সেবা ডেস্ক: আজ ৪ জিলহজ। এই দিনটি ইসলামের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি সেই দিন যখন মহানবী হজরত মুহম্মদ (স.) বিদায় হজের জন্য মদীনা থেকে মক্কায় এসে পৌঁছান। দশম হিজরির এই ঘটনা মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি স্মরণীয় দিন।
বিদায় হজের প্রস্তুতি
দশম হিজরির জিলক্বদ মাসে নবী মুহম্মদ (স.) হজরত মায়া’য (রা.)-কে ইয়েমেনের গভর্নর নিযুক্ত করে প্রেরণ করেন। এই সময় তিনি মায়া’যকে জানান যে এই বছরের পর হয়তো আর তাঁর সাথে সাক্ষাৎ হবে না। এই কথা শুনে হযরত মায়া’য (রা.) কাঁদতে শুরু করেন, কারণ তিনি বুঝতে পারেন যে নবীজীর চিরবিদায়ের সময় নিকটবর্তী।
হজের জন্য মদীনা থেকে রওয়ানা
নবী মুহম্মদ (স.) জিলক্বদ মাসের শেষের দিকে মক্কার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। তিনি মাথায় তেল দেন, চুল আঁচড়ান, তহবন্দ পরেন, চাদর গায়ে জড়ান এবং কোরবানির পশুকে সজ্জিত করেন। জোহরের নামাজ আদায় করে তিনি যুল হুলাইফায় পৌঁছান এবং সেখানে আছরের নামাজ আদায় করেন। সেখানে রাত কাটিয়ে তিনি যাত্রা অব্যাহত রাখেন।
মক্কায় আগমন
এক সপ্তাহ পরে তিনি মক্কার কাছে যি’তুবায় অবস্থান করেন। ফজরের নামাজ আদায়ের পর গোসল করে তিনি মক্কায় প্রবেশ করেন। সেই দিনটি ছিল দশম হিজরির জিলহজ মাসের চার তারিখ রবিবার। জিলহজ মাসের আট তারিখে নবী মুহম্মদ (স.) মিনায় গমন করেন এবং ৯ জিলহজ পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন।
বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণ
৯ জিলহজে তিনি আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হন এবং সেখানে একটি ঐতিহাসিক ভাষণ দেন যা বিদায় হজের ভাষণ নামে পরিচিত। এই ভাষণে তিনি উল্লেখ করেন:
- "হে জনস্রোত! তোমাদের রক্ত এবং ধন-সম্পদ পরস্পরের জন্যে আজকের দিন, বর্তমান মাস এবং বর্তমান শহরের মতোই নিষিদ্ধ।"
এই ভাষণে নবীজী মানুষের রক্ত, সম্পদ এবং সম্মানের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করেন এবং সেগুলোকে রক্ষা করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।
বিদায় হজের শিক্ষা
আজকের দিনে আমরা বিদায় হজের এই মহান শিক্ষাকে ভুলে গেছি। ইসলামের নামে জিহাদের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে আত্মহত্যা এবং নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। এটি অবশ্যই আমাদের গোমরাহী এবং পদস্খলন। আমাদের উচিত নবীজীর আদর্শ এবং বিদায় হজের ভাষণের মর্মার্থ উপলব্ধি করে তা অনুসরণ করা। এটি আমাদের সমাজে শান্তি, সম্প্রীতি এবং সহনশীলতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে।
বিদায় হজের শিক্ষা হলো পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা এবং সম্মান বজায় রাখা, যা আজকের সমাজে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আমাদের উচিত নবী মুহম্মদ (স.)-এর আদর্শ অনুসরণ করে ইসলামের সঠিক শিক্ষাকে নিজেদের জীবনে প্রতিফলিত করা।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।