ঢাকায় গুলিবিদ্ধে নিহত দুইজনের বাড়ি মেলান্দহ

Seba Hot News : সেবা হট নিউজ
0

জামালপুর সংবাদদাতা: পাওনা টাকা আনতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান আমজাদ হোসেন (৪৪)। তিনি ঢাকায় বাসা-বাড়িতে মাছ বিক্রি করতেন। থাকতেন নদ্দা বসুন্ধরায়। 

ঢাকায় গুলিবিদ্ধে নিহত দুইজনের বাড়ি মেলান্দহ



নিহতের বাড়ি জামালপুরের মেলান্দহের শ্যামপুর গ্রামে। পিতার নাম মৃত আফি মোল্লাহ ওরফে আহিমুল্লাহ। স্ত্রী কুহুলা বেগম (৪০) জানান-অভাবের তাড়নায় দুই সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় পাড়ি জমাই। 

আমি বাসা-বাড়িতে কাজ করি। দীর্ঘদিন যাবৎ মাছ বিক্রির সুবাদে এলাকায় আমার স্বামীর বেশ পরিচিত ছিলেন। তার কাছ থেকে অনেকেই বাকিতেও মাছ নিতেন। ১৯ জুলাই দুপুরের দিকে স্বামী আমজাদ হোসেন মাছ বিক্রির বকেয়া টাকা আনতে বসুন্ধরা ভাড়াটে বাসা থেকে বের হন। সেদিন ছিল শুক্রবার। ফিরে এসে জুমার নামাজ পড়ার কথা। ওইদিন কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলছিল। পুরো এলাকা ছিল রণক্ষেত্র। সন্ধ্যায় খবর পাই স্বামী আমার গুলিবিদ্ধ হয়ে এপোলো হাসপাতালে আছেন। ছাত্ররা উদ্ধার করে হাসপাতালে এনেছে। গিয়ে দেখি স্বামীর মতো আরো অনেকেই হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। 
আমার স্বামীর চোখে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাথার আরেক পাশ দিয়ে বের হয়েছে। স্বামীকে এপোলো থেকে দ্রæত কুর্মিটোলা হাসপাতালে আনি। কুর্মিটোলা হাসপাতালেও হতাহতদের কোলাহলে বাতাস ভারি হয়ে ওঠেছে। ডাক্তাররা আমার স্বামীকে দেখেই রেফার্ড করে ঢাকা মেডিক্যালে। ওই সময় ঢাকা শহরে কোথাও কোন যানবাহন চলাচল করে না। সিএনজিসহ বহু এম্বুলেন্সের ড্রাইভাররা আমার স্বামীকে ঢাকা মেডিক্যালে নিতে সাহস করল না। অবশেষে রাত ৮/৯টার দিকে স্বামীর দেহের প্রাণ চলে গেল। নিথর দেহ পড়ে রইল সেখানেই। আর ফিরে পামু না। বলেই চোখের জল মুছেন হতভাগা আমজাদের স্ত্রী কহুলা বেগম। দুইদিন পর গ্রামের বাড়িতে আমজাদ হোসেনের লাশ দাফন করা হয়। 
অপরদিকে পাশের গ্রাম পশ্চিম নয়ানগর গ্রামের তারা শেখের ছেলে আবুজর (২৪) ১৯ জুলাই বসুন্ধরা গেটে গুলিবিদ্ধ হন। আবুজরের ভাই শহিদুল ইসলাম (২৬) জানান-আমার ভাই নদ্দার জোয়ার সাহারা এলাকায় থাকতেন। বিয়ের কথা চলছিল। প্রথমে একটি বাসার কেয়ার টেকার হিসেবে ওই এলাকায় থাকতেন। বাসার মালিকের সহায়তায় ড্রাইভিং শিখেছে। আবুজর ওই মালিকের আওতায় প্রাইভেট কার চালাতেন। ঘটনার দিন বসুন্ধরা এলাকায় ভাইয়ের পরিচিত জনের বাসায় খোঁজখবর নিতে যান। গন্ডগোলের সময় উড়োজাহাজ থেকে সাউন্ড গ্রেনেট ছোড়া হয়। একই সময়ে আশপাশে প্রচন্ড গোলাগুলি হচ্ছিল। বাসার ছোট বাচ্চারা গেটে আসলে তারাও গন্ডগোলের মধ্যে পড়ে যায়। আমার ভাই আবুজরসহ বাসার লোকজন বাচ্চাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসেন। ওই সময় আবুজরের ডান পাঁজরে গুলিবিদ্ধ হয়। স্থানীয়রা দ্রæত আবুজরকে এপোলো হাসপাতালে নেন। সেখান থেকে আরেকটি হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়। ২৭ জুলাই আবুজর মারা যায়। পরদিন গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়েছে। ওদিকে ঢাকায় গুলিবিদ্ধ দুইজনের পরিবারের খোঁজখবর নিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন। নিহতদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।#

(ads1)

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top