ডিমের বাজারে অস্থিরতার জন্য কাদের দায়ী করলো বিপিএ

Seba Hot News : সেবা হট নিউজ
0

সেবা ডেস্ক: সারাদেশের ডিমের বাজারে বেশ কয়েকদিন ধরেই অস্থিরতা বিরাজ করছে। খুচরা পর্যায়ে প্রতি পিস ডিমের দাম দাঁড়ায় প্রায় ১৫ টাকা। সাম্প্রতিক এ পরিস্থিতির জন্য তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতিকে দায়ী করেছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)।

ডিমের বাজারে অস্থিরতার জন্য কাদের দায়ী করলো বিপিএ



সংগঠনটির সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ অভিযোগ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ দিয়ে অনেক আগে থেকে বলা হচ্ছে যে প্রান্তিক খামারিরা ডিম উৎপাদন করে, কিন্তু দাম নির্ধারণ করে ডিম ব্যবসায়ী সমিতিগুলো। ক্রয়-বিক্রয় রসিদ ব্যবহার করে না, যার কারণে প্রতিদিন ডিমের দাম ওঠানামা করে।

ডিমের বাজার অস্থির নেপথ্যে তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতি। ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণের আধিপত্য ধরে রাখতে সব ডিম ব্যবসায়ীকে সুবিধা দিতে তেজগাঁও ডিম সমিতি বাজার নির্ধারণ করে বাজার অস্থির করে তোলে। আবার নিজেদের স্বার্থে ডিমের দাম কমিয়ে তলানিতে নিয়ে আসে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ডিমের দাম বাড়ানো বা কমানোর জন্য একটা কমন বক্তব্য দেন তারা। যেমন চাহিদা কমে গেছে বা চাহিদা বেড়ে গেছে। শীত, গরম, রমজান, কোরবানি, হরতাল-অবরোধে ডিমের জোগান কম, জোগান বেশি।

প্রান্তিক একটি ডিমের উৎপাদন খরচ ১০ দশমিক ২৯ টাকা। ১২ থেকে সাড়ে ১২ টাকা যদি ভোক্তা পর্যায়ের দাম থাকে তবে যৌক্তিক দাম। কিন্তু সেই ডিমের দাম যেভাবে নির্ধারণ হয়। প্রথমে খামার থেকে ডিম সংগ্রহ করেন, পরে ঢাকা শহরে বিভিন্ন জায়গায় রাতে ডিম পাঠিয়ে দেন, সকালে ফজরের নামাজের পর তারা মূল্য নির্ধারণ করে সব জায়গায় মোবাইল এসএমএস ও ফেসবুকের মাধ্যমে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিয়ে বাড়তি বা কমতি দামকে বাস্তবায়ন করে। অন্য সবাই সেটা ফলো করে। যেমন তেজগাঁওসহ কাপ্তান বাজার, সাভার, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, পাবনা, টাঙ্গাইল, স্বরূপকাঠি, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, রংপুর।

প্রতিদিন ১০০ ডিমে ১০-২০ টাকা করে কমিয়ে ৭ টাকা প্রতি পিসে দাম নামিয়ে আনে, আবার একই নিয়মে বাড়িয়ে দিয়ে ডিমের দাম প্রতিটি ১৩ টাকায় উঠিয়ে ফেলে। তারা কম দামে ডিম কিনে ৫ থেকে ৭ দিন সংরক্ষণ করতে চাইলে দোকান অথবা গোডাউনে রাখে এবং বেশিদিন রাখতে চাইলে কোল্ড স্টোরেজ করে। এতে দেখা যায় সারাদেশের ডিম ব্যবসায়ীরা লাভবান, আর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উৎপাদক ও ভোক্তা। পরে সেই ডিম সিন্ডিকেট করে বেশি দামে বিক্রি করে অতি মুনাফা করে। অন্যদিকে উৎপাদক ন্যায্য মূল্য না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে উৎপাদন থেকে সরে যাচ্ছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, খামারি থেকে ৪ দিন পর পর ডিম ক্রয় করা হয়। খামারি চাইলে অন্য কারো কাছে ডিম বিক্রি করতে পারেন না। একই পাইকারের কাছে ডিম বিক্রি করতে হয়। ঢাকার সাধারণ ডিম ব্যবসায়ীদের তেজগাঁও ডিমের বাজার থেকে যে মূল্য নির্ধারণ করে ক্যাশ মেমোর মধ্যে লিখে দেবে সেই দামে কিনতে হয় এবং কারওয়ানবাজার, শান্তিনগর, নিউমার্কেটসহ ঢাকার বিভিন্ন বাজারে যারা খুচরা ডিম বিক্রি করে তেজগাঁও ডিমের বাজার থেকে ক্যাশ মেমোতে যে মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয় তার সেই দামের ওপর নির্ভর করে তাদের ডিম বিক্রি করতে হয়।

সারাদেশের খামারি, পাইকারি, খুচরা পর্যায়ে ডিমের দাম ওঠা তেজগাঁও ডিম সমিতির নির্ধারিত দামের ওপর নির্ভর করে। এ বিষয়ে তদন্ত করে শাস্তির আওতায় আনা এবং বাজার অব্যবস্থাপনার সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানায় বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন।

সিন্ডিকেট মুক্ত বাজার ব্যবস্থাপনা করতে অবশ্যই কর্পোরেট কোম্পানিগুলা এবং প্রাণিসম্পদ অধিদফতারকে জবাবদিহিতার আওতায় এনে কর্পোরেট কোম্পানি ও বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে প্রান্তিক খামারিদের সুরক্ষা দিয়ে উৎপাদনে ফিরিয়ে আনতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে জামানতবিহীন ঋণ ব্যবস্থাসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে ডিম ও মুরগির উৎপাদন বাড়াতে হবে, তাহলেই বাজারে স্বস্তি ফিরে আসবে বলে মনে করে প্রান্তিক খামারিদের এ সংগঠন।

(ads1)
ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top