২০ বছর ধরে ক্লাস না নিয়ে বেতন তুলছেন সিরাজগঞ্জের শিক্ষক

Seba Hot News : সেবা হট নিউজ
0

সেবা ডেস্ক: সিরাজগঞ্জের তাড়াশে গুড়পিপুল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও দেশীগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্ঞানেন্দ্র নাথ বসাকের বিরুদ্ধে ২০০৪ সাল থেকে নিয়মিত ক্লাস না নিয়েও বেতন-ভাতা তোলার অভিযোগ উঠেছে।

২০ বছর ধরে ক্লাস না নিয়ে বেতন তুলছেন সিরাজগঞ্জের শিক্ষক



জানা গেছে, ২০০৪ সাল থেকে শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত জ্ঞানেন্দ্র নাথ বসাক দীর্ঘ সময় ধরে কোনো ক্লাস নেননি। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাকে কখনো শ্রেণিকক্ষে দেখেনি। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তাকে শিক্ষক হিসেবে চেনেও না। নিয়ম অনুযায়ী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হিসেবে তার প্রতিদিন ৬টি করে ক্লাস নেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তিনি তা কখনো পালন করেননি।

প্রধান শিক্ষকের প্রতিক্রিয়া

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি বারবার মৌখিকভাবে জ্ঞানেন্দ্র নাথ বসাককে সতর্ক করেছেন নিয়মিত ক্লাস নেওয়ার জন্য। কিন্তু তিনি তা আমলে নেননি। বরং প্রতিমাসে একদিন বিদ্যালয়ে এসে পুরো মাসের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে যান। প্রধান শিক্ষক বলেন, এটি একটি মহাদুর্নীতি। ক্লাস না করেও নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন তিনি। তার মামা ধিরেন্দ্রনাথ বসাক বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়ায় প্রধান শিক্ষক এই অনিয়মের প্রতিকার পাননি।

শিক্ষার্থীদের অভিমত

বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী রোখসানা খাতুন, সুসমিতা বালা সহ অন্যান্যরা জানান, তারা ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন, কিন্তু একদিনও জ্ঞানেন্দ্র নাথ বসাক তাদের ক্লাস নেননি।

ইউপি চেয়ারম্যান ও শিক্ষকের প্রতিক্রিয়া

অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান ও শিক্ষক জ্ঞানেন্দ্র নাথ বসাক বলেন, তিনি ২০০৪ সাল থেকে শিক্ষকতা পেশায় রয়েছেন। ১০-১২ বছর আগে কিছু পাঠদান করেছিলেন, কিন্তু তার বেতন ২০১৯ সাল থেকে হচ্ছে। তিনি জানান, তার মামাতো বোন গীতা রানীকে বিকল্প শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি বেশিদিন পাঠদান করেননি।

প্রশাসনিক প্রতিক্রিয়া

তাড়াশ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, জ্ঞানেন্দ্র নাথ বসাক আদৌ শিক্ষকতা পেশায় আছেন কি-না তা খতিয়ে দেখতে হবে। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আফছার আলী জানান, বিষয়টি জেলা অফিসে আনুষ্ঠানিকভাবে আসার পরই আলোচনা করা যাবে।

এ ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা শিক্ষার্থীদের জন্য ক্ষতিকর এবং শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি আস্থা নষ্ট করে। বিদ্যালয় ও প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের উচিৎ দ্রুত তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

(ads1)
ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top