে আদিষ্ট হয়ে কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানা ঘটনা তদন্তে ১১ সেপ্টেম্বর-২৪ তারিখে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে ১২ সেপ্টেম্বর তারিখে আমাকে (অধ্যক্ষ) সাময়িক বরখাস্ত করেন ইউএনও। কলেজ তদারকির মৌলিক দায়িত্ব পান সিনিয়র শিক্ষক হাসান মুনসুর শাহীন।
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বাক্ষর ও সিল জাল করে ষড়যন্ত্রকারী শিক্ষক মোঃ শামীম হাসান নতুন এডহক কমিটি গঠনের আবেদন করেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ২৬ সেপ্টেম্বর তারিখে কমিটি অনুমোদন দেন। এই কমিটির অনুমোদনে শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অবৈধ কমিটি বাতিল ও জড়িতদের শাস্তি দাবি করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বাতিলের আবেদন করেছেন বলে জানান তিনি।
জৈষ্ঠ্য শিক্ষক হোসেন মুনসুর বলেন, আমার নিকট থেকে ব্যবস্থাপনা বিভাগের কনিষ্ঠ শিক্ষক শামীম হাসান কৌশলে অপারগতার আবেদন নিয়ে নিয়েছেন। বাংলা বিভাগের শিক্ষক মনছুর রহমান জানান, কমিটি সম্পর্কে অবগত নই, তাই একাত্মা প্রকাশ করতে পারছিনা। নবগঠিত কমিটির বিদ্যুৎসাহী সদস্য ফারুক হোসেন জানান, আমাকে এ পদে সংযুক্ত করতে বারবার যোগাযোগ করেছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শামীম হাসান। এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শামীম হাসান কমিটি গঠনের বিষয়ে অস্বীকার করে বলেন, এডহক কমিটি আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়েছে কয়েকদিন আগে তা পালন করছি মাত্র।
এডহক কমিটি সভাপতি মোঃ আরজ আলী জানান, ভাইস চ্যান্সেলরের মনোনীত ব্যক্তি হিসেবে কলেজে সভাপতির দায়িত্ব গ্রহন করেছি। কিন্তু কলেজের আভ্যন্তরিন অবস্থা ভালো নয়।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক মোঃ আব্দুল হাই সিদ্দিক সরকার জানান, কমিটি অনুমোদনে কলেজ কতৃপক্ষের আবেদন করার কথা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে ভাইস চ্যান্সেলর কতৃক মনোনীত ব্যক্তিদেরকে বিভিন্ন কলেজে এডহক কমিটির সভাপতি পদে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।