শফিকুল ইসলাম: বহুল আলোচিত, বিতর্কিত, ডিজিটাল প্রতারক দলিল লেখক সেই নুর হোসেনকে আবারো বরখাস্তসহ তিনভাইকে আটক করেন রৌমারী সাব-রেজিস্টার মোহাম্মদ শাহিন।
আটকের ৫ ঘন্টা পর তিন ভাইকে রহস্যজনক ভাবে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাব-রেজিস্টারের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার সাব-রেজিস্টার কার্যালয়। এ নজিরবিহীন ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
স্থানীয়, প্রশাসন ও প্রত্যেক্ষদর্শি সূত্রে জানা যায়, প্রতারক নুর হোসেন উপজেলার রৌমারী সদর ইউনিয়নের কোনাচীপাড়া গ্রামের ৯ নং ওয়ার্ডের একজন স্থায়ী বাসিন্দা। কিন্তু তিনি রাজিবপুর উপজেলার রাজিবপুর সদর ইউনিয়নের কাড়িগর পাড়ায় বিবাহ করার সুবাদে সেখানেও বসবাস করেন। তবে প্রশাসনকে ফাকি দিয়ে দুই উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে দলিল লেথক হিসেবে কাজ করে আসছেন। ইতিপূবে রাজিবপুর উপজেলায় প্রকারণা করে ভুয়া দলিল করার কারনে এলাকাবাসিসহ তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও অফিস ঘেরাও করে। পরে স্থানীয় পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে যায় এবং পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে ওই অভিযুক্ত নুর হোসেনকে ৬ মাসের জন্য সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছিল। একইভাবে এবার রৌমারীতে আরো একটি ঘটনা ঘটিয়েছেন তিনি।
গত মঙ্গলবার জমির এক শরীককে বাদ দিয়ে ও নামজারি ছাড়াই ২৬ শতক জায়গা অন্যের নামে জাল দলিল তৈরি করে জমি রেজিস্ট্রি করার চেষ্টার অপরাধে রৌমারী উপজেলায় আলোচিত সেই নুর হোসেন সহ তিনভাইকে আটক করেন সাব-রেজিস্টারা মোহাম্মদ শাািহন। আটককৃত তিনসহোদর হলেন রহিম বাদশা ও সাইদুল রহমান ও অঞ্জাত আরেকজন। তারা উভয়ে উপজেলার রৌমারী সদর ইউনিয়নের কড়াইকান্দি গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে বলে জানা যায়।
এদিকে কড়াইকান্দি গ্রামের বাসিন্দা রহিম বাদশা, সাইদুর রহমানসহ তিন সহোদর তাদের আরেক বোনকে বাদ দিয়ে গোপনে অন্যের কাছে ২৬ শতক জমি বিক্রয় করেন। পরে তাদের বোনকে বাদ দিয়ে ও নামজারি না করে গোপনে প্রতারণা মুলক জাল দলিল লেখা সম্পন্ন করেন। বিকাল ৩ টার দিকে ওই জাল দলিলসহ অন্যান্য কাগজপত্রাদি সাব-রেজিস্টার মোহাম্মদ শাহিন এর কাছে জমা দেন। পরে কাগজপত্রাদি দেখে সাব-রেজিস্টারের সন্দেহ হলে রহিম বাদশাসহ তিনভাইকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায় তাদেরকে আটক করা হয়। পাশাপাশি দলিল লেখক নুর হোসেনকেও জিজ্ঞাবাদ করা হয়।
শুনানিকালে জাল দলিলের বিষয়ে আনিত অভিযোগের সত্যতা পান উপজেলা সাব-রেজিস্টারা মোহাম্মদ শাহিন। পরে জেলা সাব-রেজিস্টারের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে দলিল লেখক নুর হোসেনকে দুই মাসের জন্য বরখাস্ত করা হয়। অপর অভিযুক্ত তিনভাইকে রহস্যজনক কারনে রাতের অন্ধকারে ছেড়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে।
এব্যাপারে উপজেলা সাব-রেজিস্টার মোহাম্দ শাহিন জানান, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে দলিল লেখককে দুই মাসের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে এবং জমির মালিক তিনভাইকে মানবিক চিন্তা করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।