নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার নন্দীগ্রামে হাটধুমা দাখিল মাদ্রাসায় বিতর্কিত নিয়োগ পরীক্ষা ও গোপনে অনিয়মের মাধ্যমে নিয়োগ সম্পন্ন করার অভিযোগ উঠেছে।
নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালে প্রতিষ্ঠানে সাংবাদিক দেখেই উত্তেজিত হয়ে ওঠেন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও নিরাপত্তাকর্মী প্রার্থীর পক্ষের বহিরাগত কয়েকজন ব্যক্তি। তারা সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। এসময় স্থানীয়দের সঙ্গে মাদ্রাসা সংশ্লিষ্টদের হট্রগোল হয়।
গত শনিবার বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার হাটধুমা মুজাদ্দিদ আলফেসানী দাখিল মাদ্রাসায় এঘটনা ঘটে। নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা না করেই কৌশলে প্রতিষ্ঠান থেকে চলে যান ডিজির প্রতিনিধি, শিক্ষা কর্মকর্তা ও মাদ্রাসা সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, শুকুর আলী নামের ব্যক্তি পরীক্ষা শুরু থেকেই প্রকাশ্যে বলছিলেন তার ছেলে নিরাপত্তাকর্মী পদে চুড়ান্ত হয়ে গেছে। স্থানীয়দের মাধ্যমে এ তথ্য পেয়ে সাংবাদিকরা মাদ্রাসায় গিয়ে সুপারের কক্ষে প্রবেশ করামাত্রই ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শহিদুল হক ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং সাংবাদিকদের মাদ্রাসা থেকে চলে যেতে বলেন। এ অবস্থা দেখে স্থানীয়রা নিয়োগ পরীক্ষার পর প্রকাশ্যে ফলাফল ঘোষণার দাবি নিয়ে মাদ্রাসার প্রধান ফটকের সামনে ভিড় করেন। ফলাফল ঘোষণা না করে চলে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও মাদ্রাসার সুপার বলেন, আয়া এবং নিরাপত্তাকর্মী পদে নিয়োগ পরীক্ষায় ১২জন প্রার্থীর মধ্যে ১০জন অংশগ্রহণ করেছে। ফলাফল প্রকাশ্যে ঘোষণা করার পরিবেশ নেই। রাতে বা সকালে মাদ্রাসার নোটিশ বোর্ডে ফলাফল প্রকাশ করা হবে। এসব কথা বলে প্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়ার সময় স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়েন মাদ্রাসার সুপার মো. নুরুন্নবী। সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের ব্যাপারে মাদ্রাসা সুপারের ভিডিও বক্তব্য নেয়ার সময় সামনে এসে দাঁড়িয়ে নিরাপত্তাকর্মী পদের প্রার্থীর বাবা শুকুর আলী উত্তেজিত হয়ে বলেন, সাংবাদিকরা এখানে কি? তোমরা কেন এসেছো! টাকা লাগলে বলো! ভিডিওতে দেখা যায়, ওই ব্যক্তিকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করছে, কে টাকা চেয়েছে! তার নামটা বলেন! বারবার প্রশ্ন করা হলেও তারা কোনো জবাব না দিয়েই সুপারকে নিয়ে মাদ্রাসা ত্যাগ করে। এ ব্যাপারে মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শহিদুল হকের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় কয়েকজন বলেন, শুকুর আলীর ছেলের নিরাপত্তাকর্মী পদে নিয়োগ আগেই চুড়ান্ত হয়েছে। লোক দেখানো নিয়োগ পরীক্ষা নিয়েছে। এখানে টাকার খেলা হয়েছে বলেই প্রকাশ্যে ফলাফল ঘোষণা না করে সবাই পালিয়ে গেছে। সাংবাদিক দেখে তারা উত্তেজিত হওয়ার কারণও এটাই!
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. শাহাদৎ হোসেন বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু নিয়োগ সম্পন্ন করার কাজে সাংবাদিকরা বরাবরের মতোই আমাদের সহযোগিতা করে আসছে। তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের ঘটনাটি দুঃখজনক। সেই ভিডিওটি দেখেছি, মাদ্রাসা সংশ্লিষ্টরা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।