শফিকুল ইসলাম : রৌমারী উপজেলার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সরকারি বিনামূল্যের ৩৬০ কেজি পাঠ্যবই বিক্রির অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের বাইটকামারী উচ্চ বিদ্যালয়ে।
জানা গেছে, বাইটকামারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীর পুরাতন পাঠ্যবইগুলো ফেরত নেন প্রধান শিক্ষক। পরে ২০২৪ সালের নতুন বইসহ শিক্ষার্থীদের ফেরত নেয়া পুরাতন পাঠ্যবইগুলো পাখিউড়া বাজারের এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন প্রধান শিক্ষক। তবে বিনামূল্যের পাঠ্যবইগুলো কত দরে বিক্রি করেছেন তা জানেন না কেউ।
(ads1)
এছাড়াও সরকারি নির্দেশনা তোয়াক্কা না করে প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতির যোগসাজসে ইচ্ছা মতো ফি নির্ধারণ করে ভর্তি ফি, পুন:ভর্তি ফি, পরীক্ষার ফি, রেজিট্রেশন ফি, ফরমপূরণ ফি’র নামে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি ম্যানেজিং কমিটিতে আত্মীয়করণের অর্ন্তভুক্ত করার অভিযোগ উঠেছে। এ জন্য প্রধান শিক্ষক তার নিজ ইচ্ছামতো এসব কর্মকান্ড করে যাচ্ছেন। প্রধান শিক্ষকের ক্ষমতার প্রভাবে বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক বা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকসহ কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়না।
বিদ্যালয়ের বর্তমান অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাসেল ইসলাম, জান্নাতি খাতুন, ফাতেমা আক্তার, কণিকা আক্তার, রাসেদা আক্তার, শেখ ফরিদ, সোমা আক্তারসহ অনেকই বলেন, নতুন বই দেওয়ার সময় পুরাতন বইগুলো ফেরত নিয়েছেন স্যারে’রা। আর সপ্তম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেনিতে উঠতে নতুন করে ভর্তি বাবদ স্যারেরা ৬শ করে টাকা নিয়েছেন।
তারা আরও বলেন, কেউ ৬’শ টাকা দিতে না পারলে ভর্তি খাতায় নাম তুলেননি এবং নতুন বইও দেয়নি স্যারেরা। একই ভাবে বলেন সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরাও।
(ads2)
বিদ্যালয়ের অফিস সহকারি মোছা. হাজরা বেগম বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পুরাতন বইগুলো ফেরত নিয়েছে। তা সত্য। কিন্তু অফিস কক্ষে পুরাতন বইগুলো নেই, কিছু নতুন বই রয়েছে। বইগুলো কি করেছে তা আমার জানার বিষয় নয়।
নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক বিদ্যালয়ের কয়েকজন সহকারি শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পুরাতন বইগুলো নিয়ে ব্যবসায়ীর কাছে কেজি দরে বিক্রি করেছেন। আমরাতো প্রধান শিক্ষককে জবাবদিহি করতে পারিনা।
পাশাপাশি প্রধান শিক্ষক ও তার ভাই সভাপতি হওয়ায় এসব করতে সাহস পান তিনি। বিদ্যালয়ের কোন বিষয় নিয়ে কথা বললে এমপিও বন্ধসহ চাকুরি খাওয়ার হুমকিও দেন প্রধান শিক্ষক। এ জন্য আমরা কারও কাছে বলতে চাই না।
বিনামূল্যের সরকারি পাঠ্যবই বিক্রিরসহ কয়েকটি অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মুঠোফোনে অস্বীকার করে জানান, আমি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলায় আছি বলে ফোন কেটে দেন। পরে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বদরুল হাসান মুঠোফোনে জানান, বিনামূল্যের নতুন কিংবা পুরাতন পাঠ্যবই কোনক্রমই বিক্রি করা যাবে না। তবে কোন প্রতিষ্ঠান প্রধান বিক্রি করেন এবং এ ধরণের বিষয় অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, যেহেতু ইউএনও সভাপতি তাঁর কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ হাসান খান বলেন, এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তাকে বিষয়টি দেখার জন্য বলা হবে। সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।