সেবা ডেস্ক: ময়মনসিংহ নগরে শশীলজের ফোয়ারার মাঝখানে থাকা গ্রিক দেবী ভেনাসের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলা হয়েছে। গত সোমবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে হামলাকারীরা এটি ভেঙে ফেলে।
প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও তাঁর দেশ ছাড়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে হামলাকারীরা শশীলজে যায় তারা ভাস্কর্যটি ভেঙে মুখাবয়ব নিয়ে যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন অংশ ভেঙে টুকরো করে নিয়ে যায়।
শশীলজ জাদুঘরের তত্ত্বাবধায়ক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, শত শত লোক দল বেঁধে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। ভাস্কর্যের মাথার অংশ পাওয়া যায়নি। এটি অমূল্য সম্পদ ছিল। এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সেটি পুনরায় স্থাপন করা যাবে কিনা, সে বিষয় বলা যাচ্ছে না।
ভেনাসের ভাঙা ভাস্কর্যের ছবি শেয়ার করে তারিফুল রুমন নামে একজন লিখেছেন, ‘অ্যান্টিক হিসাবে এই পিসটার দাম সম্ভবত মিলিয়ন ডলার হবে। ভেনিসিয়ান মার্বেলের তৈরি একটা ফাউন্টেনের মাঝখানে ভেনাসের একটা লাইফ সাইজ স্ট্যাচু ছিল।’
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা সেটি পরিদর্শনে যান। তাঁদের একজন রেজাউল করিম আসলাম। তিনি ময়মনসিংহ বাউল সমিতির সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, শশীলজে অবস্থিত ভেনাস ভাস্কর্যটি ভেঙে অবয়ব বা মুখের অংশ নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
সংস্কৃতিকর্মী শামীম আশরাফ বলেন, ‘প্রাচীন নিদর্শন এই ভাস্কর্য ময়মনসিংহের শোভা। এটি ভাঙার জন্য অনেকবার চেষ্টা করা হয়েছে। এরপরও কর্তৃপক্ষ কেন ভালোভাবে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়নি? এমন জঘন্য কাজের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
শশীলজ হলো ময়মনসিংহ শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত মহারাজা শশীকান্ত আচার্যের বাড়ি, যা ময়মনসিংহ রাজবাড়ি নামে পরিচিত। ১৯০৫ সালে শশীলজ নির্মিত হয়। ২০১৫ সালে ৪ এপ্রিল জাদুঘর স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর শশীলজটি অধিগ্রহণ করার পর জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
জানা গেছে, পুরো বাড়িটি ৯ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। মূল বাড়িটি নির্মাণ করেন মুক্তাগাছার মহারাজা সূর্যকান্ত। পরে তাঁর দত্তক ছেলে শশীকান্ত প্রাসাদটি পুনর্নিমাণ করেন। কারণ, সূর্যকান্তের নির্মিত প্রাসাদটি ভূমিকম্পে আংশিক বা পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছিল। শশীলজের মূল ভবনের সামনে আছে বাগান। সেই বাগানে ছিল ভেনাসের ভাস্কর্য।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।