জামালপুরে ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে গুমের দুটি মামলা

Seba Hot News : সেবা হট নিউজ
0

আসমাউল আসিফ, জামালপুর প্রতিনিধি: সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় জামালপুরে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের (৪৯) বিরুদ্ধে দশ হাজার কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

জামালপুরে ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে গুমের দুটি মামলা



এছাড়াও সরিষাবাড়ী উপজেলায় মাসুদ নামে এক ছাত্রদল নেতাকে খুন ও লাশ গুমের অভিযোগে অপর আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়। মঙ্গলবার বিকেলে জামালপুর অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই মামলা দুটি দায়ের করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে ‘পানসীয়ানা’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে এক স্বাক্ষাৎকারে তৎকালীন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে কুরচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। ওই স্বাক্ষাৎকারে ডা. মুরাদ হাসান বলেন, ‘ঐ জাইমা রহমানের মত একটা লুচ্চা, প্রতিরাতে কৃষ্ণাঙ্গদের সাথে না ঘুমালে যার ঘুম হয় না। এই ধরণের কুলাঙ্গারদের বাংলাদেশে আইনা নেতৃত্ব করাবে বিএনপি, এই স্বপ্ন বাংলার মাটিতে হবে না। তখন উপস্থাপক মহি উদ্দিন হেলাল নাহিদ প্রশ্ন করেন, ‘এখন তারেক জিয়াকে কিছু বলবেন না আপনি? জবাবে ডা. মুরাদ হাসান বলেন, ‘তারেক জিয়া সম্পর্কে এইডা তো মানুষের জাতই না। এই বেজন্মা সম্পর্কে আমার কিছু বলার নাই। ও বেগম জিয়ার পোলা না কার পোলা এইডা আল্লাহই জানে। ওকি জিয়াউর রহমানের পোলা না কার পোলা এইডা আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ছাড়া কেউ বলতে পারবে না। এই ধরণের মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করায় বিশেষ করে তারেক রহমান ও তার মেয়ে জাইম রহমানের দশ হাজার কোটি টাকার অধিক ক্ষতি হয়েছে ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। তাছাড়া এই মামলায় ওই ইউটিউব চ্যানেলের কর্ণধার ও উপস্থাপক চট্টগ্রামের পটিয়া পৌর এলাকার এ.টি.এম আবুল কাশেমের ছেলে মহি উদ্দিন হেলাল নাহিদকেও আসামী করা হয়েছে। সরিষাবাড়ী উপজেলার চেচিয়াবাধা গ্রামের মৃত ইদ্রিস আলীর ছেলে রুমেল সরকার (৪৫) এই মানহানি মামলাটি দায়ের করেন।  
এদিকে, একই আদালতে সরিষাবাড়ী উপজেলার মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে ছাত্রদল নেতা মাসুদকে হত্যা ও লাশগুমের অভিযোগে অপর আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ২০১০ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে ফেরার সময় সরিষাবাড়ী উপজেলার কান্দারপাড়া বাসস্ট্যান্ডে বাস থেকে নামে মাসুদ, আইয়ুব আলী ও শফিকুল ইসলাম। পরে শফিকুল ইসলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে চলে যাওয়ার পর তৎকালীন সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসানের নির্দেশে ও সহায়তায় আগে থেকেই ওৎপেতে থাকা সন্ত্রাসীরা মাসুদ ও তার সাথে থাকা আইয়ুব আলীর চোখ বেধে ফেলে ও ব্যাপক মারধর করে। পরবর্তীতে চেচিয়াবাধা ঘাটপাড় এলাকায় যমুনা নদীর শাখা নদীতে হত্যার উদ্দেশ্যে তাদের দুইজনকে ফেলে দেয় সন্ত্রাসীরা। তাদের ডাক চিৎকারে স্থানীয় এলাকাবাসী ঘটনাস্থলের দিকে এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। জীবন রক্ষার্থে আইয়ুব আলী একটি নৌকার আড়ালে লুকাতে পারলেও মাসুদকে আর খুজে পাওয়া যায়নি। পরে স্থানীয়রা মাসুদকে উদ্ধার করে। নিখোঁজ মাসুদের ভাই সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো: মাজহারুল ইসলাম (৪৫) ওই ঘটনায় ডা. মুরাদ হাসানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা ও লাশগুমের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন। এই মামলার অন্য আসামীরা হলেন, সরিষাবাড়ী উপজেলার কান্দারপাড়া এলাকার মৃত হোসেন আলীর ছেলে নান্নু মিয়া (৪৫), মুসলিম উদ্দিনের ছেলে মো: আলী কাইঞ্চা (৪২), জয়ান মন্ডলের ছেলে লিমন (৩৫), মৃত হবিবর রহমানের ছেলে খোকন (৪০) ও রব্বানী (৩৫), জমির উদ্দিনের ছেলে আবুল হোসেন টুটুল (৩২), মৃত আবুল কাশেমের ছেলে বাজু (৩৫), মৃত আব্দুল মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আলী (৪৫)।
মামলা দুটি আমলে নিয়ে অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা আক্তার সারিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রদানের জন্য আদেশ দেন।
ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top