কিভাবে মিষ্টিকুমড়ার বীজ থেকে তেল বানাবেন?

Seba Hot News : সেবা হট নিউজ
0

সেবা ডেস্ক: রান্নাঘরে মিষ্টি কুমড়া কাটার সময় আমরা সাধারণত মিষ্টি কুমড়ার বীজ শুকিয়ে খাই বা ফেলে দিই। এই মিষ্টি কুমড়ার বীজ কিন্তু রূপচর্চার দারুণ এক উপকরণ। আপনি চাইলে বাড়িতেই মিষ্টিকুমড়ার বীজ থেকে সহজে বানিয়ে নিতে পারেন এই তেল। চুল পড়া ঠেকাতে এটি বেশ কার্যকর; ত্বকের শুষ্কতা রোধ করতে কিংবা উজ্জ্বলতা বাড়াতেও মিষ্টিকুমড়ার বীজের তেল ব্যবহার করা যায়। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক হার্বস আয়ুর্বেদিক স্কিন কেয়ার ক্লিনিকের রূপবিশেষজ্ঞ আফরিন মৌসুমী’র মিষ্টি কুমড়ার বীজ থেকে তেল বানানোর প্রক্রিয়া।

কিভাবে মিষ্টিকুমড়ার বীজ থেকে তেল বানাবেন?



কীভাবে তৈরি করবেন
  • পাকা মিষ্টিকুমড়া কেটে বীজ বের করে নিতে হবে। 
  • বীজের গায়ে লেগে থাকা কুমড়ার অংশ চেঁছে ফেলে দিতে হবে। এরপর পরিষ্কার, শুকনা একটি পাত্রে রেখে দিলে বাতাসে বীজ শুকিয়ে যাবে। 
  • রোদে রাখবেন না। ঘরে এ সময় শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রও চালাবেন না। 
  • বীজ শুকিয়ে গেলে স্টেইনলেস স্টিলের পাত্রে জলপাই তেল নিন, তাতে বীজগুলো ঢেলে দিন। 
  • বীজের পরিমাণ যদি ২০০ গ্রাম হয়, তাহলে তেলও নিতে হবে ২০০ গ্রাম। 
  • মৃদু আঁচে জ্বাল দিন। স্বচ্ছ ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন। 
  • মাঝেমধ্যে কাঠের চামচ দিয়ে নেড়ে দিন। 
  • তেল ফুটে উঠলেই চুলা থেকে নামিয়ে নিন। 
  • ঠান্ডা হলে ছেঁকে একটি কাচের বোতলে রেখে দিন। 

এভাবে তৈরি করা তেল দুই মাস পর্যন্ত ভালো থাকে।

ত্বকের জন্য মিষ্টিকুমড়ার তেল তো তৈরি হলো। এই তেল কীভাবে ব্যবহার করতে হবে, জেনে নেওয়া যাক।

ত্বকে মিষ্টিকুমড়ার তেল

ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখতে ময়েশ্চারাইজারের বিকল্প হিসেবে এই তেল ব্যবহার করতে পারেন রোজ। গোসলের পর এবং ঘুমানোর আগে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন। যেকোনো ধরনের ত্বকেই এই তেল ব্যবহার করা যায়। বিশেষত যাঁদের ত্বক শুষ্ক, তাঁদের ত্বকে এই তেল চমৎকার কাজ করে।

ত্বকের উজ্জ্বলতা ও তারুণ্য ধরে রাখতেও ব্যবহার করতে পারেন এই তেল। এ ক্ষেত্রে মিষ্টিকুমড়ার তেল নিন আধা কাপ, সঙ্গে নিন এক কাপ গোলাপজল। আরও নিন সিকি কাপ গ্লিসারিন। এমন গ্লিসারিন বেছে নিন, যাতে বাড়তি কিছু মেশানো না থাকে (বিশুদ্ধ বা ‘র’ গ্লিসারিন, এটি ভেজিটেবল গ্লিসারিন নামেও বাজারে পাওয়া যায়)। সব উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে কাচের বোতলে রেখে দিন। রোজ রাতে ত্বকে লাগিয়ে নিন এই মিশ্রণ। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত। ত্বকের স্বাভাবিক টান টান ভাব ধরে রাখতেও সাহায্য করে এই মিশ্রণ।

এই তেল দিয়ে ফেসপ্যাকও বানানো যায়। একটি মাঝারি আকারের পাকা কলার অর্ধেকটা নিন। সঙ্গে নিন এক চা-চামচ মধু, এক চা-চামচ ‘র’ গ্লিসারিন এবং কয়েক ফোঁটা মিষ্টিকুমড়ার তেল। ভালোভাবে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ফেলুন। ২০ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলুন। প্রতি সপ্তাহেই ব্যবহার 

করুন এই ফেসপ্যাক। ত্বক উজ্জ্বল দেখাবে। এই প্যাক যেকোনো ধরনের ত্বকেই প্রয়োগ করা যায়। তবে অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব থাকলে প্যাকে এক চা-চামচ মুলতানি মাটি যোগ করে নিন।

চুলে মিষ্টিকুমড়ার তেল

চুলপড়ার সমস্যায় বেছে নিতে পারেন মিষ্টিকুমড়ার তেল। তবে চুলে এবং মাথার ত্বকে মিষ্টিকুমড়ার তেল ব্যবহার করতে চাইলে আপনাকে একটি ভিন্ন উপকরণের সাহায্য নিতে হবে। পাকা মিষ্টিকুমড়া থেকে বীজ বের করে, তা থেকে তেল তৈরি করার প্রক্রিয়া কিন্তু একই। কেবল তাতে জলপাই তেলের পরিবর্তে নিতে হবে তিলের তেল। তেল তৈরির আর সব নিয়ম একদম এক। কাচের বয়ামে করে এটিও দুই মাস অবধি সংরক্ষণ করা যায়। চুলে ও মাথার ত্বকে আপনি নিয়মিত যে তেল মালিশ করতেন, তার পরিবর্তে এই তেল ব্যবহার করুন। তবে মনে রাখতে হবে, খুশকি থাকলে মিষ্টিকুমড়ার তেল ব্যবহার করা যাবে না।

খেয়াল রাখুন

বাড়িতে মিষ্টিকুমড়ার বীজের তেল তৈরি করার সময় বীজ পানি দিয়ে ধোয়া যাবে না; অন্য কোনোভাবেও বীজে পানি লাগতে দেওয়া যাবে না।

প্রক্রিয়াজাত মিষ্টিকুমড়ার তেল কিনে নেওয়ার সুযোগ থাকলে সেটির ব্যবহারবিধি পড়ে নিন। ঘরে তৈরি তেলের সঙ্গে কেনা তেলের কিন্তু বেশ খানিকটা পার্থক্য থাকে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top