সেবা ডেস্ক: বাংলাদেশে সেমিকন্ডাক্টর বা মাইক্রোচিপ ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে বিশ্ববাজারে দেশের অংশগ্রহণ কম হলেও এ খাতে ২০৪১ সালের মধ্যে শতকোটি ডলারের রফতানি অর্জনের সম্ভাবনা দেখছে বাংলাদেশ।
গ্লোবাল সেমিকন্ডাক্টর বাজার ২১ শতকের সবচেয়ে সম্ভাবনাময়ী শিল্প। ধারণা করা হচ্ছে, এটি ২০৩০ সালের মধ্যে ট্রিলিয়ন ডলারের বাজারে পৌঁছাবে।
এরই মধ্যে খাতটি ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হারে ২০২১ সালে ৬০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
বাংলাদেশে সেমিকন্ডাক্টর বা মাইক্রোচিপ ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে বিশ্ববাজারে দেশের অংশগ্রহণ কম হলেও এ খাতে ২০৪১ সালের মধ্যে শতকোটি ডলারের রফতানি অর্জনের সম্ভাবনা দেখছে বাংলাদেশ।
‘বাংলাদেশে সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি’ নামের এই গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে ২০০৭ সালে উলকাসেমি এবং প্রাইম সিলিকন নামে দুটি ফার্ম চিপ ডিজাইনিং পরিষেবা শুরু করেছিল। এখন সেখানে প্রায় ৪০০ জন স্থানীয় চিপ ডিজাইনাররা কাজ করছেন। এ ছাড়া ফার্মটি এ খাত থেকে রফতানি আয় করেছে ছয় মিলিয়ন ডলার।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সেমিকন্ডাক্টরগুলো এখন বিশ্বের চতুর্থ সর্বাধিক-ব্যবসায়ী পণ্য হিসেবে রাজনৈতিক অর্থনৈতিক আলোচনার অংশ হয়ে উঠেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের মতো দেশগুলো সমস্ত ধরণের আধুনিক ডিভাইসে স্বনির্ভরতা বিকাশের জন্য বিশাল প্রণোদনা দিয়ে চলেছে।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ‘ডেভেলপিং দ্য সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি ইন বাংলাদেশ’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানিয়েছেন, সেমিকন্ডাক্টর শিল্পখাতের প্রসারে দেশে ১০ হাজার বিশেষজ্ঞ তৈরি করা হবে। দ্রুত বর্ধনশীল বিশ্ব অর্থনীতিতে এ শিল্পের প্রসারে দেশের হয়ে তারাই সম্পদ হিসেবে কাজ করবে বলেন জানান তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েটসহ দেশের ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের শিক্ষিত তরুণদের মাইক্রোচিপ ডিজাইনিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, মেশিন লার্নিং, ডাটা অ্যানালেটিকস, ক্লাউড কম্পিটিং প্রযুক্তিতে দক্ষ করে তোলার জন্য হায়ার অ্যান্ড ট্রেনিং প্রগ্রামের আওতায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এনহান্সিং ডিজিটাল গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমি প্রকল্পের অধীনে ফ্রন্টিয়ার (অগ্রসর) টেকনোলজিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।’ এ ছাড়া তিনি ১০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে বুয়েটের ক্যাম্পাসে একটি অত্যাধুনিক ন্যানো ল্যাব স্থাপন করা হবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী পলক।
পলক বলেন, আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ১০ বছর আগে মাইক্রোচিপ ডিজাইনিং, ম্যানুফাকচারিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবোটিকস এবং সাইবার সিকিউরিটির মতো চারটি ভবিষ্যৎমুখী প্রযুক্তি সম্পর্কে গুরুত্ব সহকারে মনোনিবেশ করার জন্য বলেছিলেন। ১০ বছর পরে এসে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, কীভাবে এ সেমিকন্ডাক্টর শিল্প বিশ্ব অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে। রোবোটিকস কীভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানুষের প্রতিস্থাপন করছে। এমনকি সাইবার নিরাপত্তাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
এ সময় ইভেন্টে অংশগ্রহণকারী শিল্প ও একাডেমিয়ার বক্তারা বলেন, সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের উন্নয়ন ঘটলে দ্রুত বিকাশমান প্রযুক্তিনির্ভর শিল্প স্থাপনের সুযোগ তৈরি হবে। এতে দক্ষ মানবসম্পদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে। তাই এ শিল্পের বিকাশের পথে যেসব বাধা বা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, সেগুলো দূর করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।