সেবা ডেস্ক: মোঃ নেছার উদ্দিন স্যার , এক আদর্শ শিক্ষকের নাম। আমি একজন শিক্ষকের কথা বলছি যিনি আমার দেখা আদর্শ মানুষ গুলোর মধ্যে অন্যতম।
যিনি অনুসরণীয়, অনুকরণীয়। যিনি একজন পরিপাটি ও পরিচ্ছন্ন মনের অধিকারী। তিনি হলেন আমাদের পলাশীকুড়া জনতা উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক,বারমারী,নালিতাবাড়ী,শেরপুর সকলের প্রিয় মুখ, একজন নিবেদিত প্রাণ।
জন্ম
মোঃ নেছার উদ্দিন স্যার ১৯৬৫ সালের ৩১ আগস্ট শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা কাশেম আলী, মাতা জহুরা খাতুন। ৪ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে তিনি ১ম।
শিক্ষাজীবন
মোঃ নেছার উদ্দিন স্যার প্রাথমিক শিক্ষাজীবন শুরু করেছিলেন নন্নী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। তিনি ১৯৮১ সালে নন্নী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ১৯৮৫ সালে শেরপুর সরকারি কলেজ থেকে এইস এস সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এছাড়া ১৯৮৭ সালে শেরপুর সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। এছাড়াও তিনি সরকারি সাদত কলেজ, টাংগাইল থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি ১৯৮৯ সালে ময়মনসিংহ টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বি.এড ডিগ্রী অর্জন করেন।
কেন শ্রদ্ধেয় মোঃ নেছার উদ্দিন স্যারকে আদর্শ শিক্ষক বলছি, তার কিছু কারণ তুলে ধরছিঃ
স্যারের ব্যক্তিত্ব হল অনুসরণীয় এবং তিনি হলেন দায়িত্বশীল। প্রমিত উচ্চারণে আকর্ষণীয় ভাষায় কথা বলে থাকেন,নিজে উন্নত বিদ্যালেয়ের স্বপ্ন দেখে থাকেন ও অপরকে দেখিয়ে থাকেন।
আত্মসচেতন হওয়া, আত্ম বিশ্বাসী হওয়া আদর্শ চরিত্রের অধিকারী হওয়া, সকল কাজে সৎ থাকা, মানবিক থাকা, দায়িত্বশীল হওয়া, নিজ জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবোধ, বিশ্বাস ইত্যাদি গুণে গুণান্বিত তিনি।
তিনি কর্মক্ষেত্র সর্ম্পকে যথেষ্ঠ জ্ঞান রাখেন ,এছাড়া দক্ষ হওয়া, নিয়মানুবর্তিতা চর্চা করা, শিক্ষাক্রম সর্ম্পকে স্পষ্ট ধারণা থাকা, শিক্ষার্থী বান্ধব হওয়া, সহকর্মীদের প্রেষণা তৈরিতে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন।
তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণে অত্যন্ত পারদর্শী ,পেশার প্রতি সন্তুষ্ট ও ভালবাসা রাখা, এবং পরিশ্রমী হওয়ার ব্যাপারে অনেক সচেতন।
বিভিন্ন পরিস্থিতি বিশ্লেষণে পারদর্শী হওয়া, সমালোচনা গ্রহণে নিরপেক্ষ থাকা, অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে বিচক্ষণ হওয়া, সময় সচেতন হওয়া কার্যকর ব্যবস্থাপনায় পারদর্শী একজন প্রধান শিক্ষক।
তিনি নতুন পরিবর্তন গ্রহণে সবসময় ইতিবাচক থাকেন, তিনি নিজ জ্ঞান ও দ্ক্ষতা উন্নয়নে সবসময় তৎপর থাকেন, এবং রাষ্ট্রের প্রতি সদা অনুগত থাকেন।
স্কুলের বাইরেও নেছার স্যার একনামে পরিচিত আছেন। শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী, নন্নী বাজার,বারমারী মিশন,সীমান্তবর্তী এলাকা মধুটিলা ইকোপার্ক,তার নিজ এলাকা নিশ্চিন্তপুর এসব এলাকায় নেছার স্যার একনামে পরিচিত।
এখানেই শেষ নয় ,প্রাতিষ্ঠানিক কর্মের বাইরেও তিনি নিজেকে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে রেখেছেন। তিনি পরপর কয়েকবার নন্নী মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি, নিশ্চিন্তপুর মসজিদের কয়েকবারের সফল সেক্রেটারি। এভাবেই নিজেকে বিভিন্ন গুণের সাথে আটকে রেখেছেন।
স্যারের ব্যক্তিত্ব ও দায়িত্ব যেন এক মিরাক্কেল। আমার চোখে এ দৃশ্য পড়ে নি কখনো যে স্যার তার সহকর্মী বা কর্মচারিদের সাথে কঠোর আচরণ করেছে কিন্তু কর্তব্যের জায়গা থেকে তিনি এত সুন্দরভাবে কমান্ড করে থাকেন যেন তিনি শুধু তার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। সেই সাথে সহকর্মী বা
সহযোদ্ধারা তার সাথে সুর মিলিয়ে কত সুন্দরভাবে তাদের নিজেদের দায়িত্ব পালন করে যায়, আর তখনি মনে পড়ে যায় লিডারশীপ নামে একটি শব্দ আছে আর হয়ত একেই বলে লিডারশীপ ,যেন এক অসম্ভব সুন্দর কৌশল।
স্যারের অনেক গুণাবলীর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কমিউনিকেশন স্কিল এবং ফ্রেন্ডলি। স্যার শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার প্রায় সকল প্রধান শিক্ষকদের সাথে এত সুন্দর সুসম্পর্ক তৈরি হতে দেখেছি যা সত্যিই মনোমুগ্ধকর যেন তার সাথে কোন বিভেদ নেই যেন তিনি একই পরিবারের সদস্য। সেই সাথে সামিজিক বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব যেমনঃ চেয়ারম্যান, মেম্বার,নালিতাবাড়ি উপজেলার ইউওনো মহোদয়, জেলা শিক্ষা অফিসার উপজেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার সকলের সাথে কমিউনিকেশন স্কিল এত ভাল যে সত্যিই প্রশংসনীয়। যারই ফলশ্রুতিতে তিনি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে সেসিপ প্রকল্প ভিত্তিক কারিগরি শিক্ষা বাস্তবায়নে ভোকেশনাল শাখা বাস্তবায়ন তারই আবদান যা নালিতাবাড়ি উপজেলার দুই একটা প্রতিষ্ঠানের ভাগ্যে মিলেছে, তন্মধ্যে তার প্রতিষ্ঠান পলাশীকুড়া জনতা উচ্চ বিদ্যালয়। এছাড়াও ব্র্যাক ব্যাংক প্রকল্পের আওতায় অত্যাধুনিক ওয়াশরুম,টয়লেট ইত্যাদি অবকাঠামো তার অবদান। যা প্রতিষ্ঠান যুগের পর যুগ তাকে মনে রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে আছে। স্যার এভাবেই তার এতসব সুন্দর কর্মকান্ডের ভিতর দিয়ে চিরকাল বেঁচে থাকবে।
আমার দেখা আদর্শ মানুষদের মধ্যে তিনিই আমার কাছে সেরা। জ্বি আমি তাকে আমার আইডল মনে করে থাকি কারণ একজন আদর্শ শিক্ষক হবার জন্য আর কী কোনো গুণের প্রয়োজন আছে? না, নেই। ছাত্ররা তাকে আজও মনে রেখেছে, যোগাযোগ করে খোঁজখবর নিয়ে থাকে, সেটাই কী এক জীবনে স্যারের কম প্রাপ্তি!
মাধ্যমিক শিক্ষার সকল শিক্ষক তাঁরই আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হবেন। আমরা প্রত্যয় গ্রহণ করি তার মত একজন আদর্শ মানুষ হওয়ার। তিনি তাঁর মৃত্যুপরবর্তী সময়েও আমাদের হৃদয়ে আজীবন অমর হয়ে থাকবেন।
লেখক:
রেজাউল করিম,
সংবাদকর্মী,
সাপ্তাহিক মুক্ত বাংলা।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।