নতুন বাংলাদেশ গড়তে সচিবদের ২৫টি নির্দেশনা প্রধান উপদেষ্টার

Seba Hot News : সেবা হট নিউজ
0

সেবা ডেস্ক: নতুন বাংলাদেশ গঠনে ড. ইউনূস সরকারি সচিবদের ২৫টি নির্দেশনা দিয়েছেন। এর মধ্যে সুশাসন, দুর্নীতি দমন ও বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

নতুন বাংলাদেশ গড়তে সচিবদের ২৫টি নির্দেশনা প্রধান উপদেষ্টার



নতুন বাংলাদেশ গড়তে সচিবদের ২৫টি নির্দেশনা প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নতুন বাংলাদেশ গড়তে সরকারি সচিবদের জন্য ২৫টি নির্দেশনা দিয়েছেন। সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সচিব ও সিনিয়র সচিবদের কাছে এই নির্দেশনাগুলো প্রেরণ করা হয়, যা ৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সচিব সভায় আলোচনা করা হয়েছিল।

নির্দেশনার মূল উদ্দেশ্য:

প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনাগুলো নতুন বাংলাদেশ গঠনে সুশাসন, সংস্কার, এবং জনগণের সেবা উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার পরিচালনার দিকনির্দেশনা প্রদান করে। এর মাধ্যমে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সৃষ্ট নতুন রাষ্ট্রকে অগ্রসর করার পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে।

উল্লেখযোগ্য নির্দেশনাগুলো:

১. সংস্কার কর্মসূচি: প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে জরুরি ভিত্তিতে সৃজনশীল ও নাগরিকবান্ধব সংস্কার কর্মসূচি প্রণয়ন করতে বলা হয়েছে, যা স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ওপর ভিত্তি করে কার্যকর করতে হবে। ২. সততা ও জবাবদিহিতা: নতুন বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে বিবেক, ন্যায়বোধ, সততা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। ৩. দুর্নীতি দমন: দুর্নীতির মূলোৎপাটন এবং সেবা সহজীকরণের মাধ্যমে জনগণের সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। ৪. বাজেট ও অর্থ ব্যবস্থাপনা: সরকারি অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে বাজেটের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় রাখতে হবে। ৫. বিদ্যুৎ ও গ্যাস: বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ এবং উৎপাদন যাতে ব্যাহত না হয়, তা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ৬. শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখা এবং মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে আরও ফলপ্রসূ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। ৭. বাজার ও শিল্প পর্যবেক্ষণ: ভোগ্যপণ্যের বাজার তদারকি, শিল্প উৎপাদন বজায় রাখা এবং আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে সাশ্রয়ী ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দিয়েছেন। এ ছাড়া, সচিবদের এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়মিতভাবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে জানানোর অনুরোধ করা হয়েছে।


নির্দেশনাগুলো হলো- 

১. ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সৃষ্ট নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সরকারের সব পর্যায়ে সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া ‘মার্চিং অর্ডার’ অনুসরণ করতে হবে; 

২. সৃষ্টিশীল, নাগরিকবান্ধব মানসিকতা নিয়ে প্রতিটি মন্ত্রণালয়/বিভাগকে জরুরি-ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার পরিকল্পনা এবং একই সঙ্গে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে; 

৩. সংস্কার কর্মসূচি প্রণয়নে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা ও তাদের মতামত নিতে হবে; 

৪. বিবেক ও ন্যায়বোধে উজ্জীবিত হয়ে সবাইকে স্ব স্ব ক্ষেত্রে সততা, নিষ্ঠা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে; 

৫. নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য গৎবাঁধা চিন্তা-ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে, চিন্তার সংস্কার করে, সৃজনশীল উপায়ে জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সরকারি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে; 

৬. দুর্নীতির মূলোৎপাটন করে, সেবা সহজীকরণের মাধ্যমে জনগণের সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে; 

৭. বাজেটের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা এবং সরকারি অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে; 

৮. সরকারি ক্রয়ে যথার্থ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে এবং স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিতে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে; 

৯. বর্তমানে বাংলাদেশকে নিয়ে বিশ্বব্যাপী যে আগ্রহ, ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে, দেশের স্বার্থে তা সর্বোত্তম উপায়ে কাজে লাগাতে হবে; 

১০. নিজ কর্তব্যকর্মে দায়িত্ববোধ ও সংবেদনশীলতা বজায় রাখতে হবে; 

১১. সেবা-প্রার্থীদের কেউ যেন কোনোরূপ ভোগান্তি, হয়রানি কিংবা কোনো কারণে দীর্ঘসূত্রতার শিকার না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে; 

১২. আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির ব্যবস্থা করতে হবে; 

১৩. প্রতিটি মন্ত্রণালয়/বিভাগকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কার্যক্রম নিতে হবে; 

১৪. জরুরি সরবরাহ নিশ্চিত করে তা অব্যাহত রাখতে হবে; 

১৫. কৃষি উৎপাদন যাতে ব্যাহত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে; 

১৬. সরকারকে জনবান্ধব সরকারে পরিণত করতে সমবেতভাবে কাজ করতে হবে; 

১৭. মানবসম্পদ উন্নয়নে যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম যাচাই করে প্রয়োজনে সংস্কার করতে হবে; 

১৮. বিদ্যুৎ উৎপাদন, সরবরাহ ও সঞ্চালন যাতে ব্যাহত না হয় সে বিষয়ে তৎপর থাকতে হবে; 

১৯. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখতে হবে; 

২০. গ্যাসের দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে; 

২১. খাদ্য সংগ্রহ, মজুত ও সরবরাহ সন্তোষজনক রাখতে হবে 

২২. আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে হবে। আমদানির বিকল্প উৎস বের করতে হবে; 

২৩. ভোগ্যপণ্যের বাজার নিয়মিত তদারকি করতে হবে; 

২৪ . শিল্প উৎপাদন যাতে ব্যাহত না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে এবং 

২৫. আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top