বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক আরেক ধাপ এগিয়ে নিতে চাই: শি জিনপিং

Seba Hot News : সেবা হট নিউজ
0

সেবা ডেস্ক: চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক আরেক ধাপ এগিয়ে নিতে চাই শি জিনপিং



বুধবার (১০ জুলাই) বিকেলে গ্রেট হল অব দ্য পিপলে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় সহযোগিতা অব্যাহত রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্বস্ত করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি। 

শি জিনপিং বলেন, আমরা দুই দেশ আগামী বছর কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন করতে যাচ্ছি। এ উদযাপন উপলক্ষে আমরা বিদ্যমান কৌশলগত সম্পর্ককে দ্বিতীয় ধাপে নিয়ে যেতে চাই।

দুই নেতার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে দুই নেতার মধ্যে অত্যন্ত সফল আলোচনা হয়েছে।

এ সময় শি জিনপিং বলেন, চীন বাংলাদেশকে চারটি উপায়ে অনুদান, সুদমুক্ত ঋণ, রেয়াতি ঋণ এবং বাণিজ্যিক ঋণ দিয়ে অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা করবে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে উভয় দেশের কারিগরি কমিটি একসঙ্গে বসবে। শিগগিরই চীনের একটি টেকনিক্যাল কমিটি বাংলাদেশ সফর করবে বলেও জানানো হয়।

হাছান মাহমুদ জানান, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী উত্থাপন করার আগেই চীনের প্রেসিডেন্ট রোহিঙ্গা ইস্যুটি উত্থাপন করেন। শি বলেন, মিয়ানমার সরকার ও আরাকান আর্মির সঙ্গে আলোচনা করে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আমরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবো। শি কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ায় শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ আশা করলে চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করতে চাই।

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এ অঞ্চলের উন্নয়নে চীনের সমর্থন কামনা করেন। চীনের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

প্রধানমন্ত্রী গত কয়েক দশকে চিনের অভূতপূর্ব উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, উন্নয়নের দিক থেকে চীন আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য অনুপ্রেরণা।

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে পদ্মা সেতু ও বঙ্গবন্ধু টানেলের মতো কিছু আইকনিক স্থাপনা নির্মাণে বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য চীনের প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক গভীর করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতার বিষয়টি উত্থাপন করেন এবং চীনকে ব্যবধান হ্রাস করার আহ্বান জানান।

জবাবে চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা বাংলাদেশ থেকে আরও পণ্য আমদানি করবো। চীন বাংলাদেশ থেকে আম আমদানি করবে।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং আইটি ভিলেজ স্থাপনে আরও বিনিয়োগ কামনা করেন। জবাবে শি বলেন, তারা বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করতে চান।

চীনের প্রেসিডেন্ট আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, চীন ও বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠায় একসঙ্গে কাজ করবে।

বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে চীনের সহযোগিতা কামনা করেন শেখ হাসিনা। চীনের প্রেসিডেন্ট জানান, একটি দেশের কৃষিতে স্বাবলম্বী হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারিগরি সহায়তা ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে এ খাতে বাংলাদেশকে সহায়তা করার আশ্বাস দেন তিনি।

শি জিনপিং আরও বেশি করে সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং মানুষে মানুষে যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন।

উভয় নেতা আওয়ামী লীগ ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে সম্পর্ক গভীর করার আহ্বান জানান।

চীনের প্রেসিডেন্ট 'গুড গভর্নেন্স নিডস গুড পার্টি' বা 'সুশাসনের জন্য ভালো দল' মন্তব্য করে চীনের কম্যুনিস্ট পার্টির সাথে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যোগাযোগ বৃদ্ধি ও বন্ধনের ওপর জোর দেন, উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পাশাপাশি শি জিনপিং বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ, কারিগরী, কৃষি ও উৎপাদন খাতে সহায়তা এবং ছাত্রবৃত্তি বৃদ্ধির আশ্বাস দেন।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প এবং বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এম নাঈমুল ইসলাম খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
(ads1)

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top