সেবা ডেস্ক: কোটা সংস্কারের দাবি এবং শিক্ষার্থীদের হত্যার প্রতিবাদে গাইবান্ধায় বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রথমে সড়ক অবরোধ করে। পরে আন্দোলনকারী ও বিএনপি-সন্ত্রাসীরা গাইবান্ধায় জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালায়। সেখানে থাকা মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
এ সময় তারা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিকসহ ১০-১১ জন নেতাকর্মীকে মারধর করে আহত করে।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় দলীয় কার্যালয়ে কেউ না থাকায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল থেকে জেলা শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পৌর পার্কে সমবেত হয়। বেলা ১১টায় সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবারও পৌর পার্কে ফিরে আসে।
পরে শহরের ১ নম্বর রেলগেটে অবস্থান নিয়ে সড়ক এবং রেলপথ অবরোধ করে। এতে সব যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় ওই এলাকা থেকে তাদের সড়ানোর চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু আন্দোলনকারীরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।
ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ শেষে আন্দোলনকারীরা রেলগেট সংলগ্ন জেলা আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে হামলা চালায়। তখন দলীয় কার্যালয়ের সামনে রাখা পাঁচ-ছয়টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
পরে তারা অফিসের ভেতরে ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এ সময় অন্তত ১০-১১ জন নেতাকর্মী আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
আহতদের মধ্যে আছেন- জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মতলুবর রহমান, সদর উপজেলার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মৃদুল মোস্তাফিজ ঝন্টু, পৌর ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক কামাল আহম্মেদ বাবু।
সদর উপজেলার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মৃদুল মোস্তাফিজ ঝন্টু বলেন, “আমরা দলীয় কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের নিয়ে মিটিং করছিলাম। এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা হঠাৎ দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে হামলা চালিয়েছে। ভাঙচুর করেছে কয়েকটি মোটরসাইকেল।”
আহত পৌর ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক কামাল আহম্মেদ বাবুর অভিযোগ, “আমরা দলীয় কার্যালয়ে ছিলাম। হঠাৎ করে ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীরা আন্দোলনে যোগ দিয়ে দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করে তাদের ওপর হামলা চালায়।”
গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাসুদ রানা বলেন, “পুলিশ চেষ্টা করেছে যাতে আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়। কিন্তু বিক্ষোভ থেকে তারা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।”
এতে সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন ও তিনিসহ ১৫-২০ পুলিশ সদস্য আহত হয়। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা এবং গুরুতর আহত কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে দাবি করে জেলা পুলিশ সুপার মো. কামাল হোসেন বলেন, “শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ-সমাবেশ থেকে পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার সঙ্গে কারা কিভাবে জড়িত তা তদন্ত করে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।